স্তন্যপান নিয়ে ক্রমশ সরব হচ্ছেন মহিলারা। কিছুদিন আগে শিশুকে স্তন্যপান করানোর ছবিকে অশ্লীল বলায় প্রতিবাদ করেছিলেন টেলিভিশন অভিনেত্রী শিখা সিং (sikha singh)। এবার প্রতিবাদের সুর শোনা গেল সেলিনা জেটলি (celina jaitley)-এর গলাতেও।
29 শে জুলাই রাতে সেলিনা নয় বছর আগের একটি ছবি শেয়ার করেছেন যেখানে তাঁকে সদ্যোজাত যমজ সন্তান ও স্বামীর সঙ্গে পুলের ধারে সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। এই ছবিটি তৎকালীন স্টারডাস্ট ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের কভারে পাবলিশ হওয়ার জন্য অশ্লীল কটুক্তি শুনতে হয়েছিল স্টারডাস্টের এডিটর রামকমল মুখোপাধ্যায় (Ramkamal mukherjee)-কেও। সেলিনা বলেন, সেই সময় তাঁর মনে হয়েছিল, জীবনের একটি সুন্দর মুহূর্তকে তিনি তুলে ধরেছেন। কিন্তু তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি, এই ছবির জন্য তাঁকে ট্রোল হতে হবে।
সেলিনা দুই বার মা হয়েছেন। দুইবারই যমজ সন্তানের মা হয়েছেন সেলিনা। কিন্তু দ্বিতীয়বার তাঁর যমজ সন্তানের মধ্যে একটি সন্তান হার্টের সমস্যার জন্য জন্মের কিছুদিন পরেই মারা যায়। 2012 সালে তিনি যখন প্রথমবার যমজ সন্তান উইনস্টন ও বিরাজের মা হয়েছিলেন, এই ছবিটি সেই সময়কালের। সেই সময় সি-সেকশন সার্জারির পর বিশ্রামে ছিলেন সেলিনা। এই কারণে দুবাইতে পুলের ধারে স্বামী-পুত্রদের নিয়ে কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছিলেন তিনি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন সেলিনা। অপর সন্তানকে তিনি পাশেই শুইয়ে রেখেছেন।
গর্ভাবস্থায় জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের শিকার হওয়া সেলিনাকে নিজের খাওয়াদাওয়ার দিকে কড়া নজর রাখতে হত। তার পাশাপাশি সন্তানদের দিকেও তাঁর নজর ছিল। এক সন্তানকে স্তন্যপান করানো নিয়ে ট্রোল হওয়ার সাথে তাঁকে ট্রোল করা হয় পাশে তাঁর আরেক সন্তানকে শুইয়ে রাখা নিয়েও। অনেকে বলতে থাকেন, ছবি তোলার জন্য সেলিনা সন্তানের প্রতি নজর দিচ্ছেন না। কিন্তু সেলিনা জানিয়েছেন, বাচ্চাটির কোমরে ডিশপ্লেশিয়ার সমস্যা ছিল। এই কারণে ডাক্তার বলেছিলেন, বাচ্চাটি যেন যতটা সম্ভব হাত-পা ছুঁড়ে খেলে। এই কারণেই তাকে তিনি ম্যাটের উপর শুইয়ে রেখেছিলেন। সেলিনা মনে করেন, কোনো ছবি দেখে কাউকে বিচার করা অনুচিত। ছবিকে ঘিরেও থাকে কাহিনী। তাই কিছু না জেনে সমালোচনা না করাই উচিত।
নেটদুনিয়ায় সন্তান সম্পর্কে মায়েদের উপদেশ দেওয়ার লোকজনের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কিন্তু সন্তানের জন্মদানকে বলা হয় মেয়েদের দ্বিতীয় জন্ম। সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রেই মায়ের প্রাণসংশয় হয়। সন্তানের প্রতিটি মুহূর্তের সাক্ষী থাকেন মা। মা-ই হয়ে ওঠেন সন্তানের সবচেয়ে বড় বন্ধু। তাই কোনো মাকে স্তন্যপান করানো অথবা তাঁকে সন্তান সম্পর্কিত ট্রোল করার আগে এটা জেনে রাখা উচিত যিনি ট্রোল করছেন, তিনি তাঁর মায়ের দ্বারাই এই পৃথিবীর আলো দেখেছেন। তাই মাতৃত্বকে অবমাননা করার অধিকার কারও নেই।
View this post on Instagram