মন্দিরে সকলের সামনে রাণীমাকে আঘাত করেন গদাধর, জানুন সত্য ঘটনা, রইলো ভিডিও
দরিদ্র শুদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা মেয়ের হাতে তৈরি মন্দিরে কেউ পুরোহিত হতে চাইছিলেন না। ব্রিটিশ আমলে তৈরি মন্দিরে পুরোহিত পাওয়া যখন দুষ্কর, ঠিক তখনই রামকুমার চট্টোপাধ্যায় নামক এক ব্রাহ্মণ রানীকে আশার আলো দেখালেন। তিনিই আনলেন শ্রী রামকৃষ্ণকে প্রথম। সেইসময় রাণীমা মন্দিরের পুরোহিতের দায়িত্ব রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিলেন এবং সাজসজ্জার দ্বায়িত্ব গদাই ঠাকুরকে। পরবর্তীতে রামকুমারের মৃত্যুর পর মাতৃভক্ত গদাইকে রানী মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব দেন এবং তাকে নিজের ইচ্ছামতো মা কালীর সেবা ও প্রার্থনা করার অনুমতি দেন।
সম্প্রতি জি বাংলা চ্যানেল সম্প্রচারিত হয়েছে রাণীমার পিঠে চড় মারবেন গদাই ঠাকুর অর্থাৎ রামকৃষ্ণ। কারণ রাণীমা নাকি মন্দিরে এসে সম্পত্তির চিন্তা করছিলেন। আসলে ব্যাপারটা ঠিক কী ঘটেছিল?
লোক কাহিনী স্বরূপ, রানী রাসমণি কালীবাড়িতে এসেছেন। মা কালীর পূজা হয়ে গেছে, তিনি ভবতারিণী মাকে প্রণাম করে মন্দিরমধ্যে পূজা-আহ্নিক করতে বসলেন। শ্রীরামকৃষ্ণকে দেখে তিনি মা-র নামগান করতে অনুরোধ করলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ রানীর কাছে বসে ভাবে বিভোর হয়ে রামপ্রসাদ কমলাকান্তের গান শুরু করলেন।
এদিকে রানী জপ করতে করতে গান শুনছেন। কিছুক্ষণ পরে শ্রীরামকৃষ্ণ হঠাৎ গান থামিয়ে ‘এখনেও ওই চিন্তা ?’ বলেই রানীমাকে আঘাত করেন। তক্ষুনি মন্দিরের সকলে ও রানীমার পরিচারিকারা হইহই করে উঠল। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ ও রানী রাসমণি – দুজনেই স্থির গম্ভীর।
কেন মারলেন তিনি সকলের সামনে অমন করে? এরকম প্রশ্ন উপস্থিত সকলেই করলে, শ্রীরামকৃষ্ণ মৃদু মৃদু হাসেন। মায়ের ধ্যান না করে রানী আজ কেবল একটি মকদ্দমার কথাই চিন্তা করছিলেন। সেজন্য গদাই ঠাকুর তাঁকে শাস্তি দিলেন। রানী লজ্জিত ও দুঃখিত হলেন। শ্রীরামকৃষ্ণর প্রতি তাঁর লোকজন খারাপ ব্যবহার করতে পারে, এই ভেবে রানী সকলকে ডেকে বলেন, মা ভবতারিণী গদাধরকে দিয়ে তাকে সাবধান করেছেন। এরপর রানী ধীরে ধীরে বিষয় সম্পত্তি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে সব দায় দায়িত্ব মাথুর বাবুর হাতে তুলে দেন।