Hoop Story

রিয়েলিটি শোয়ে প্রতিযোগীদের প্রশংসা কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য! গোপন তথ্য ফাঁস করলেন বিচারকরাই

রিয়েলিটি শোয়ের জন্মলগ্ন থেকেই তা বিতর্কের মুখে পড়েছে। কিছুদিন আগেই অমিত কুমার (Amit kumar) এই বিতর্ককে উস্কে দিয়ে বলেছেন, টাকা পেয়েছিলেন বলেই সোনি টিভির জনপ্রিয় সিঙ্গিং রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এ প্রতিযোগীদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের গান তাঁর ভালো লাগেনি।

জনপ্রিয় বাংলা সিঙ্গিং রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকের আসন অলঙ্কৃত করেছেন লোপামুদ্রা মিত্র (lopamudra mitra)। লোপামুদ্রা জানালেন, ইচ্ছা না থাকলেও শোয়ের খাতিরে অনেক কিছুই করতে হয়। তিনি মেকআপ করতে পছন্দ না করলেও ক্যামেরায় প্রেজেন্টেবল দেখানোর জন্য তাঁকেও মেকআপ করতেই হয়। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলেন, পজিটিভ এনার্জি ধরে রাখতে। প্রতিযোগীদের গানের সঙ্গে তাঁদের এক্স-ফ‍্যাক্টরকেও গুরুত্ব দিতে হয় বলে জানিয়েছেন লোপামুদ্রা। তিনি মনে করেন, এটাও শোয়ের অংশ।

রাঘব চট্টোপাধ্যায় (Raghav chatterjee) কিন্তু অন্য কথা বললেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিযোগীরা এত খেটে নিজেদের পারফরম্যান্স তৈরী করেন ফলে তাঁদের কড়া কথা বলা উচিত নয়। তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ খারাপ পারফরম্যান্সের প্রশংসা করতে বলেন না। বিপরীত কথা বললেন রূপঙ্কর (Rupankar Bagchi)। তিনি বললেন, কখনও প্রতিযোগীদের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি কড়া কথা বললে চ্যানেলের তরফে এডিট করে তা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।

অনেকে ভাবেন, প্রতিযোগীরা রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চে গান গাওয়ার সময় চার-পাঁচটা টেক দিতে হয়। কিন্তু রাঘব বললেন, এরকম কিছু হয় না। পুরো গানটি ওয়ান শটে গাইতে হয়। তবে মঞ্চে বসে শোনা ও টিভির পর্দায় গান শোনার ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে বলে জানালেন লোপামুদ্রা। তিনি বললেন, সুরের সুক্ষ্ম বিচ‍্যুতি রেকর্ডেড ভার্শনে টিভির পর্দায় ধরা পড়ে না। ফলে দর্শকরা গানের সুরের ছোট ছোট ভুলগুলি ঠিকমত ধরতে পারেন না।

কৌশিকি চক্রবর্তী (kaushiki chakraborty) ছোটদের সিঙ্গিং রিয়েলিটি শোয়ের বিচারক ছিলেন। বড়দের সিঙ্গিং রিয়েলিটি শোয়েও তিনি বিশেষ অতিথি হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিযোগীকে পারফরম্যান্স নিয়ে রূঢ় কথা বলতে তাঁর রুচিতে বাধে। তবে চ্যানেলের তরফ থেকে কোনো নির্দেশ থাকে না বলে জানিয়েছেন কৌশিকি। কিন্তু কৌশিকি মনে করেন রিয়েলিটি শো কখনও কারও ভবিষ্যত গড়ে দেয় না। একসময় একই কথা বলেছিলেন লতা মঙ্গেশকর (lata mangeshkar)।

কিন্তু সুরকার জিৎ গাঙ্গুলী অন্য কথা বললেন। তাঁর মতে রিয়েলিটি শো একটা পরিচিতি দান করে। তার ফলে রিয়েলিটি শোয়ের প্রতিযোগীরা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল খুলে নিজেদের প্রতিভা শোকেস করতে পারেন। জিৎ একাধিক রিয়েলিটি শোয়ের প্রতিযোগীকে নিজের সুরে গান গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মেঘলা (meghla), জীমুত (jeemut), পবনদীপ (pawandeep)-এর মতো শিল্পীরা।

তবে একটি রিয়েলিটি শো সফল করতে মূল অবদান থাকে পরিচালকের। এই ক্ষেত্রে অভিজিৎ সেন (abhijit sen) যথেষ্ট সফল। তিনি বলেন, দর্শককে ফাঁকি দেওয়া যায় না। বিচারকদের মতো তাঁরাও গান শুনছেন। বিচারকদের মধ্যে মতের অমিল হলে তারও টেলিকাস্ট করা হয়। বিচারকরা চুলচেরা বিচার করেন। 2018-2019 সালে একটি রিয়েলিটি শোয়ের ফার্স্ট রানার আপ স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক (snigdhajit bhowmik) বলেছেন, তাঁকেও শুনতে হয়েছে,;তিনি টাকা দিয়ে ফাইনালে উঠেছেন। তবে দিনের শেষে একটাই কথা বলা যায়, কোনো রিয়েলিটি শোয়ের হার-জিত কেরিয়ার গড়তে সাহায্য করে না। স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য আত্মবিশ্বাসী হতে হয়।

Related Articles