ঈদের দিনে মুক্তি পেয়েছিল সলমান (salman khan) ও তাঁর অনুরাগীদের বহু প্রতীক্ষিত ফিল্ম ‘রাধে’। ‘রাধে’ নিয়ে সবার যা প্রত্যাশা ছিল, তা পুরোটাই চলে গেছে বিশ বাঁও জলে। অথচ ‘রাধে’-র চিত্রনাট্য নিয়ে পরীক্ষা করার অনেক সুযোগ ছিল। কিন্তু নির্মাতারা সেদিকে নজর দেননি। ‘তেরে নাম’-এর বহু বছর পরে সলমান-ম্যাজিক আরও একবার ব্যর্থ হল। কিন্তু এতদিন ‘রাধে’ নিয়ে সমালোচনা চলছিল বলিউডের আনাচে-কানাচে। এবার খান পরিবারের অন্দরেও তা প্রবেশ করল। ‘রাধে’-র ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খুললেন সলমান-এর বাবা ও বলিউডের বিশিষ্ট চিত্রনাট্যকার সেলিম খান (selim khan)।
‘রাধে’ দেখেছেন সেলিম নিজেও। কিন্তু ‘রাধে’-র কাহিনী তাঁর পছন্দ হয়নি। স্বর্ণযুগের পরিচালক ও চিত্রনাট্যকাররা বারবার বলিউডে ভালো চিত্রনাট্যের অভাবের কথা বলেছেন। এবার সেলিম খানও একই কথা বললেন। সেলিম বলেছেন, ‘দাবাং থ্রি’ ও ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ অন্য স্বাদের ফিল্ম ছিল। কিন্তু ‘রাধে’ ফিল্মটিকে ‘গ্রেট ফিল্ম’ বলা চলে না। সেলিমের মতে, কমার্শিয়াল ফিল্মের অনেক দায় থাকে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হল আর্থিক দায়িত্ব। কমার্শিয়াল ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত শিল্পী, প্রযোজক, ডিস্ট্রিবিউটর, এক্সিবিটর, ইনভেস্টরদের প্রত্যেকের নিজেদের সঠিক আর্থিক শেয়ার পাওয়া উচিত। তবেই ফিল্ম তৈরীর ব্যবসা চলতে পারে।
‘রাধে’ ফ্লপ হওয়ার জন্য সলমানকে অনেকেই দায়ী করেছেন। সলমান নিজেও সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সরাসরি বলেছেন, তিনি 14-15 বছর বয়স থেকে 55-56 বছর বয়স অবধি একই কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন বলিউডে সলমানের ধাঁচে তৈরী হওয়া পুরুষদের নতুন প্রজন্ম এসে গেছেন। সলমানকে কম্পিটিশন দিতে তৈরী বরুণ ধাওয়ান (varun Dhawan), টাইগার শ্রফ (tiger shroff), রণবীর সিং (Ranveer singh), আয়ুষ শর্মা (Ayush sharma)-রা। ফলে সলমান স্বীকার করেছেন নিজেকে বদলাতে তাঁকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু সেলিম বলেছেন, সলমানকে কমার্শিয়াল ফিল্মের আর্থিক দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে অভিনয় করতে হয়েছে। তবে ‘রাধে’-র স্টকহোল্ডাররা কিন্তু ফিল্ম ফ্লপ করলেও অ্যাডভান্টেজে রয়েছেন।
বলিউডকে রীতিমত ভালো চিত্রনাট্য উপহার দেওয়া সেলিম মনে করেন, বর্তমানে চিত্রনাট্যকাররা হিন্দি ফিল্মের চিত্রনাট্য লেখার জন্য উর্দু বা হিন্দি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। তাঁরা হলিউড ফিল্ম দেখে বলিউডের দর্শকদের জন্য চিত্রনাট্য লেখেন। কিন্তু হলিউড ও বলিউডের দর্শকদের চিন্তাধারায় আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। এই কারণে ‘জঞ্জির’-এর পর থেকেই বলিউডে কমার্শিয়াল ফিল্মের চিত্রনাট্যের অবনতি হতে শুরু করেছে।
কিন্তু ‘রাধে’ ফ্লপ করতেই নেটদুনিয়া ভরে গেছে অসংখ্য ট্রোল ও মিমে। যদিও এই বিষয়ে সলমান কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। আইএমডিবি রেটিংয়ে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ফিল্ম ‘রাধে’-র রেটিং মাত্র 1.7। আপাতত সলমানকে পরিবর্তিত চেহারায় দেখার জন্য অপেক্ষারত অনুরাগীরা। তবে ‘রাধে’-র ফ্লপ করার দায় বারবার সলমানের উপর না চাপিয়ে সেলিম খানের কথা অনুযায়ী সত্যিই চিত্রনাট্যের ব্যাপারে ভাবা উচিত। সলমান সুপারস্টার হওয়ার কারণে এবং পর্দায় আসার কারণে সবাই মনে করেন ফিল্ম হিট বা ফ্লপ করানোর সব দায়িত্ব তাঁর। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে চিত্রনাট্য ও কনটেন্ট হল আসল হিরো। যতদিন অবধি ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চিত্রনাট্যের ধারায় পরিবর্তন আসবে না, ততদিন অবধি হিট ফিল্মের সংখ্যাও ক্রমশ কমতে থাকবে।