Bengali SerialHoop Plus

Ditipriya Roy: সকলকে ভুল প্রমাণ করে সেই ১৫ বছরের মেয়েটাই হয়ে উঠেছিল রানী রাসমণি

সালটা ২০১৭। জি বাংলায় শুরু হবে ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’। কিন্তু রাসমণির চরিত্রে অভিনয়টা করবেন কে? স্টুডিও পাড়া জুড়ে সৃষ্টি হলো আলোড়ন। নিতান্তই ছোট্ট একটা মেয়ে। অভিনয়ের কলাকুশলী সবে মাত্র শিখছে। বেছে নেওয়া হলো তাকেই। নাম দিতিপ্রিয়া রায়। রিসার্চার শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তো মাথায় হাত, “এই রোগা মেয়েটাকে কি রাণীমার চরিত্রে মানাবে? ও কি পারবে!” শেষমেষ কিন্তু ওই ১৫ বছরের ছোট্ট মেয়েটাই অসাধ্যসাধন করে ফেললো। শিবাশিস বাবুর ভাষায়, “আমাকে ভুল প্রমাণিত করলো সেই ছোট্ট মেয়েটা। আমি খুব খুশি।”

২০১৭ থেকে ২০২২ এতগুলো বছর পেরিয়েছে। রাণীমাও ১৫ থেকে ২০ তে পা দেবেন। কৈশর থেকে যৌবন পুরো সময়টাই কাটিয়েছেন রাণী মা সেজেই।রাসমণির হাত টা ধরেই ছোট্ট একরত্তি মেয়েটি এত বড় হয়ে উঠেছে। দিতিপ্রিয়ার ভাষায়, “ওই সময়কাল ধরে রাণীমার চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে নিজেকে ভীষণ ভাগ্যবান বলে মনে হয়। আমি একটা ভালো পরিবেশে রাণীমাকে জেনে ওঁর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছি, অনেক কিছু শিখেছি।” দিতিপ্রিয়া জানালেন, “সেটটা ছিল আমার মন ভালো করার জায়গা। মন কেমনের দিনে ওখানেই গিয়ে বাসা বাঁধতাম। ভালো থাকতাম।”

আজ আর রাণীমার সেই সেটও নেই। কেমন অনুভূতি বাস্তবের রাণীর?

“আমার চরিত্র শেষ হয়ে যাওয়ার পরও শেষবারের মতো যখন রাণী মা সেজেই সেটে হাজির হয়েছিলাম। সবাই খুব খুশি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার মনটা খারাপ ছিল খুব। এখন বুঝি এতদিন ধরে যে রাণী মাকে আদর্শ করে যৌবনে পা দিলাম। সেই আদর্শের ছোঁয়া না থাকলে কেমন অন্যরকম কষ্টটা হয়।” আসলে ইন্দ্রপুরীর বেশ কাছেই দিতিপ্রিয়ার বাড়িখানা। যখন খুশি চলে আসতেন। সবার সাথে দেখা করেও যেতেন। যেদিন দিতিপ্রিয়ার সেটে অফিশিয়ালি শেষ দিন সবে ক্যামেরার সামনে চোখ বুঝতে যাবেন, দেখতে পেয়েছিলেন ক্যামেরার পিছনে থাকা মানুষগুলোর চোখ ভর্তি জল। আবেগে ভাসছিলেন তাঁরা।

আজ নেই মা ভবতারিণী, নেই লাইট ক্যামেরা একশন। দিতিপ্রিয়ার ভাষায়, “শেষদিনে যখন আমার কাছে ফোন এসেছিল, আমায় জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আমি একদিন আসতে পারবো কিনা। খুব খুশি ছিলাম আবার দেখতে পাবো কাছের মানুষগুলোকে। হাতে কাজ ছিল তাই ওঁদের বলে ছিলাম সময়টা আগেভাগে জানাতে। কাজ গুলো ব্যালেন্স করতে হত তাই। আমার কাছে একটা অনেক বড় পাওয়া রয়েছে। আমার ফেয়ার ওয়েলের দিন সবাইকে আমি গ্লিসারিন ছাড়াই অঝোর নয়নে কাঁদতে দেখেছি। আমার কাজ সেটের বড়রা যাঁরা চিন্তায় ছিলেন তাঁদের সবার চোখে মুখে স্বস্তি দেখেছি।” দিতিপ্রিয়ার ইঙ্গিতে বেশ বোঝা গেছে সত্যিই ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’র চরিত্রটা তাঁর কাছে মাইলস্টোনই বটে।

Related Articles