‘বেলা শেষে’ পৌঁছেও শেষ হল না, নতুন করে ‘বেলা শুরু’। বড় পর্দায় আবারও জীবন্ত দুই কিংবদন্তী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee) ও স্বাতীলেখা (Swatilekha)। তার সাথেই ফিরছেন তাঁদের অনস্ক্রিন পুত্র-কন্যারাও। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta) অভিনয় করেছেন এক কন্যা মালশ্রীর চরিত্রে। ‘বেলা শুরু’ নিয়ে অকপট ঋতুপর্ণা। ঋতুপর্ণার খুব অবাক লাগে, যাঁদের ‘বেলা শুরু’ , আজ নেই তাঁরা। তবে তাঁদের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল একাত্মের বন্ধন যা চারিয়ে গিয়েছে দর্শকদের হৃদয়ে।
কিন্তু ঋতুপর্ণা ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছেন বিতর্কে। তাঁর জীবনটা রয়েছে বড্ড ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। ঋতুপর্ণার সংসার রয়েছে সিঙ্গাপুরে। সেখানে তাঁকে সময় দিতে হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলছে তাঁর ফিল্মের শুটিং। তবে এর মধ্যেই তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন ইন্ডিগো বিতর্কে। আমেদাবাদে ছিল ঋতুপর্ণার শুটিং। বোর্ডিং-এর সময়ের মাত্র পাঁচ-দশ মিনিট দেরিতে পৌঁছানোর ফলে ঋতুপর্ণাকে ফ্লাইট ধরতে দেওয়া হয়নি। ঋতুপর্ণা বারবার অনুরোধ করলেও তাতে লাভ হয়নি। এরপরেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ করেন এই ঘটনার। ঋতুপর্ণার পাশে দাঁড়ান নেটিজেনরাও। অবশেষে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ঋতুপর্ণার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। তবে ঋতুপর্ণা জানিয়েছেন, বর্তমানে ইন্ডিগো তাঁর সাথে যথেষ্ট ভালো ব্যবহার করছেন। ইন্ডিগো ফ্লাইট যথেষ্ট ফ্লেক্সিবল বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা। এই কারণে এই ফ্লাইটে বেশি যাতায়াত করেন তিনি। সেদিন ব্যাঙ্গালোর ও রাজকোট হয়ে আমেদাবাদ যেতে হত ঋতুপর্ণাকে। শুধু নিজের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্য তিনি মুখ খুলেছিলেন। তাঁর মতে, পঁচিশ মিনিট আগে পৌঁছেও ফ্লাইট ধরতে না দেওয়া যথেষ্ট দুর্ভাগ্যজনক।
View this post on Instagram
ফ্লাইটের টিকিটও সস্তা নয়। ঋতুপর্ণার মতে, মানুষ এত কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করেন, তার পরে এই ধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়। ঋতুপর্ণা মনে করেন, তিনি অন্যায় করেননি। এই কারণেই তিনি এই ধরনের আবেদন করতে পেরেছেন। ইন্ডিগোর তরফে ক্ষমা চাওয়ার পর দুটি স্থানের বোর্ডিং পাস ঋতুপর্ণার হাতে দিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন ধরনের খাবারের ব্যবস্থা করে যথেষ্ট আপ্যায়ন করেছেন।
অপরদিকে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)-র প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ঋতুপর্ণার দিকে ছুটে এসেছে অভিযোগের তীর। অভিষেক একসময় অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছেন প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee) ও ঋতুপর্ণা। কিন্তু ঋতুপর্ণার সাথেই সবচেয়ে বেশি ফিল্মে অভিনয় করেছেন অভিষেক। এখনও ঋতুপর্ণা মনে করেন, অভিষেকের স্ক্রিন প্রেজেন্স ছিল দূর্দান্ত। তাছাড়া দারুণ ডান্সার ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে ছিলেন পরোপকারী মানুষ ও ভালো বন্ধু। ঋতুপর্ণা এখনও বুঝতে পারছেন না, কেন এই ধরনের কথা বলেছিলেন অভিষেক! তাঁর মৃত্যুর পর এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু ঋতুপর্ণা মনে রাখতে চান, অভিষেকের সঙ্গে তাঁর সুন্দর স্মৃতিকে। মেকআপ আর্টিস্ট আজাদ (Azad)-এর কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা (Sanjukta Chatterjee)-কে ফোন করেছিলেন ঋতুপর্ণা। আজাদও বারণ করেছিলেন মৃত্যুর আগের দিন অভিষেককে শুটিংয়ে যেতে। কিন্তু উপায় ছিল না। একপ্রকার জোর করেই অভিষেককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
কিন্তু পরজন্মে বিশ্বাস করেন ঋতুপর্ণা। তিনি মনে করেন, আবারও অভিষেক ফিরবেন তারকার বেশে। ঋতুপর্ণার কাছে তাঁর কেরিয়ারের প্রতিটা দিন একটা যুদ্ধ। নিজেকে তিনি যোদ্ধা মনে করেন। এই যুদ্ধক্ষেত্রেই একদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান ঋতুপর্ণা।
View this post on Instagram