ছাত্রদের থেকে মাইনে হিসেবে বছরে নেন মাত্র দু-টাকা, বর্ধমানের মহান শিক্ষক, গর্বিত গোটা বাংলা
সরকারি স্কুল, কলেজে পড়াশোনা করলে টাকা পয়সা বেশি খরচ হয় না একথা ঠিক তবে টিউশন ফিস এর প্রতি চলে যায় কাড়িকাড়ি টাকা। তবে এই মাস্টার মশাই একটু আলাদা। উনি যেন গোবর গাদায় পদ্ম ফুলের মতন। গোটা বর্ধমানবাসী আজ তার গর্বে গর্বিত। অবসর জীবনটা ভালো কাজে ব্যয় করেছেন তিনি যাদেরকে পড়ান তাদের থেকে বছরে নেন মাত্র দু টাকা। বর্ধমানের বাসিন্দা সুজিত চট্টোপাধ্যায় পদ্মশ্রী প্রাপক হিসেবেও নাম ঘোষিত হয়েছে। ১৫ বছর আগেই তিনি তার শিক্ষকতা জগত থেকে অবসর নিয়েছেন তবে পড়ানো ছাড়তে পারেননি। সকাল থেকে সন্ধ্যা হলেই তার বাড়িতে দুইবেলা পড়তে আসে ছাত্র-ছাত্রীর দল।
তার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কম করে হলেও ৩০০ জন। তারে বিনা পয়সায় বিদ্যাদানের ফলে উপকৃত হচ্ছেন বহু ছাত্র-ছাত্রী। গুরুদক্ষিণা হিসেবে তিনি বছরে মাত্র দু’টি টাকা তার পড়ুয়াদের থেকে নেন। বছরের শেষে পরীক্ষা শুরু হলে দুটি টাকা দিয়ে প্রণাম করে যায় তারা। তার মুখে সদাই একটি বাক্য ‘লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির’। শুধু পড়াশোনা নয়, সামাজিক নানা কর্তব্য সেখানে তিনি তার ছাত্র-ছাত্রীদের।
বোলপুরের বাঁধগড়া হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন সুজিত বাবু। তারপর বর্ধমান রাজ কলেজ এবং অবশেষে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস। তারপরেই রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় এ চাকরি জীবন শুরু করেন। ঘনিষ্ঠতা ছিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গেও। রানীগঞ্জের অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা দুবেলা-দুমুঠো খেতে পায়না। তারা কি করে গুরুদক্ষিণা দেবে? তাই সুজিত বাবুর এমন প্রয়াস। তাই ভালবাসাকে পাথেয় করেই তিনি পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে চান।