মাধুরী দীক্ষিত (Madhuri Dixit) যখন প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন, সেই সময় তাঁকে এক ঝলক দেখে অনেকেই তুলনা করতেন কিংবদন্তী অভিনেত্রী মধুবালা (Madhubala)-র সাথে। তবে মারাঠি কোকনাষ্ঠ ব্রাহ্মণ পরিবারের কন্যা মাধুরীর ফিল্মে আসা যথেষ্ট সহজ ছিল না। শৈশব থেকেই কথ্থকের তালিম নিয়েছিলেন মাধুরী। নৃত্যশিল্পী হিসাবে নজর কেড়েছিলেন তিনি। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন মাধুরী। তাঁর কথার মধ্যে ছিল সরলতা ও গভীরতার মিশ্রণ। মাধুরীর দিদির বান্ধবীর বাবা গোবিন্দ (Govinda) কাজ করতেন রাজশ্রী প্রোডাকশন হাউসে। সেই সময় এই প্রোডাকশন হাউসের কর্ণধার ছিলেন তারাচাঁদ বরজাতিয়া (Tarachand Barjatya)। তারাচাঁদ নতুন প্রতিভার উন্মেষ ঘটাতে পছন্দ করতেন।
বাঙালি পরিচালক হীরেন নাগ (Hiren Nag) তাঁর কাছে আসেন ‘অবোধ’-এর চিত্রনাট্য নিয়ে। তারাচাঁদের যথেষ্ট পছন্দ হয়েছিল এই কাহিনী। গতানুগতিকতার বাইরে কাহিনীর বুনোট ছিল ভিন্ন ধরনের। হীরেন আগেই ঠিক করেছিলেন শঙ্কর সিং -এর চরিত্রে অভিনয় করবেন তাপস পাল (Tapas Pal)। বাংলায় সেই সময় নায়ক হিসাবে তিনি খ্যাতি লাভ করেছেন। হীরেন চেয়েছিলেন, বলিউডের মাটিতেও তাপসের মতো দক্ষ বাঙালি অভিনেতাকে তাঁর স্থান তৈরি করে দিতে। অপরদিকে তারাচাঁদের কাছে তাপস তখন নতুন মুখ। তিনি তাপসের বিপরীতে চাইলেন এক নতুন নায়িকাকে যিনি অভিনয়ের পাশাপাশি ভালো নাচ জানেন এবং তাঁর কন্ঠস্বর সুললিত। গোবিন্দর উপর ভার পড়েছিল নতুন নায়িকা সন্ধানের। মাধুরীকে আগেই চিনতেন গোবিন্দ।
View this post on Instagram
মাধুরীর দিদিকে গোবিন্দ বলেন তাঁর বোনকে অন্তত একবার রাজশ্রী প্রোডাকশনের অফিসে যেতে রাজি করানোর কথা। কিন্তু মাধুরীর মা-বাবা রাজি ছিলেন না।মাধুরীর ইচ্ছা ছিল অভিনয়ের। ফলে একরকম মা-বাবাকে লুকিয়েই তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজশ্রী প্রোডাকশনের স্টুডিওতে। মাধুরীর হিন্দি কেমন তা পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে একটি হিন্দি বই থেকে কয়েকটি লাইন পড়তে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর হিন্দি পড়ার ধরনেই তারাচাঁদ খুঁজে পেয়েছিলেন গৌরীকে। অনেক কষ্টে মাধুরীর মা-বাবাকে রাজি করানো হয়েছিল। মাত্র ষোল বছর বয়সে হিন্দি ফিল্ম ‘অবোধ’-এর মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মাধুরী। 1984 সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ফিল্ম হিট না হলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।
View this post on Instagram
এরপর মাধুরী বেশ কয়েকটি ফিল্মে অভিনয় করলেও সেগুলি অসফল ছিল। কিন্তু 1988 সালে ‘তেজাব’-এর পর মাধুরীকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। 15 ই মে ছিল তাঁর জন্মদিন। চুয়ান্নটি বসন্ত পার করে পঞ্চান্ন বছর বয়সে পদার্পণ করলেন মাধুরী। তবুও তিনি এভারগ্রিন ‘মোহিনী’। তিনি বলিউডের আইকনিক মাধুরী।
View this post on Instagram