একসময় টলিউড তাঁকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল ‘অপয়া’ বলে। তাঁর কেরিয়ার ধ্বংস করে দিতে কম চেষ্টা হয়নি। কিন্তু আজ টলিউডের কাছে তিনি অপরিহার্য। তিনি, যীশু সেনগুপ্ত (Jissu U Sengupta)। সময়ের সাদা ছোপ ধরেছে তাঁর দাড়ি-গোঁফ। তাঁর নতুন সল্ট অ্যান পিপার স্টাইলকে তুলনা করা হচ্ছে জর্জ ক্লুনির সাথে। কয়েকদিনের মধ্যেই মুক্তি পেতে চলেছে ‘বাবা, বেবি ও….’। এই ফিল্মে সিঙ্গল ফাদারের চরিত্রে অভিনয় করছেন যীশু।
View this post on Instagram
যীশু জানেন উইন্ডোজ-এর বক্স অফিসের ইতিহাস। কিন্তু তার থেকেও বেশি তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল চিত্রনাট্য। শিবপ্রসাদ (Shibaprashad Mukherjee)-পত্নী জিনিয়া (Zinia Sen) এই ফিল্মের চিত্রনাট্যকার। চিত্রনাট্য শুনেই জিনিয়া ও অরিত্র (Aritra)-কে যীশু জানিয়েছিলেন, তিনি রাজি। একশোটা ফিল্মে অভিনয়ের পরেও এই ফিল্মটি এখনও যীশুর মনের কোণায় রয়েছে। ফিল্ম শেষ হয়ে গেলে চরিত্র থেকে নিজেকে বার করে নিয়ে আসা শিখে গিয়েছেন। কিন্তু ‘বাবা, বেবি ও….’ এখনও তাঁর মনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে। কারণ তিনিও যে পিতা।
View this post on Instagram
অরিত্র নতুন পরিচালক হলেও ঝুঁকি নিতে জানেন। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তিনি কাজের স্বাধীনতা দেন বলে জানিয়েছেন যীশু। করোনা বিধি মেনে শুটিং হয়েছে। বাচ্চাদের জন্য ছিল আলাদা স্থান। সেখানে যীশু ছাড়া কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। শট না থাকলে যীশু বাচ্চাদের আদর করতেন। এভাবেই হয়তো বাচ্চাদের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। শুট চলার সময় দুই একরত্তিকে দুই হাতে ধরে রাখতেন যীশু। ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। শিশুদের নিয়ে ফিল্ম। ফলে কিছুটা হলেও তাদের মর্জিমত চলতে হত। কখন তারা কি করবে, তখনই সেটা তুলতে হবে। ফলে সবসময়ই রেডি হয়ে থাকতে হত। এবার যীশুর শট চলছিল। তিনি ডায়লগ বলছেন। হঠাৎই দেখেন, একটি বাচ্চা দারুণ এক্সপ্রেশন দিচ্ছে। যীশু ইশারা করে অরিত্রকে ক্যামেরা ঘোরাতে বলেন। যীশুর থেকে ক্যামেরা সরিয়ে তখন বাচ্চাটিকেই ফোকাস করা হয়। বাচ্চারাও যীশুকে চিনে গিয়েছিল।
View this post on Instagram
সহ অভিনেত্রী শোলাঙ্কি (Solanki Roy)-এর এটি প্রথম ফিল্ম হলেও তিনি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। ‘মহাপ্রভু’ খ্যাত যীশুর মতে, যাঁরা সিরিয়ালে অভিনয় করেন, তাঁরা পুরোপুরি তৈরি হয়েই আসেন। সিরিয়ালকে চব্বিশ ঘণ্টার ওয়ার্কশপ মনে করেন যীশু। অপরদিকে শিবপ্রসাদ (Shibaprashad) যীশুর অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। যীশুর অভিনয় দেখে শিখেছেন শোলাঙ্কিও। তবে যীশু জানালেন, ফিল্মে তাঁর ও শোলাঙ্কির প্রেমের বাইরে যে দুই শিশুর আগমন, সেই বিষয়েও রয়েছে চমক। যীশু সমর্থন করেন সারোগেসিকে। সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নিয়ে ট্রোল হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া (Priyanka Chopra Jonas)। যীশুর মতে, কিছু না করলেও নেটদুনিয়া ও সমাজ সমালোচনা করবেই।
চিরঞ্জীবি (Chiranjeevi) ‘বাবা, বেবি ও….’-র ট্রেলার দেখে যীশুর প্রশংসা করেছেন টুইট করে। যীশুও তাঁকে রিটুইট করে সম্মান জানিয়েছেন। কিন্তু এতেও নেটিজেনদের একাংশ খুঁত খুঁজেছেন। যীশু, চিরঞ্জীবিকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন না করায় নীতিবাগীশরা তাঁকে ট্রোল করতে শুরু করেছেন। তবে যীশুর মতে, নীতিবাগীশদের মানসিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। একই ঘটনা ঘটেছিল ‘সড়ক 2’-র সময়েও। নেটিজেনদের একাংশের রাগ ছিল, যীশু কেন মহেশ ভাট (Mahesh Bhatt)-এর সাথে কাজ করেছেন! কিন্তু নেটিজেনরা কি যীশুর সংসার চালাবেন না ইএমআই দেবেন? দাবিটা কি? যীশু এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। তবে দর্শকদের কাছে ফিল্মটি প্রশংসিত হয়েছিল।
View this post on Instagram
যীশুর মতে, ‘বাবা, বেবি ও….’ অসমবয়সী প্রেমের ফিল্ম হলেও মানুষ দেখবেন। কিন্তু এই ফিল্মে নেই জ্ঞানদান। বরং একসময় মনে হয়, এই প্রেম কি পূর্ণতা পাবে? তবে যীশু এখনও তাঁর জীবনসঙ্গিনী নীলাঞ্জনা (Nilanjana Sengupta)-র মধ্যে নিজের মাকে খোঁজেন। তাঁর মতে, দাম্পত্যকলহের একটি মূল কারণ হল মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ না পাওয়া। তবে এই বিষয়ে তাঁর সাথে নীলাঞ্জনার ঝগড়া হয়নি। কারণ যীশুর মা নীলাঞ্জনাকে নিজের হাতের রান্না শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। তবু মাঝে মাঝে রান্না ভালো না হলে যীশু বলেই দেন, মায়ের মতো হয়নি।
View this post on Instagram
‘বাবা, বেবি ও….’-তে রয়েছে নব্বইয়ের দশকের প্রেমের ছোঁয়া। তবে এখন আর নতুন করে প্রেমে পড়েন না যীশু। তিনি শুধু ভালো কাজ করতে চান। প্রেম নিয়ে অবশ্য মজা করে যীশু বলেন, কোনো মেয়ে সামনে আসে না, কিছু বলেও না। ফলে এবার তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে মেয়েদের অনুরোধ করবেন সামনে এসে কথা বলার! তবে অবশ্যই দেখা করে কথা বলার! তাহলে কি এবার কফি ডেটে দেখা যাবে যীশুকে? কি বলেন নীলাঞ্জনা?
View this post on Instagram