আগামী 23 শে ডিসেম্বর বড়দিনের প্রাক্কালে রিলিজ করতে চলেছে দেব (Dev) প্রযোজিত ফিল্ম ‘প্রজাপতি’। এই ফিল্মের মাধ্যমে ‘মৃগয়া’-র পর আবারও বড় পর্দায় ফিরতে চলেছেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) ও মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar) জুটি। 1975 সাল থেকে 2022 সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ বছরের বিরতির পর এই জুটি আবারও ফিরলেন। মমতার মনে হচ্ছিল, এই তো সেদিন শুটিং করছিলেন। যেখান থেকে ছেড়েছিলেন সেখান থেকেই যেন আবার শুরু করলেন। কিন্তু মিঠুনের সাথে মমতার যোগাযোগ ছিলই। মমতা জানালেন, মিঠুনের মা ও বোনদের সাথে তাঁর প্রায়ই কথা হয়। মেগাস্টারের মাকে ‘মাসিমা’ বলে ডাকেন তিনি। মিঠুনের সাথেও তাঁর কথা হয়। দেখা হলে শেষবার যেখানে ছেড়েছিলেন, কথা সেখান থেকেই শুরু হয়। মিঠুনও তাঁর সাথে খুব মজা করেন বলে জানালেন মমতা। তবে বহুদিন পর একসাথে স্ক্রিন শেয়ার করলেও মমতার মতে, এই ফিল্মটি দেব ও মিঠুনের।
‘মৃগয়া’-র সময় মিঠুনের সাথে মমতার বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেলেও বিয়েটা হয়নি। কোনোদিন যদি বই লেখেন, তাহলে অবশ্যই এই অধ্যায়টি লিখবেন বলে জানালেন মমতা। কিন্তু ওই অধ্যায়ের পর তাঁর স্বামী চন্দ্রোদয় (Chandrodoy)-কে আরও ভালোভাবে চিনেছেন, বুঝেছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে নেই তিক্ততা। মমতা মনে করেন, এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল। তবে মমতার সাথে মিঠুনের বন্ধুত্ব রয়ে গিয়েছে। চন্দ্রোদয়ের সাথেও মিঠুনের বন্ধুত্ব রয়েছে। প্রায়ই কথা হয়। তাঁদের সম্পর্ক যথেষ্ট খোলামেলা। তবে মমতা জানালেন, মিঠুনের সাথে বিয়ে না হয়েই ভালো হয়েছে। কারণ তাহলে তাঁর ফিল্মে অভিনয়, নাচ বন্ধ হয়ে যেত। কারণ মিঠুন তাঁর স্ত্রীর বাড়িতে থাকা পছন্দ করেন। মৃণাল সেন (Mrinal Sen) অবশ্য মিঠুন ও চন্দ্রোদয় দুজনকেই পছন্দ করতেন।
View this post on Instagram
মমতা মনে করেন, যেটা হয় ভালোর জন্যই হয়। তিনি ঈশ্বরের উপর সবকিছুই ছেড়ে দিয়েছেন। এই প্রজন্মের পরিচালকদের সাথেও কাজ করতে যথেষ্ট সাবলীল মমতা। তবে কোনো সংলাপ পছন্দ না হলেও বলে দেন তিনি। তবে সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray)-র সাথেও এই সাহস দেখিয়েছেন মমতা। ‘গণশত্রু’-তে অভিনয়ের সময় তিনি কিংবদন্তী পরিচালককে জিজ্ঞাসা করতেন, কোনো সংলাপ তাঁর মতো করে বলা যাবে কিনা! সত্যজিৎ অনুমতি দিতেন। তবে সমস্যা হয়েছিল বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Budhdhadeb Dasgupta) পরিচালিত ‘গৃহযুদ্ধ’ ফিল্মে অভিনয়ের সময়। মমতা একটি সংলাপ বলার কারণ জানতে চেয়েছিলেন পরিচালকের কাছে। তাঁর মতে, সংলাপটি বলার কারণ না জানলে তিনি স্বাভাবিক অভিনয় করতে পারবেন না। কিন্তু বুদ্ধদেবের ইগোর সমস্যা ছিল। তিনি গররাজি হয়ে যাহোক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। মমতা বুঝতে পারছিলেন সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই আর কিছু বলেননি।
বর্তমানে মমতা যখন শুটিং করেন, তাঁর মনে হয়, তা যথেষ্ট আরামের। কিন্তু একসময় তাঁরা যথেষ্ট কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শুটিং করেছেন। তবে সেই সময় কাজ করে আনন্দ ছিল। কিন্তু বর্তমানে একজন পরিচালক বছরে তিনটি করে ফিল্ম বানাচ্ছেন। কোথাও নিজেকে একাত্ম বোধ করার ব্যাপার নেই। তা মমতার খারাপ লাগে। কিন্তু তিনি মনে করেন, সময়ের সাথে সাথে নিজেদের বদলাতে হবে। একসময় তাঁকে প্রায় একই ধরনের চরিত্রে কাস্ট করা হত। বিরক্ত হতেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। কিন্তু ‘অন্তর্লীন’ ভেঙে দিয়েছে সেই ধারণা। এই ফিল্মে তাঁর চরিত্রে রয়েছে বিভিন্ন শেডস। পাশাপাশি অরিন্দম ভট্টাচার্য পরিচালিত ফিল্ম ‘শিবপুর’-এ ক্যামিও করেছেন তিনি।
View this post on Instagram