পাঁচের দশকের অবিভক্ত বাংলা। পিছনে পড়ে রইল মাটির নিকানো দাওয়া, তুলসীমঞ্চ, সন্ধ্যাপ্রদীপ ও মেয়েবেলা। সব ছেড়ে একদিন ‘ইন্ডিয়া’-য় চলে আসার ফরমান। শোনা যাচ্ছে, দেশের মাঝে নাকি বসবে কাঁটাতারের বেড়া। কাঁটাতারটা ছিন্নভিন্ন করেছিল দয়াময়ীর হৃদয়। সুনন্দা শিকদার (Sunanda Shikdar) লিখেছিলেন তাঁর কথা। এবার ‘দয়াময়ীর কথা’ আসতে চলেছে বড় পর্দায়। ফিল্মটি পরিচালনা করছেন তমাল দাশগুপ্ত (Tamal Dasgupta)। সব ঠিকঠাক থাকলে এপ্রিল মাসে শুরু হতে চলেছে শুটিং। দয়াময়ীর শৈশবের চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছে মেঘান চক্রবর্তী (Meghan Chakraborty)। শিবপ্রসাদ প্রামাণিক (Shibaprashad Pramanik)-এর প্রযোজনায় তৈরি ‘দয়াময়ীর কথা’-র মাধ্যমে বড় পর্দায় ডেবিউ করতে চলেছে মেঘান।
View this post on Instagram
একরত্তি মেঘান আপাতত বাবার অফিসের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গোয়ায় রয়েছে। একদিকে করোনা অতিমারী, অপরদিকে আংশিক লকডাউন মেঘানের মতো ছোট শিশুদের কাছ থেকে তাদের শৈশব ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই হঠাৎই বেড়ানোর সুযোগ পেয়ে খুশি মেঘান। তবে বাবাকে ভিড়ে যেতে দিতে নারাজ মেয়ে। যদি আবার তার বাবার করোনা হয়। তাই সমুদ্রের ধারে বসে বালি নিয়ে খেলতেই আনন্দ তার। তার উপর আবার শিখতে হচ্ছে বাঙাল ভাষা। মেঘান প্রথমে ভেবেছিল, শুট শুরু হতে বেশি দেরি নেই। কিন্তু এখনও এপ্রিল মাস অবধি অপেক্ষা করতে হবে শুনে মন খারাপ তার।
মেঘানের বাবা জানিয়েছেন, বাঙাল ভাষা শেখার পাশাপাশি কখনও ফোনে পরিচালকের কাছ থেকে, কখনও বা মা-বাবার মুখ থেকে চিত্রনাট্য ও গল্প শুনে চরিত্রটি বোঝার চেষ্টা করছে সে। তমালও আশাবাদী মেঘানকে নিয়ে। একঢাল চুল ও ভাসা ভাসা চোখ দেখে মেঘানকে দয়াময়ীর চরিত্রে বেছে নিয়েছেন তিনি। পনের জন শিশুর অডিশন নেওয়ার পর মেঘানের সিলেকশন হয়েছে। মেঘানের মধ্যে একটি সহজাত ব্যাপার রয়েছে বলে মনে করেন তমাল। তাছাড়া এর আগেও একটি ধারাবাহিকে মেঘান বাঙাল ভাষায় কথা বলেছে। ফলে বাঙাল ভাষাটা তার নখদর্পণে আনতে বেশি সময় লাগবে না। সুনন্দা জানিয়েছেন, সেই সময় তাঁরা কাপড় কেটে বানানো ঢোলা ফ্রক ও ইজের পরতেন। ফলে মেঘানের জন্য তৈরি হচ্ছে এই ধরনের পোশাক।
দয়াময়ীর মুসলিম দাদা মাজমের ভূমিকায় রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় (Rahul Banerjee) অভিনয় করছেন। ঋ সেন (Rii Sen) অভিনয় করছেন মোতি ভাবির চরিত্রে। প্রথমে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুটিং শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইয়াসের ফলে তা বাতিল করতে হয়। আপাতত চব্বিশ পরগনার টাকি, বসিরহাট, মিনাখাঁ, দেগঙ্গা ও উত্তরবঙ্গের দিনহাটাতে শুটিং হওয়ার কথা রয়েছে। তমালের ইচ্ছা ছিল, বাংলাদেশে শুট করার। কিন্তু নিয়ম-নীতির ফাঁদে পড়ে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অভিনেতাদের নিয়ে মহড়া দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তমালের।
অপরদিকে আনন্দ ও ভয় দুটোই কাজ করছে মেঘানের বাবার মধ্যে। তমাল তাঁকে জানিয়েছেন, দেশ-বিদেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে চলেছে ‘দয়াময়ীর কথা’। ফলে মেঘানের বাবার একটাই চিন্তা, শেষ অবধি পারবে তো একরত্তি মেয়ে?
View this post on Instagram