Hoop Story

দেহের চামড়া ভেদ করতে পারেনা বন্দুকের গুলিও, এই প্রাণীর শক্ত ত্বকের রহস্য আজও অজানা

কোটি কোটি বছর আগে আমাদের এই পৃথিবীতে প্ৰথম প্রাণের সঞ্চার ঘটে। প্রথমে এককোষী, তারপর বহুকোষী প্রাণীর উৎপত্তি ঘটে আমাদের এই ভূজগতে। নানা বিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে প্রাণীকূল। সেই কারণেই আমাদের এই পৃথিবী হল বৈচিত্র্যময়। পৃথিবীতে কোটি কোটি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। আর সব প্রাণীর মধ্যে রয়েছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও গুনাগুন। যার মধ্যে অনেক প্রাণীর অনেক গুণাবলী আজো আমাদের কাছে অজানা ও অনাবিষ্কৃত। তবে এই প্রতিবেদনে এমন একটি প্রাণীর সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যার মধ্যে এমন একটি গান রয়েছে, যা শুনলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন।

এখনো অবধি, শক্ত চামড়া বা বর্মযুক্ত প্রাণী বলতে আমাদের মাথায় আসে কুমির বা কচ্ছপের নাম। তবে এই দুটি প্রাণী কিন্তু বন্দুকের বুলেট আটকাতে পারেনা তাদের শক্ত চামড়ার মাধ্যমে। তবে পৃথিবীর বুকে এমন একটি প্রাণী রয়েছে, যার শরীরের চামড়া এতটাই পুরু, যা ভেদ করতে পারেনা কোনো বন্দুকের গুলি। শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই! যদিও সেটাই স্বাভাবিক। আর এই প্রাণীটির নাম হল আর্মাডিলো। মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বসবাস করে এই প্রাণী। এটি ড্যাসিপোডিডি পরিবারভুক্ত একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। ড্যাসিপোডিডি হল সিনগুলাটা বর্গের একমাত্র অস্তিত্ববান পরিবার। এদের প্রধান বিশেষত্ব হল যে এদের দেহের উপরিভাগের বর্মসদৃশ শক্ত ত্বক। তবে বাচ্চারা কোমল ত্বক নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তুএদের ত্বক শক্ত হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়।

বর্তমানে প্রায় ২০ প্রজাতির আর্মাডিলো টিকে আছে আমাদের এই পৃথিবীতে। আর্মাডিলোর দেহের গড় দৈর্ঘ্য ৭৫ সেন্টিমিটার। তবে বড় আর্মাডিলোর দৈর্ঘ্য দেড় মিটার এবং ওজন ৫৯ কেজি অবধি হতে পারে। কিন্তু সাধারণত এই প্রাণী ইঁদুরের আকৃতির হয়ে থাকে। আর্মাডিলোর দৃষ্টিশক্তি খুবই দুর্বল। তবে এই প্রাণী খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে। এদের সামনের পায়ে তিন থেকে পাঁচটি এবং পেছনের পায়ে পাঁচটি নখযুক্ত আঙুল রয়েছে। নয় বলয়যুক্ত আরমাডিলো নদীর ধারে আর্দ্র মাটিতে থাকতে পছন্দ করে। মূলত দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন প্রাণীর দেখা মেলে।

আর্মাডিলোর দেহের উপরিভাগে বর্মসদৃশ শক্ত ত্বক বা খোল রয়েছে। বর্মের মতো শক্ত ত্বক এদের আত্মরক্ষার কাজে লাগে। বিপদে পড়লে এরা দেহকে পাকিয়ে বলের মতো করে। যতক্ষন অবধি বিপদ কেন না যায়, ততক্ষণ এরা এমন আকৃতি ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও এই প্রাণী জলের নিচে প্রায় ৬ মিনিট ডুব দিয়ে থাকতে পারে। এদের বর্মের মতো শক্ত ত্বকের কারণে এরা জলে ডুবে যায়। আর এভাবেই নিজের আত্মরক্ষা করে এই ক্ষুদ্র প্রাণী।

Related Articles