শরীর খারাপ হলে প্রায় সকলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কিন্তু মন খারাপ হলে কাউন্সেলিং-এর কথা এখনও ভাবতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ মানুষের জীবনে নেমে আসে মানসিক অবসাদ। কেউ প্রকাশ করেন, কেউ লুকিয়ে রাখেন। লুকিয়ে রাখার ফল হয়ে ওঠে মারাত্মক। মানসিক অবসাদের সময় মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে গেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)-ও একসময় মানসিক অবসাদের সম্মুখীন হয়েছিলেন।
একসময় পরিচালক রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)-র সাথে দীর্ঘদিন সম্পর্কে ছিলেন মিমি। টলিউডের অন্দরে তাঁদের আসন্ন বিয়ের গুঞ্জন রটেছিল। কিন্তু বিদেশে একটি শুটিং করতে গিয়ে ওই দেশের শুটিং ইউনিটের কর্তা মিলি (Millie)-র সাথে মিমির বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। মিমি ও মিলির মধ্যে তৈরি সাধারণ বন্ধুত্বের সম্পর্ককে অতিরঞ্জিত করে টলিউডে রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রটনা ছিল মিমির সাথে মিলির প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। রাজের চারপাশের কিছু মানুষ মিমির সম্পর্কে তাঁকে ভুল বোঝাতে শুরু করেন। মিমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেও পারেননি। রাজ ও মিমির ব্রেক-আপ হয়ে যায় ভুল বোঝাবুঝির ফলে। এরপর রাজের জীবনে আসেন শুভশ্রী (Subhashree Ganguly)। সাতপাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা।
কিন্তু রাজের সাথে ব্রেক-আপ মেনে নিতে পারছিলেন না মিমি। খাবার খেতে ইচ্ছা করত না। ঘুম আসতে চাইত না। মানসিক অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। নিজেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে নিচ্চিলেন অভিনয় জগৎ থেকেও। নিজের মানসিক অবসাদ নিয়ে কখনও মা-বাবার কাছে মুখ খুলবেন না ঠিক করেছিলেন মিমি। কিন্তু একসময় মাকে সবকিছু জানালেও আর পাঁচজন মায়ের মতোই মিমির মা-ও মানসিক অবসাদের সমস্যা আঁচ করতে পারেননি। ফলে মনোবিদের দ্বারস্থ হন মিমি। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, মনোবিদের কাছেও প্রথমে তিনি খুব চুপচাপ থাকতেন। ধীরে ধীরে কাউন্সেলিং-এর মাধ্যমে মিমির পরিবর্তন ঘটে। মনোবিদের পরামর্শে আবারও নিজের পছন্দের কাজে মনোযোগ দিয়েছিলেন মিমি। অতীতের কথা মন থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে প্রথমে আর পাঁচজন মানুষের মতো মিমিও মনোবিদের কাছে যেতে চাননি। তাঁর মনে হয়েছিল, সকলে কি ভাববেন! কিন্তু সেদিন মিমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই বর্তমানে তাঁর কেরিয়ার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে নিয়মিত মেডিটেশন করেন মিমি। পাশাপাশি সময় কাটান তাঁর সন্তানসম সারমেয়দের সাথেও।
View this post on Instagram