সাল ১৯৯৮। টলিউডে মুক্তি পেল অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ‘পৃথিবী আমারে চায় না’। আত্মপ্রকাশ করলেন এক নতুন নায়ক। নাম ফিরদৌস আহমেদ। দুই বাংলাতেই এক সময়ে রাজ করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সাল। আইনি জটিলতায় জড়ালেন। বেশ কিছু বছরের জন্য ভারত ছাড়তে হলো তাঁকে। ফিরে যেতে হলো জন্মস্থান বাংলাদেশে। যার জেরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছবিও হাত ছাড়া হয়েছে অভিনেতার। প্রায় আড়াই বছর কেটে গেছে। প্রধানত, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু কি এমন ঘটেছিল যে ভারত সরকার তাঁকে থাকতে দিলেন না?
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরদৌস আহমেদ। বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে ভারতের নির্বাচনী অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অভিনেতার ভারতের বাণিজ্যিক ভিসা বাতিলও করে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে ফিরদৌস অবশ্য জানিয়েছিলেন, “আমি জানতাম না এভাবে প্রচার করা যাবে না। আমাকে যাঁরা প্রচারের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরাও জানতেন না আমার সেখানে যাওয়া উচিত নয়। এটা ভীষণ রকম ভুল হয়েছে।”
ফিরদৌস জানিয়েছিলেন, “নিজের জন্মস্থানের সুনাম নষ্ট করতে কোনোদিনও চাইনি আমি। এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটল যে অনেক কিছু সাফার করতে হয়েছে আমায়। বঙ্গবন্ধু (মুজিবর রহমানের বায়োপিক) যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পেয়েছিলাম। আমার ভুলে তাও হাতছাড়া হলো। যেহেতু মুম্বাইতে শ্যুট হয়েছে। এছাড়া দত্তার মতো সিনেমাও ছেড়ে দিতে হলো। এত বড় জিনিসগুলো না পাওয়ার কষ্ট আজীবন রয়ে যাবে।”
ভারতে না ফেরার নিষেধাজ্ঞার সময়কাল শেষ হয়েছে গত নভেম্বরেই। এতদিন পর ভিসা ফিরে পেয়ে ২০২২ সালে ভারতে আসছেন তিনি। শোনা গেছে ২৩ ফেব্রুয়ারি আগরতলার একটি চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই যোগদান করতে ২২ তারিখে তাঁর ভারতের মাটিতে পা দেওয়ার কথা। তবে কলকাতায় আসতে পারবেন বলে জানা যায়নি। ফিরদৌসের ভাষায়, “ভারত আমার কাছে আর একটি বাড়ির মতো। এখানেও আমার জীবনকে আমি বড় হতে দেখেছি। এতদিন পর ফিরতে পেরে অনেকটা খুশি।”