লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) চলে গেছেন। রেখে গেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন পদ্মিনী কোলহাপুরে (Padmini Kolhapure)। অনেকেই জানেন না, পদ্মিনী লতার দূরসম্পর্কের আত্মীয়। 1965 সালের পয়লা নভেম্বর একটি কোঙ্কনি পরিবারে পদ্মিনীর জন্ম হয়। তাঁর বাবা পন্ধরীনাথ কোলহাপুরে (Pandharinath Kolhapure) ছিলেন নামী ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী ও বীণাবাদক। মা নিরুপমা (Nirupama) ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার গ্রাউন্ড স্টাফ।
তিন বোনের মধ্যে পদ্মিনী ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর দিদি শিবাঙ্গী (Shibangi) বিয়ে করেছেন শক্তি কাপুর (Shakti Kapoor)-কে। তাঁদের দুই সন্তান শ্রদ্ধা (Sradhdha Kapoor) ও সিদ্ধান্ত কাপুর (Sidhdhant Kapoor)। ছোট বোন তেজস্বিনী (Tejashwini)-র বিয়ে হয়েছে পঙ্কজ সারস্বত (Pankaj Saraswat)-এর সঙ্গে। তাঁদের একটি চার বছরের মেয়ে রয়েছে। অভিনেত্রী হিসাবে নয়, গায়িকা হিসাবে বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন পদ্মিনী। ‘ইয়াদোঁ কি বারাত’, ‘দুশমন দোস্ত’ সহ বেশ কয়েকটি ফিল্মে শিবাঙ্গীর সঙ্গে শিশুশিল্পী হিসাবে গান গেয়েছিলেন পদ্মিনী। এমনকি ‘বিধাতা’, ‘দানাপানি’ সহ নিজের বেশ কয়েকটি ফিল্মে পরবর্তীকালে প্লে-ব্যাক করেছিলেন তিনি। কিশোর কুমার (Kishor Kumar)-এর সঙ্গে গেয়েছেন। বাপ্পী লাহিড়ী (Bappi Lahiri)-র সঙ্গে লন্ডনের অ্যালবার্ট হলে গান গেয়েছেন পদ্মিনী। এমনকি বাপ্পীর সাথে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর মিউজিক অ্যালবাম।
View this post on Instagram
তবে বলিউডে শিশুশিল্পী হিসাবে অভিনয়ে ডেবিউ করেছিলেন পদ্মিনী। আশা ভোঁসলে (Asha Bhonsle)-র কথায় দেব আনন্দ (Dev Anand) 1975 সালে ‘ঈশক ঈশক ঈশক’ ফিল্মে পদ্মিনীকে সুযোগ দিয়েছিলেন। ফিল্ম হিট করেছিল। এরপর ‘ড্রিমগার্ল’, ‘সাজন বিনা সুহাগন’-এর মতো একাধিক ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন পদ্মিনী। 1978 সালে মাত্র পনের বছর বয়সে রাজ কাপুর (Raj kapoor) নির্মিত ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ফিল্মে নায়িকার ভূমিকায় সুযোগ পান পদ্মিনী। তাঁর শুটিংয়ের সূচী সামলাতে তাঁর মা নিরুপমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু পদ্মিনীর জীবনে এরপরেই অপেক্ষা করছিল বিতর্ক।
1980 সালে ভারত সফরে এসেছিলেন প্রিন্স চার্লস (Charles)। পনের বছরের পদ্মিনী সৌজন্য সাক্ষাতের পর তাঁর গালে চুম্বন করেছিলেন। এই ঘটনা তৎকালীন মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। 1980 সালেই হলিউডের ফিল্ম ‘লিপস্টিক’-এর রিমেক ‘ইনসাফ কা তরাজু’-তে এক ধর্ষিতার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন পদ্মিনী। তাঁর অভিনয় সাড়া ফেলেছিল। একের পর এক হিট ফিল্ম উপহার দিয়েছেন পদ্মিনী। নবাগত অনিল কাপুর (Anil Kapoor)-এর বিপরীতে তিনিই তখন ছিলেন একমাত্র নায়িকা যিনি ‘ওহ সাত দিন’ ফিল্মে অভিনয় করেন। এই ফিল্মের মাধ্যমে অনিলের বলিউড কেরিয়ারের পালে হাওয়া লাগে। আজও তার জন্য পদ্মিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ অনিল।
1986 সালে প্রদীপ শর্মা (Pradip Sharma)-কে বিয়ে করেন পদ্মিনী। পুত্রসন্তান প্রিয়ঙ্ক (Priyank Sharma)-র জন্মের পর ছেলেকে সময় দিতে অভিনয় থেকে ধীরে ধীরে সরে যান পদ্মিনী। কিন্তু তাঁর প্রযোজিত ফিল্ম ‘রকফোর্ড’ মুক্তি পায় 1999-এ। এই ফিল্মের পরিচালক ছিলেন নাগেশ কুকূনুর (Nagesh Kukunur)। 2004 সালে মারাঠি ফিল্মের মাধ্যমে আবারও অভিনয়ে ফিরেছেন পদ্মিনী। বর্তমানে টেলিভিশনেও কাজ করছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর একটি বুটিক রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বড় শহরে রয়েছে তাঁর অভিনয় ও মডেলিং শিক্ষার প্রতিষ্ঠান।
View this post on Instagram