করিশ্মা কাপুর (karishma kapoor) বলিউডের ‘ফার্স্ট ফ্যামিলি’ কপূর পরিবারের প্রথম মহিলা যিনি কপূর পরিবারের প্রথা ভেঙে ফিল্মে অভিনয় করতে এসেছিলেন। কিন্তু কাপুর পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিয়ে সুখের হয়নি। করিশ্মার জীবনে বাগদান পর্ব থেকেই ঘটেছে বিপর্যয়।
করিশমা একসময় অভিষেক বচ্চন (Abhishek Bachchan)-এর বাগদত্তা ছিলেন। অনেকে ভাবেন, তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বচ্চন ও কাপুর পরিবারের বন্ধন ঘটানোর জন্য করিশমা ও অভিষেকের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই পরিবার। সেই সময় অভিষেক বলিউডে নিউকামার হলেও করিশমা সুপারস্টার। কিন্তু করিশমার কাছে শর্ত রাখা হয়েছিল বচ্চন পরিবারের তরফে। তাঁকে বলা হয়েছিল তাঁর যাবতীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি অভিষেকের সঙ্গে জয়েন্ট করতে হবে। এই শর্ত মানতে পারেননি করিশমা। তিনি দ্রুত অভিষেকের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। কিন্তু কে জানত, এর পর তাঁকে আরও বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে?
অভিষেকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বেশ কিছুদিন পরে করিশমা তাঁর বাল্যবন্ধু সঞ্জয় কাপুর (sunjay kapoor)-কে বিয়ে করেন। ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে হলেও বিয়ের পর পাপারাৎজিদের সামনে আসেন করিশ্মা ও সঞ্জয়। সঞ্জয় পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। সঞ্জয় প্রথমে করিশ্মার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলেও হানিমুনে গিয়ে সঞ্জয়ের স্বরূপ প্রকাশ পায়। করিশমাকে অবাক করে দিয়ে সঞ্জয় বন্ধুদের নিয়ে হানিমুনে গিয়েছিলেন। এমনকি গিয়েছিলেন সঞ্জয়ের দাদাও। কিন্তু নববধূ করিশ্মা কিছু বলেননি। পরে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এই হানিমুন আসলে তাঁকে নীলামে ওঠানোর ফাঁদ। হানিমুনের রাতে বন্ধুদের সাথে রীতিমতো দর কষাকষি করে করিশ্মাকে নীলামে তোলেন সঞ্জয়। সেই রাত ও তারপরেও বহু রাত সঞ্জয়ের বন্ধুদের শয্যাসঙ্গিনী হতে বাধ্য করা হয়েছিল করিশ্মাকে। সেই সময় করিশ্মাকে নজরবন্দী করে রাখতেন সঞ্জয়ের দাদা।
করিশ্মা প্রতিবাদ করলেই তাঁর কপালে জুটত মার। একসময় গর্ভবতী হয়ে পড়েন করিশ্মা। জন্ম হয় তাঁর মেয়ে সামাইরা (samaira)-র। সামাইরাকে নিয়ে করিশ্মা বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু সেই সময় সঞ্জয় তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে সামাইরার দিকে তাকিয়ে সমস্যা মিটিয়ে নিতে বলেন। সামাইরাকে নিয়ে আবারও সঞ্জয়ের কাছে ফিরে আসেন করিশ্মা।
এরপর কিছুদিন সবকিছু ঠিকঠাক চলেছিল। জন্ম হয়েছিল করিশ্মার পুত্রসন্তানের। তারপরেই আবারও শুরু হয়েছিল অসহনীয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। এমনকি করিশ্মা যাতে বাড়ির সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন তার জন্য তাঁকে রীতিমতো বন্দি করে রাখা হত। এক রাতে অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে সঞ্জয় অচেতন হয়ে পড়লে তাঁর গাড়ির চাবি নিয়ে দুই সন্তানসহ একাই এক রাতের মধ্যে নিজেই গাড়ি চালিয়ে দিল্লী থেকে মুম্বইতে নিজের বাড়িতে এসে পৌঁছান করিশ্মা। ভোররাতে উদভ্রান্ত করিশ্মাকে দেখে চমকে উঠেছিলেন রণধীর (Randhir kapoor) ও ববিতা (babita)। এরপর আর ফিরে যাননি করিশ্মা। সঞ্জয়ের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে করিশমার। সামাইরা ও নিজের ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকেন করিশ্মা।