টলিউড তথা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, যেখানে প্রতিদিনের লড়াই দর্শকদের চোখে না পড়লেও শিল্পীদের প্রতিদিন লড়াই চালিয়ে যেতে হয় টিকে থাকার। কাজ ধরে রাখা হোক বা নতুন কাজের সন্ধান পাওয়া সবটাই আকাশকুসুম, কখনো কাজ অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তো কখন পরিস্থিতি। এমত অবস্থায় শিল্পীদের মনের অবস্থা কেমন হতে পারে সেই নিয়েই সোজাসাপ্টা কলমে ঝড় তুললেন বাংলার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
সদ্য প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। সেই শোকের রেশ কাটিয়ে কড়া শব্দ বাণ ছুঁড়ে দিলেন ঋতুপর্ণা। কী বললেন অভিনেত্রী?
ঋতুপর্ণার সাফ জবাব , “অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় চলে যাওয়ার পর দেখেছিলাম আমার দিকে ধেয়ে আসছে স্বরচিত প্রশ্নবাণ!” নেট মাধ্যমে অ্যাক্টিভ থাকলেও নেট জনতার মন্তব্য নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামান না অভিনেত্রী, কিন্তু মৃত মানুষের কেরিয়ার বা ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া করার প্রতিবাদে সরব হলেন তিনি।
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণার কথায়, “দেখলাম, বহু জায়গায় লেখা হয়েছে, আমি নাকি মিঠুর স্ত্রী সংযুক্তাকে একবার ফোন অবধি করিনি! এটা সম্পূর্ণ অসত্য। ও যে দিন চলে যায়, সেদিন আমি গুজরাটে ছবির শ্যুটে। খবর পেলাম আমাদের বহু দিনের রূপটান শিল্পী আজাদ মিঠুর বাড়িতেই তখন। আজাদই আমায় ফোন করে। আমি আজাদকে বলি মিঠুর স্ত্রীকে ফোনটা দিতে। ওর সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথাও হয়। এমনকি, ওর স্ত্রী সংযুক্তাই আমায় বলেছিল যে, শেষ দিনে মিঠু শ্যুট করতে যেতে চায়নি। এবং সংযুক্তাও ওকে বারণ করেছিল শ্যুটে যেতে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কাজের দায়িত্ব তো এড়ানো যায় না। তাই মিঠুকে শ্যুট করতে যেতে হয়। তার পর আজাদকেই বলি, আমার নাম করে একটা মালা মিঠুকে দিতে।”
এখানেই থামেননি অভিনেত্রী, নিজের কেরিয়ার ও অভিজ্ঞতার ধারাপাত থেকে পরিষ্কার লেখেন, “একজন প্রযোজককে দেখেছিলাম, ফেসবুকে লিখে দিলেন ইন্ডাস্ট্রি কতটা খারাপ করেছে মিঠুর সঙ্গে। ছবি করতে দেওয়া হয়নি। আচ্ছা, ওই প্রযোজক নিজেও তো মিঠুকে দিয়ে কাজ করাতে পারতেন। ছবির কাজ দিতে পারতেন? শুধু ফেসবুক পোস্ট!জীবনের সব হিসেব এত সাদা-কালোয় হয় না। হতে পারে না।”
একটা সময় বাংলা ছবিতে প্রয়াত অভিষেকের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সেই সূত্র ধরেই অভিনেত্রী আক্ষেপ করে লেখেন,”আজ ওর জন্মদিনে দুঃখ একটাই, ও যে একটানা এত ভাল কাজ করেছিল, তা নিয়ে দীর্ঘ কাল কোনও কথা না বলে হঠাৎ ওর মৃত্যুর পর ওকে নিয়ে কুরুচিকর বিশ্লেষণ শুরু হল।”