BollywoodHoop Plus

Mithun Chakraborty: ‘বাঙালিরা ধুতি পরতে পারে কিন্তু নাচতে পারে না’, উত্তরে যোগ্য জবাব মিঠুনের

প্রাচীনকাল থেকেই সমাজে শুনতে পাওয়া যায়, কালো হওয়া নাকি অপরাধ। এখনও অবধি সকলে চান, বাড়ির নবজাতকের গায়ের রঙ হবে টুকটুকে ফর্সা। বাড়ির মেয়ে-বৌরা শ‍্যামবর্ণ হলে এখনও তাঁদের কটু কথা শুনতে হয়। কিছুদিন আগেও ‘দেশের মাটি’-র নোয়া ওরফে শ্রুতি দাস (Shruti Das)-কে তাঁর গায়ের রঙের জন্য কটুক্তির শিকার হতে হয়েছে। শেষ অবধি তিনি আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এবার জনসমক্ষে এল সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)-র ঘটনা। একসময় তিনিও হয়েছিলেন বর্ণবিদ্বেষের শিকার।

এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র মিঠুন নন, কারোর পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়। সেই ঘটনার কথা আরও একবার উঠে এল পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায় (Ramkamal Mukherjee)-র লেখা মিঠুনের জীবনী ‘মিঠুন চক্রবর্তী : দ্য দাদা অফ বলিউড’ গ্রন্থে। রামকমলের কাছে মিঠুন তাঁর জীবন সম্পর্কে হয়েছিলেন অকপট। তিনি জানিয়েছেন, ঘরের বাইরে গেলে কিছুটা হলেও মানুষকে গ্রাস করে বিপন্নতা। কলকাতা থেকে মুম্বইয়ে ভাগ্যান্বেষণে পাড়ি দেওয়া মিঠুন তখন কার্যতঃ প্রবাসী। পেটে ছিল খিদের জ্বালা, শোওয়ার জন্য প্রযোজকের অফিসের সামনের বেঞ্চ এবং ভিতরে ভিতরে বারবার এক বাঙালির শিকড়ের টান অনুভব। তবু বলিউডে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে চাইছিলেন ‘জিমি’। অপরদিকে বলিউড তাঁকে বাতিল করে দেওয়ার চেষ্টায় রত। জিতেন্দ্র (Jeetendra) তো বলেই দিয়েছিলেন, মিঠুন অভিনেতা হতে পারলে তিনি অভিনয় ছেড়ে দেবেন।

গায়ের রঙ, শরীরের গঠন, নাচ, অভিনয় সবকিছু নিয়ে অকারণ সমালোচনার শিকার হয়েছেন মিঠুন। তিনি জানিয়েছেন, গায়ের রঙ নিয়ে তাঁকে এত কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল, শেষ অবধি তিনি নিজেকে নিয়ে হীনমন‍্যতায় ভুগতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায় তাঁর জানা ছিল না। শারীরিক গঠন নিয়ে কটাক্ষ শুনলেও মিঠুন জানতেন, তাঁর চেহারা নায়ক হওয়ার মতোই। অভিনয়টাও জানেন। কিন্তু দিনের পর দিন কিছু পত্র-পত্রিকায় তাঁকে নিয়ে লেখা হত। সেই সমালোচনার জন্য একসময় বলিউড থেকে ব্রাত্য হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পেশাগত ভাবে মিঠুন টালমাটাল হয়ে গিয়েছিলেন।

সেই সময় এক পরিচালক তাঁকে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন নাচের চ্যালেঞ্জ। রেকর্ড করা মিউজিক বাজিয়ে তিনি নাচতে বলেন মিঠুনকে। মিঠুন নিজের ভঙ্গিতে নাচ শুরু করলে ওই পরিচালক হেসে উঠে মিউজিক বন্ধ করে দেন। বিদ্রুপের হাসি হেসে তিনি মিঠুনকে বলেন, বাঙালিরা ধুতি পরতে পারে কিন্তু নাচতে পারে না। নাচগান বাঙালিদের জন্য নয়। এই কথা শুনে মিঠুন নিজেকে সংযত রাখতে পারেননি। তিনি পরিচালককে শাসিয়েছিলেন, বাঙালি জাতিকে অপমান করে আর একটা কথা বললে তিনি ওই পরিচালকের মুখের চেহারা বদলে দেবেন। সেই দিন ছিল ‘মহাগুরু’ হয়ে ওঠার শুরু। মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar)-এর পর বাঙালির অত্যন্ত আপন এক সুপারস্টার হয়ে ওঠার শুরু। দলগত, রাজনীতিগত আদর্শ যাই থাক না কেন, আজও বাঙালি জাতি জানে, মিঠুন চক্রবর্তী তাঁদের গর্ব ছিলেন, আছেন, থাকবেন।

Related Articles