Hoop News

দুর্বৃত্তরা আর জি করের ভেতরেই রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রতিকে কাতর চিঠি দিলেন নির্যাতিতার মা

অবশেষে বহু মানুষের মনের বাসনা পূর্ণ হল। আর জি কর মেডিকেল কলেজে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করল সি বি আই। ১৫ দিন জিজ্ঞাসা কর সন্দীপ ঘোষ কে গ্রেফতার করল সিবিআই এর আর্থিক দুর্নীতির দমন শাখা তবে আর জি কর কাণ্ডে সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও আরো তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে খবর সুত্রে। আর জি কর মেডিকেলের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করার পর গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষের দেহরক্ষী আফসার আলী, এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন হাসপাতালের ভেন্ডার সুমন হাজরা এবং বিপ্লব সিং।

বুকের মধ্যে কষ্ট চেপে রয়েছে নির্যাতিতার বাবা-মা। সব সময় চাইছেন যে যারা তার মেয়ের এত বড় ক্ষতি করেছে প্রত্যেকের শাস্তি হোক। তার প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রতিকে চিঠি লিখলেন নির্যাতিতার মা এই চিঠির বয়ানে কি লেখা ছিল চলুন দেখে নি, এক ঝলক। তিনি সেই বয়ানে লিখেছেন আমাদের মেয়ে ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল সে একটা মেয়ে হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বলেই কি, তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই তার সঙ্গে নির্মম, নিষ্ঠুর, পৈশাচিক এই ঘটনা ঘটে গেল, তার স্বপ্নগুলোকে গলা টিপে হত্যা করা হলো? তিনি লিখেছেন, যে বা যারাই ঘটনা ঘটালো তাদের আড়াল করার জন্য সব তথ্য প্রমাণ লোপাট করার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হলো? বারবার তিনি প্রশ্ন করেছেন এটাই।

এছাড়া ঘটনার রাতের অনেক ঘটনা ও তিনি সেই চিঠির বয়ানে লিখেছেন, তিনি লিখেছেন, ঘটনার রাতে ১১ টা বেজে ১৫ মিনিটে মেয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়, তখনও সে হাসিখুশি ছিল সকালে আমার মেয়ে আর নেই, যাই ঘটুক না কেন মা-বাবা হিসেবে তো আমাদের জানানো উচিত ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালে যেতে যেতে ফোন আসে এবং সেখানে ফোনের ওপার থেকে কথা বলেন এসিস্ট্যান্ট সুপার, তিনিও কি বলেছেন সবটাই তিনি চিঠিতে লিখেছেন।

এসিস্ট্যান্ট সুপার এর কথা শুনে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতন অবস্থা হয় তারা গাড়ি চালককে যত জোরে পারে চালিয়ে নিয়ে যেতে বলেন হাসপাতালে। এমনকি মা-বাবা হিসেবে যখন তারা তার মেয়েকে দেখতে চান, তখন তারা বলেন ভেতরে ফরেন্সিক তদন্ত চলছে, ঢুকতে দেওয়া যাবে না। মা যখন বলেন যে, আমি কিছু করবো না, একবার মুখটা দেখেই চলে আসব, তাও দেখতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ এসে ঘটনা নিয়ে কোনো আলোচনাই করেননি, তার মা-বাবার সঙ্গে। তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে আর তাদের সেমিনার রুমে ঢুকতে দেওয়া হয়।

নির্যাতিতার মার চিঠিতে লেখেন যে, সেখানে কলকাতা পুলিশের প্রধান ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না, তখন মেয়ের দেহ দেখে তাদের মনে হয়, পুরো ঘটনা সাজিয়ে গুছিয়ে তাদেরকে দেখানো হচ্ছে, কারণ সেখানে যে পৈশাচিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তার পরে সব কিছু এইরকম সাজানো থাকতে পারে না। তবে চিঠি এখানেই শেষ নয়, চিঠির পরতে পরতে মা-বাবার ভেতরের দোমড়ানো মোচড়ানো কষ্টগুলো যেন পাক দিয়ে উপরে উঠে এসেছে। জাতি তার বিচারের আশায় বসে আছেন প্রত্যেকেই প্রত্যেকেই চাইছেন তারা কঠোরতম শাস্তি পাক। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের গ্রেপ্তারিতে তাই খানিকটা খুশি হয়েছে আন্দোলনকারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

চিঠি শেষ করার আগে তিনি লিখেছেন,
অতএব, আপনার কাছে এই হতভাগ্য মা-বাবার কাতর প্রার্থনা, অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে দোষীদের কঠোর শাস্তির, কঠোর থেকে কঠোরতম সাজার ব্যবস্থা করুন। সেটা যত দ্রুত হবে, তত দ্রুত আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। আমাদের এক মাত্র মেয়েকে হারানোর যন্ত্রণা সামান্য লাঘব হবে।

বিনীত,
হতভাগ্য মা

Related Articles