Bengali SerialHoop Plus

Juiee Sarkar: কাজ না করিয়ে বসিয়ে রেখেছে, ফেসবুক লাইভে বিস্ফোরক টেলি অভিনেত্রী

টলিউড বর্তমানে সরগরম পরিচালক বাপ্পা (Bappa) ও অভিনেত্রী সুকন্যা দত্ত (Sukanya Dutta)-র অভিযোগের চাপান-উতোরে। দুজনেই আইনের পথে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু থানায় যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই স্পটলাইট কাড়তে চলে এলেন জনৈকা অভিনেত্রী জুঁই সরকার (Juiee Sarkar)। বেশ কয়েকটি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন জুঁই। ইদানিং তাঁকে টেলিভিশনে খুব একটা দেখা যায় না। তবে জুঁই-এর অভিযোগ টলিউডের কোনো ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে নয়, নেহাতই একজন ওঁচাটে ফেসবুক ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে।

রবিবার জুঁই হঠাৎই একটি ফেসবুক লাইভ করে ‘ফ্রড অ্যালার্ট’ দেন। তাঁর অভিযোগ, শ্রীময় প্রধান (Srimoy Pradhan) নামে এক ব্যক্তি বহুদিন ধরেই ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখছিলেন। শ্রীময় নিজেকে ‘কস্তুরী’ ম্যাগাজিনের মালিক হিসাবে পরিচয় দেন। জুঁই এই ধরনের কোনো ম্যাগাজিনের নাম আগে শোনেননি। কিন্তু শ্রীময় তাঁর সাথে শুটিংয়ের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিলেন। কথাবার্তা চলাকালীন জুঁই-এর মনে হয়েছিল, শ্রীময় যথেষ্ট শিক্ষিত নন। পোশাকের শুটিংয়ের জন্য জুঁই-এর সাথে শ্রীময়ের কথা হয়েছিল। শনিবার তাঁকে অ্যাডভান্স টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন শ্রীময়। কিন্তু সেই টাকা পাননি জুঁই। রাতে শ্রীময় তাঁকে জানান, কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে টাকা পাঠাতে পারেননি তিনি। জুঁই-এর কোনো সন্দেহ হয়নি।

রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটার সময় জুঁইকে দমদমে আসতে বলা হয় শুটিংয়ের জন্য। কিন্তু তখনও তিনি প্রাপ্য টাকা না পাওয়ার ফলে শুটিংয়ের জন্য বাড়ি থেকে বেরোননি। জুঁই প্রায় দশ-বারো বার শ্রীময়কে ফোন করার পর তিনি ফোন ধরে বলেন ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন টাকা জমা করতে। জুঁই ফোন রেখে দেওয়ার পর তাঁর মনে পড়ে , সেদিন রবিবার ও ব্যাঙ্ক খোলা নেই। এরপর জুঁই ওই ব্যক্তিকে বারবার কল করতে থাকেন। অনেকবার কল করার পর শ্রীময় কল রিসিভ না করলেও মেসেজে লেখেন, তিনি কিছুক্ষণ পর কল করছেন। জুঁই তাকে হুমকি দিয়ে মেসেজ করে বলেন, তাঁর কল রিসিভ না করলে তিনি আইনত স্টেপ নিতে বাধ্য হবেন। কারণ এটা ফ্রড। কারণ শুটিংয়ের কথা বলার পরেও একজন শিল্পীকে বসিয়ে রেখেছেন শ্রীময়। এরপর জুঁই, শ্রীময়কে একটি অদ্ভুত অপশন দিয়েছেন, যদি তিনি ফ্রড করে থাকেন, তাহলে তা বলে দিতে। কিন্তু জুঁই-এর মেসেজের রিপ্লাই আসেনি। পরে জুঁই দেখেন, তাঁকে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ব্লক করেছেন শ্রীময়।

এবার আসা যাক জুঁই-এর কথায়। জুঁই-এর সাথে শ্রীময় কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন কিনা তা জানাননি জুঁই। ফলে মৌখিক চুক্তির কারণে তিনি সারাদিন বাড়িতে বসে আছেন, এই অভিযোগ আইনের চোখে গ্রাহ্য নয়। কয়েক বছর আগে অভিনয়ের পাশাপাশি জুঁই একটি ব্যবসা চালাতেন। তা কিসের ব্যবসা, তিনি তাঁর পরিচিতদের স্পষ্ট করে বলেননি। এমনকি এই ব্যবসায় ইনভেস্ট করার জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তি মর্টগেজ রেখে ব্যাঙ্ক থেকে আড়াই-তিন লক্ষ টাকা লোন নেওয়ার সাজেশন জুঁই তাঁর সহকর্মীকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ওই সহকর্মী জুঁই-এর কথার অসঙ্গতির কারণে তাঁর সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করে দেন। এমনকি ওই সহকর্মী জানিয়েছেন, ত্রিশ বছর বয়সেও তিনি অবিবাহিত জানতে পেরে জুঁই অত্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন তাঁর ‘ভার্জিনিটি’ নিয়ে। তাঁর সামনেই বেশ কিছু সন্দেহজনক ব্যক্তির সাথেও জুঁই দেখা করেন। তাঁদের কাছ থেকে কিছু ক্যাশ টাকাও নিয়েছিলেন জুঁই। ওই সহকর্মীকে জুঁই বলেছিলেন, ইন্ডাস্ট্রির নামী ব্যক্তিত্বরাও ওই ব্যবসার সাথে জড়িত। ঘটনাটি ঘটেছিল ক্যামাক স্ট্রিটের ‘হলদিরাম’-এ। জুঁই-এর সাথে সেদিন উপস্থিত ছিলেন তাঁর বোন।

জুঁই বলেন, তাঁর বোনও ওই ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। এমনকি জুঁই-এর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের নেপথ্যে এই ব্যবসা রয়েছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, জুঁই নিজে বিবাহ বিচ্ছিন্না। সাধারণতঃ বাংলা সিরিয়ালে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তাঁর কথায় ধোঁয়াশা রয়েছে বুঝতে পেরে সরে গিয়েছিলেন ওই সহকর্মী। এবার আসা যাক, শ্রীময়ের কথায়। জুঁই-এর লাইভ ভিডিওর নিচে নেটিজেনদের একাংশ কমেন্ট করে বলেছেন, তাঁরাও ওই ব্যক্তি দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। কিন্তু যা ঘটেছে তা পুরোটাই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মৌখিক। এর কোনো চুক্তিপত্র নেই। প্রশ্ন হল, চারিদিকে এত সাইবার ক্রাইমের ঘটনা দেখা ও শোনার পরেও কি করে জুঁই ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলতে বা কাজ করতে রাজি হয়েছিলেন? তবে ওই ব্যক্তি কোনো অর্থ দাবি করেননি। তিনি শুধুই শুটিং হবে বলেও কাজটি করেননি। জুঁই-এর যদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ থেকে থাকে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে তাহলে লাইভ না করে তাঁকে সাইবার ক্রাইম সেলের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ।

whatsapp logo