টলিউড ইন্ডাস্ট্রি অর্থাৎ বাংলা সিনেমাকে প্রাণ খুলে শুধু দিয়েই গিয়েছেন সুখেন দাস পরিবর্তে কোনো প্রত্যাশা রাখেননি এমনটাই বক্তব্য এককালের খ্যাতনামা অভিনেতার কন্যা পিয়া দাসের। জনপ্রিয় ছবি, সংলাপ, গান, বাণিজ্য— সব দিক থেকেই তিনি টলিউডে প্রতিটি আনাচে-কানাচে রেখে গিয়েছেন নিজের অবদান। ছবি হিট করতে সুখেন দাস টার্গেট করতেন মধ্যবিত্ত বাঙালির আবেগকে। তার ছবির সংলাপ এবং গানে মুগ্ধ হয়ে থাকতেন খেটেখাওয়া মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজ। আজকের ছবির থেকে অনেক ভালো ব্যবসা করত সুখেন দাসের ছবি। কিন্তু বাংলা সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিকে এত কিছু দান করার পরেও পরিবর্তে সামান্য সম্মানটুকু পাননি তিনি। এমনটাই অভিযোগ তার কন্যার। কোনো পুরস্কার তো দুরস্ত ইন্ডাস্ট্রির অধিকাংশ শিল্পীর থেকে যোগ্য সম্মানটুকুও পাননি। তার কন্যা পিয়ার বক্তব্য উত্তম কুমার চলে যাওয়ার পর কয়েক দশক ধরে একা নিজের হাতে ইন্ডাস্ট্রিকে চালিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছে তিনি আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন যে কোনো পুরস্কার নয় অন্তত সামান্য সম্মানটুকু এবার তার বাবাকে দেওয়া হোক।
তার ছবিতে মূলত মধ্যবিত্ত আবেগ ব্যতীত আর কিছুই ছিল না কি করে এত সাফল্য পায় তার ছবি? তার কন্যার বক্তব্য যে এত নিরাপত্তার অভাবে ভুগতেন না কেউ। তখন মানুষের জীবনযাপন সহজ ছিল। পারস্পারিক রেষারেষি ছিলনা। ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই সবার বন্ধু ছিল তখন। ইন্ডাস্ট্রিতে সকলকে নিজের হাতে বেড়ে খাইয়েছিলেন তার বাবা।
বাবার পরিচালনায় তিনি প্রথম ছবি ‘মিলন তিথি’ করলেন। সেই ছবির নায়ক ছিলেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্সঅফিসে তুমুল হিট হয় সেই ছবি। বাবার কল্যানেই তিনি হয়ে উঠলেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা। তাকে কখনো ‘স্বজনপোষণ’ করে টিকে রয়েছেন এমন কথা শুনতে হয়নি। তার দাদা রজত, কাকা অজয় দাস সকলেই এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জামাই অনুপ সেনগুপ্ত তার বাবর সহকারী পরিচালক ছিলেন। সেই হিসাবে দেখতে গেলে তার মতে তখন স্বজনপোষণ সকলেই করতেন। খোদ অঞ্জন চৌধুরী তার নিজের সিনেমায় তার দুই মেয়েরা আত্মপ্রকাশ ঘটান।
তার অভিনয়ে আসা হঠাৎ করেই। এমনকি সুখেন দাসও চাইতেন না তার কন্যা অভিনয়ে নাম লেখাক। কিন্তু নিজের যমজ দিদি ১৩ বছর বয়সে ক্যান্সারে চলে যেতে ১৩ বছর বয়সে বাবার অসম্পূর্ণ ইচ্ছে পূরণ করতে তাকে অভিনয় নামতে হয়।
সুজিত গুহ-র ছবি ‘দাদামণি’ অভিনয়ে ডেবিউ করেন তিনি। প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসাবে পান প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তার বাবা তার দাদার ভূমিকায় অভিনয় করেন সিনেমায়। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন তখন সে তার বাবার ক্যামেরার সামনে সম্পূর্ণ অন্যরকম সেখানে কেউ তার মেয়ে নয় কেউ তার পরিচিত নয়।