Pallavi Dey: পল্লবীর আগেও আত্মহত্যা করেছেন সাগ্নিকের প্রাক্তন প্রেমিকা, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

Avatar

রবিবার গড়ফার ফ্ল্যাট থেকে ‘আমি সিরাজের বেগম’ খ্যাত অভিনেত্রী পল্লবী দে (Pallavi Dey)-র ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। প্রাথমিক পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আত্মহত্যার তত্ত্ব উঠে এলেও তা মানতে নারাজ পল্লবীর মা-বাবা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, খুন করা হয়েছে পল্লবীকে। অপরদিকে পুলিশের নজরে আসে পল্লবীর লিভ-ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তী (Sagnik Chakraborty)-র ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা। গতকাল ‘হুপহাপ’ (HOOPHAAP)-এর তরফেও সাগ্নিকের আয় ও তাঁর সম্পত্তির পরিমাণের অসঙ্গতির কথা তুলে ধরা হয়েছিল। এমনকি সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল সাগ্নিকের পল্লবীর উপর আর্থিক নির্ভরতা নাকি অভিনেত্রীকে জোর-জবরদস্তি করে অর্থ আদায় নিয়ে। এবার এই সংবাদ প্রকাশের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন সাগ্নিক।

পল্লবীর বাবা, মা ও ভাই সোমবার থানায় উপস্থিত হয়েছিলেন সাগ্নিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে। এদিন পল্লবীর বাবা নীলু দে (Nilu Dey)-এর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দন্ডবিধির 120B, 420, 403, 406, 341, 323, 302 ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাত থেকে ক্রমাগত জেরা করার পর মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হল সাগ্নিককে। বুধবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের মতে, সাগ্নিকের ব্যাঙ্ক ট্রানজাকশনের তথ্যে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি। বুধবার আদালতের কাছে সাগ্নিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by mistuu (@pallavidey153)

হাওড়ার জগাছার বাসিন্দা সাগ্নিক এলাকায় জানিয়েছিলেন, তিনি টেলিকম কর্মী। কিন্তু পল্লবীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর পল্লবীর মা-বাবাকে কখনও তিনি বলেছেন, তিনি ভিডিও বানান, কখনও বলেছেন ব্যবসা করেন। ফলে পল্লবীর মা-বাবা জানতেন না, সাগ্নিকের প্রকৃত পেশা কি! অপরদিকে সাধারণ পরিবারের ছেলে সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবীর সম্পর্কের সূত্রপাতের পর তাঁর বিলাসবহুল লাইফস্টাইল এলাকার মানুষদের নজর কেড়েছিল। নিউটাউনে সাগ্নিক একটি আশি লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কিনেছেন যার মালিকানা রয়েছে সাগ্নিক ও তাঁর বাবার নামে। অথচ সাগ্নিকের ওই ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতেন পল্লবী। এমনকি সাগ্নিকের বিলাসবহুল অডি গাড়ির ইএমআই-ও পল্লবীকে দিতে হত। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে রয়েছে তাঁদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট এবং পল্লবীর নামে মোট পনের লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট যেগুলির নমিনি সাগ্নিক।

ফেব্রুয়ারি মাসে সাগ্নিক প্রোপোজ করেছিলেন পল্লবীকে। এরপর 27 শে এপ্রিল থেকে তাঁরা লিভ-ইনে থাকতে শুরু করেন গড়ফার ফ্ল্যাটে। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে একটি দামি ফ্ল্যাট, দামি গাড়ির পাশাপাশি নিজের প্রেমিককে ফিক্সড ডিপোজিটের নমিনি কি আদৌ স্বেচ্ছায় করেছিলেন পল্লবী? কারণ পল্লবীর সহকর্মীরা তাঁর গায়ে একাধিকবার মারের আঘাত দেখেছেন। পল্লবীর পরিচারিকা তাঁর মাসি সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য (Sanghamitra Bhattacharya)-কে জানিয়েছেন, টাকা-পয়সা নিয়ে সাগ্নিক ও পল্লবীর মধ্যে মারাত্মক রকমের অশান্তি হত। এমনকি শনিবার রাতেও তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। শোনা যাচ্ছে, পল্লবীর পরিবারের সদস্যরা পল্লবী ও সাগ্নিকের লিভ-ইন রিলেশনশিপকে সমর্থন করলেও সাগ্নিকের পরিবার এর বিপক্ষে ছিলেন। এই কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে সাগ্নিকের নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের মালিকানায় তাঁর বাবার নাম কেন রয়েছে? একটু বিস্তারিত ভাবলে দেখা যাবে, পল্লবীর মৃত্যুর ফলে সাগ্নিকের কিছুটা হলেও লাভ রয়েছে। কারণ পল্লবীর পনের লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের নমিনি তিনিই। অপরদিকে জানা গিয়েছে, আইনত বিবাহিত ছিলেন সাগ্নিক। অন্য মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। পল্লবী যদি আত্মহত্যাও করে থাকেন, তাহলে তাঁকে কি শুধুমাত্র সাগ্নিক একাই প্ররোচিত করেছিলেন? সাগ্নিকের স্ত্রী-ই কি পল্লবীর অবর্তমানে তাঁর গড়ফার ফ্ল্যাটে আসতেন? রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। সাগ্নিক সম্পর্কিত তথ্য সামনে আসার পর মনে হচ্ছে, শুধুমাত্র সাগ্নিক নন, তাঁর পরিবার ও স্ত্রী-ও পল্লবীর মৃত্যু রহস্যে জড়িত থাকতে পারেন।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by mistuu (@pallavidey153)

সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবীর আগেও সৌমি (Soumi) নামে একটি মেয়ের সম্পর্ক ছিল। তিনিও সম্পর্কে থাকাকালীন আত্মহত্যা করেন। ফলে সাগ্নিকের সাথে সম্পর্কে থাকাকালীন তাঁর দুই প্রেমিকার পরপর আত্মহত্যার ঘটনা কখনও কাকতালীয় হতেই পারে না।

whatsapp logo