‘নির্বাসিত’ লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Tasleema Nasrin) আশির দশক থেকেই মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন মূল স্রোতের বিপরীতে হাঁটার জন্য। তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে বরাবর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য তাঁকে তাঁর জন্মভূমির শিকড় থেকে বিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু থামেননি তসলিমা। নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)-এর মাতৃত্বকালীন সময়ে তসলিমা ফেসবুকে পোস্ট করে বলেছিলেন, নিজের পরিচয়েই নুসরতের সন্তানকে বড় করতে। কিন্তু তসলিমা জানতেন না, সবাই তাঁর মতো স্বাধীন চিন্তা পোষণ করেন না।
সম্প্রতি নুসরতের পুত্রসন্তান ঈশান (Yishaan)-এর যে পুরসভা অনুমোদিত বার্থ সার্টিফিকেট সামনে এসেছে তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ঈশানের সম্পূর্ণ নাম ঈশান জে. দাশগুপ্ত (Yishaan J .Dasgupta) ও তার পিতার নাম দেবাশিস দাশগুপ্ত (Debashish Dasgupta)। দেবাশিস, যশের প্রকৃত নাম। অর্থাৎ নুসরত মাতৃপরিচয়ে নয়, পিতৃপরিচয়েই সন্তানকে বড় করতে চলেছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ তসলিমা বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, কলকাতার অভিনেত্রী নুসরত যতটা না বিপ্লবী, তার থেকে তিনি বেশি ভেবে নিয়েছিলেন। তসলিমা ভেবেছিলেন, নুসরত কার স্পার্ম নিয়ে গর্ভবতী হয়েছেন, তা উল্লেখযোগ্য বিষয় হবে না। নুসরত মাতৃপরিচয়ে সন্তানকে বড় করবেন। কিন্তু তসলিমাকে ভুল প্রমাণিত করে নুসরত বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি অন্য আর পাঁচজন রমণীর মতোই। এই কারণে তাঁর সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেটে সন্তানের পিতৃপরিচয় রয়েছে।
তুরস্কের বোদরুমে নিখিল জৈন (Nikhil Jain)-এর সঙ্গে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করার পর ভারতে এসে নুসরত বারবার এই বিয়ের রেজিস্ট্রেশন থেকে পিছিয়ে গিয়েছেন। বিয়ের যেহেতু আইনি বৈধতা নেই, তাই নুসরত -নিখিলের আইনি বিচ্ছেদের প্রশ্ন ওঠে না। ভারতের মাটিতে এটা লিভ-ইন রিলেশনশিপ ছাড়া আর কিছুই ছিল না বলে মনে করেন তসলিমা। কিন্তু তিনি ক্ষুব্ধ ঈশানের পিতৃপরিচয় নিয়ে লুকোচুরি করায়।
যশ ও নুসরতের সম্পর্ক নিয়ে কটাক্ষ করে তসলিমা লিখেছেন, কোনোদিন যদি শোনেন, নুসরত যশকে গোপনে বিয়ে করেছেন, তাহলেও তিনি অবাক হবেন না। তসলিমার মতে, কোনো ট্র্যাডিশনাল মেয়ের সঙ্গে নুসরতের তফাৎ নেই। তসলিমা লিখেছেন, প্রচুর লেখালেখি, প্রচুর স্বাগত জানানো, প্রচুর শুভেচ্ছাবার্তা, স্যালুট তোলা থাকুক এক্সট্রাঅর্ডিনারি, সাহসী, পুরুষতন্ত্রের ছকভাঙা মেয়েদের জন্য তোলা থাকুক। ট্র্যাডিশনাল মেয়েদের পিছনে সময় নষ্ট করা, তাদের বাহবা দেওয়া আপাতত স্থগিত থাকুক।