Hoop PlusTollywood

Nusrat Jahan: একটি নির্দিষ্ট দল সবকিছু ঠিক করতে চাইছে: নুসরত

সবেমাত্র রিলিজ হয়েছে শাহরুখ খান (Shahrukh Khan) ও দীপিকা পাড়ুকোন (Deepika Padukone) অভিনীত ফিল্ম ‘পাঠান’-এর গান ‘বেশরম রং’। গানটি রিলিজ হতেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ‘বেশরম রং’-এ দীপিকার পরনের গেরুয়া বিকিনি নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করেছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে ‘বয়কট পাঠান’ ট্রেন্ড। অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তো এখন সবসময়ই ফরাসী বিপ্লব চলে। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেত্রী-সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan Ruhi)।

নুসরত বললেন, একটি নির্দিষ্ট দল তাঁদের মর্জি অনুযায়ী সকলকে চালাতে চাইছেন। নির্দিষ্ট ছবি তৈরি করে দিতে চাইছেন মানুষের মস্তিষ্কে। ওই দলের সবেতেই সমস্যা। মহিলারা হিজাব পরলেও সমস্যা, বিকিনি পরলেও সমস্যা। ওনারা চাইছেন বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে ভারতীয় মহিলাদের পোশাক ঠিক করতে। ওই দল তাঁদের সকলের জীবন পরিচালনা করতে চাইছেন। তাঁরা কি পরবেন, কি খাবেন, কিভাবে কথা বলবেন, কিভাবে হাঁটবেন, স্কুলে কি শিখবেন, টিভিতে কি দেখবেন সবই ওই দল নির্ধারণ করে দিতে চাইছেন বলে মনে করছেন নুসরত। এই ভাবে নতুন ও উন্নত ভারতের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় না বলে মত প্রকাশ করলেন তিনি। নুসরতের মতে, এটি অত্যন্ত ভয়াবহ বিষয়। আগামী দিনে তা সমাজকে কোথায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাবে তা তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না।

বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে গেরুয়া রং নিয়ে বিতর্ক। উপরন্তু অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) ‘রাঙ্গ দে তু মোহে গেরুয়া’ গেয়েছেন আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। তা নিয়ে অযথা বিতর্ক হচ্ছে। অরিজিৎ গান শুরু করার আগেই বলেছিলেন, শাহরুখ খান (Shahrukh Khan) তাঁর সামনে উপস্থিত রয়েছেন। ফলে তাঁর জন্য কিছু গাইতে চান গায়ক। এই কারণে ‘গেরুয়া’ গানের একটি লাইন গেয়ে শাহরুখকে ট্রিবিউট দেন তিনি। কিন্তু অমিত মালব্য (Amit Malviya) অরিজিৎ-এর কন্ঠে ‘গেরুয়া’ গানটির প্রশংসা করলে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ঋজু দত্ত (Riju Dutta) 1998 সালের ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া’-র একটি বিশেষ রাউন্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন যাতে দেখা যাচ্ছে স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani) গেরুয়া রঙের পোশাক পরে মঞ্চে হাঁটছেন।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-র সমালোচনা করে বলেন, কি করে একজন নারীবিদ্বেষীকে দলে ঠাঁই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী! এদিকে পশ্চিমবঙ্গ যখন গেরুয়া বিতর্কে সরগরম, তখন মধ্যপ্রদেশে মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র (Narottam Misra) ‘পাঠান’ নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন। ওই রাজ্যের উলেমা বোর্ডের দাবি ফিল্মের নাম পাল্টাতে হবে।

পরিশেষে একটা কথা বলতেই হবে। একটি ফিল্ম নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী বা সমাজের কয়েকজন মানুষের জন্য বানানো হয় না। বিনোদন সর্বস্তরের মানুষের জন্য। এই ফিল্মের একটি ইউনিট থাকে যার সদস্যরা ফিল্মের চিত্রনাট্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী যাবতীয় রং ও পরিস্থিতি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। শোবিজ স্বাধীন। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। এই আওতায় কিন্তু শোবিজের প্রত্যেকটি মানুষ পড়েন। কোনো রং কারও একার নয়। সেই রং-এর পোশাক পরা যাবে না বলেও কোথাও লেখা নেই। বিনোদন জগতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করা খুব ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ বিনোদনকে জন্মলগ্ন থেকে কেউ কোনোদিন পরাধীন করতে পারেননি। যতই বয়কট ট্রেন্ড তৈরি হোক, দিনের শেষে বিনোদন মানুষকে বাঁচার রসদ যোগায়।

whatsapp logo