পুরোনো বিদায় নিলেও এখনও মানুষ পুরোনোকে নিয়ে ভাবতে ভালোবাসে। কেউ থাকুক বা না থাকুক তার স্মৃতি, ইতিহাস অমর হয়ে থেকে বর্তমান স্মৃতি উদ্যানে। সেরকমই একজন মানুষ হলেন সুপ্রিয়া দেবী। উত্তম কুমারের সুপ্রিয়া বা কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুপ্রিয়া। ২০১৮ র ২৬ শে জানুয়ারি পরলোক গেলেও, এই জানুয়ারির শীতেই তার জন্ম হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কলকাতায় চলে আসেন বাবা ও বোনদের সঙ্গে। ছোট্ট মেয়ে বাবার খুব ভক্ত ছিলেন, বাবার আদেশেই অভিনয় জগতে আসা, এমনকি ১৯৫২ সালে উত্তমকুমারের সঙ্গে ‘বসু পরিবার’ ছবি দিয়ে শুরু।
সুপ্রিয়া দেবীর আরো একটি সুন্দর নাম ছিল, সেটা হল বেনু। এখনও রান্নাঘর শোতে সুদীপ্তা মাঝে মধ্যে বেনু দি বলে সম্বোধন করেন সুপ্রিয়া দেবীকে। তার রান্নার তারিফ করেন, যেই রান্নার স্বাদ মুখে লেগেছিল স্বয়ং উত্তম কুমারেরও। ১৯৬৩ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর গিরীশ মুখার্জি রোডের পৈতৃক বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন উত্তমকুমার। সেই থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গেই থেকে যান তিনি।
উত্তম কুমার তার জীবনের শেষ ১৭ বছর সুপ্রিয়া দেবীর ছত্রছায়ায় কাটিয়ে দেন। সুপ্রিয়া দেবী বাড়িতে অনেক পোষ্য ছিল, যাদের নিয়ে মহানায়ক নিজেও মেতে থাকতেন অবসর সময়ে।
জন্মান্তরে বিশ্বাস ছিল না সুপ্রিয়া দেবীর। তার কথায়, ”জীবন একটাই । তার পর সব শেষ । আর সেটা খুব নির্মমও। তুমি যা দিলে টিলে, এখনই যদি পেলে তো পেলে । পরে কেউ মনে রাখবে না । শক্তি সামন্ত খুব বলতেন, “রাত গ্যায়ী , বাত গ্যয়ি”। তাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত উত্তম প্রেমে ডুবে ছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। শুধু উত্তম প্রেম নয়, দর্শকদের দিয়েছিলেন সেরা সেরা চরিত্র। কখনো তিনি দিয়েছিলেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’র মতন অদ্ভুত কাজ, কখনো ‘কোমল গান্ধার’, কখনো ‘সন্ন্যাসী রাজা’ তো কখনো ‘জীবন জিজ্ঞাসা’।