স্বর্গীয় সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতিগুলি একের পর এক মনের মণিকোঠায় ফিরে ফিরে আসছে। লতাজির অনুগামী মহলের প্রায় প্রত্যেকেই হয়ত জানেন তিনি সিনেমা দেখতে বেশ পছন্দ করতেন। কিন্তু এটা কি জানেন যে তিনি ছোট পর্দার ক্রাইম বেস সিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখতে খুব ভালোবাসতেন? দীর্ঘকাল ধরে চলা সিআইডির চরিত্ররা অর্থাৎ ইন্সপেক্টর অভিজিত ওরফে অভিনেতা আদিত্য শ্রীবাস্তব, এসিপি প্রদ্যুম্ন ওরফে অভিনেতা শিবাজী সত্যম, সিনিয়র ইন্সপেক্টর দয়া সিং ওরফে দয়ানন্দ শেট্টি এঁদের সবার সাথে বাস্তবেও লতাজির মধুর সম্পর্ক ছিল। সিআইডি সেটের একটি ছবিও শেয়ার করে লিখেছিলেন, “সিআইডি টিমের সঙ্গে আমার খুব পছন্দের এই ফটোটি।”
২০২০ সালে শিবাজী সত্যমের জন্মদিনে তাঁর সঙ্গে নিজের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে লতাজি লিখেছিলেন, “সিআইডি ধারাবাহিকের এসিপি প্রদ্যুম্ন শিবাজীরাও সত্যমের জন্মদিন আজ। তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এই কামনা করি। আবারও সিরিয়ালটি শুরু হোক।” ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর অর্থাৎ ২০ বছর ধরে মোট ১ হাজার ৫৪৭টি এপিসোড সম্পূর্ণ করে বন্ধ হয়ে যায় সিআইডি। ভারতের দীর্ঘতম ধারাবাহিকের মধ্যে অন্যতম প্রশংসনীয় ধারাবাহিক এটি। এতটাই এই ধারাবাহিক পছন্দ করতেন যে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় খুব দুঃখিতও হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
Namaskar. Aaj CID serial ke ACP Pradyuman Shivajirao Satam ji ka janamdin hai. Main unko bahut badhai deti hun aur phir se CID serial shuru ho ye meri mano kaamana pic.twitter.com/Fn2lR7IAqW
— Lata Mangeshkar (@mangeshkarlata) April 21, 2020
“কুছ তো গড়বড় হ্যায় দয়া”, সংলাপটি নিশ্চয়ই মনে রেখেছেন সিআইডি প্রেমীরা। লতাজিও এই ‘সিনিয়র ইন্সপেক্টর দয়া সিং’ চরিত্রটিকে বেশ পছন্দ করতেন। বাস্তবেও তাঁর নাম দয়া দিয়েই শুরু। ২০১৬ সালে অভিনেতা দয়ানন্দ শেট্টির সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে লতা লিখেছিলেন, “ম্যায় আউর দয়া।” অর্থাৎ দয়ানন্দ শেট্টির সাথেও যে কিংবদন্তি গায়িকা খুব ভালোবাসতেন তাঁর সান্নিধ্য পছন্দ করতেন এই তার প্রমাণ। লতাজির চলে যাওয়া মানুষের মনে যে কতটা ক্ষত তৈরি করে দিয়েছে তা বলে বোঝানো যাবেনা। এই শিহরণ আর থামবেনা হয়ত কখনোই।
ইন্সপেক্টর অভিজিত ওরফে অভিনেতা আদিত্য শ্রীবাস্তবও লতাজিকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে স্মরণ করতেন। তিনি জানিয়েছিলেন লতাজির সাথে তাঁর সম্পর্ক সুগভীর ছিল। প্রায়ই বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল লকদাউনের পর থেকে তা অবশ্য ফোনে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। প্রিয় লতা দিদির মৃত্যুর খবর শুনে শোকাহত আদিত্য বলেন, “আমি এখন যা অনুভব করছি তা প্রকাশ করতে পারছি না। সমগ্র দেশ একটি অমূল্য নক্ষত্রকে হারিয়েছে তবে আমি নিশ্চিত দেশের এই স্বর নাইটিঙ্গেল চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”