দেহ ব্যবসা আমাদের দেশ ও সংস্কৃতির কাছে অপরাধ। পতিতালয় প্রকৃতপক্ষে বেআইনি, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে একটি শহরের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে এর কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ। গবেষণায় জানা গেছে ভারতে বেশ্যাবৃত্তি করবার জন্য আরব, জাপান, রাশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং অন্যান্য শহর, গ্রাম, রাজ্য, দেশ থেকে মহিলারা আসে। এমনকি ম্যাসেজ পার্লারের নাম করে দুটি বেশ্যালয় চালানোর জন্য ২০১৫ সালে দশজন থাইল্যাণ্ডীয় মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেহ ব্যবসা বর্তমানে একটা মুড়িমুড়কি ধরনে পরিণত হয়েছে। স্বল্প পোশাক, চড়া মেক আপ, আর ইচ্ছা থাকলেই এই পেশায় আসা যায় সহজে। বিশেষ করে ইন্টারনেটের যুগে সব কিছুই খুব দ্রুত গতিতে বয়ে চলছে এবং নিস্তব্ধে এগিয়ে চলছে। ‘পতিতালয়’ কন্সেপ্ট এখন প্রায় উধাও। হোটেলের বদ্ধ কামরা হোক বা নির্জন পরিবেশ সব কিছুই এখন দেহ ব্যবসার জন্য রমরমিয়ে বেড়ে উঠছে। পুলিশেরও সাধ্য নেই এই ধরণের মধুচক্রের হদিস পাওয়ার।
আজ আমরা তুলে ধরব কয়েকজন হাই প্রোফাইল অভিনেত্রীর নাম যারা অভিনয়ের পাশাপাশি দেহ ব্যবসা চালিয়েছেন কোন একসময় এবং কেউ কেউ পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছেন এবং এখনও কেউ কেউ এই ব্যবসা করে খাচ্ছেন। চলুন দেখে নিই তাঁদের এক নজরে।
আইশ আনসারি – পেইড সেক্স। অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে এই যৌনতা। তামিল নায়িকা ও আইটেম গার্ল আইশ ২০১১ সাল থেকে দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। যোধপুর থেকে গ্রেফতার হন যৌন পেশায় জড়়িত থাকার অভিযোগে।
শার্লিন চোপড়া- কেরিয়ারের শুরুর দিকে যখন মডেলিং করছেন শার্লিন, তখন টাকা নিয়ে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। ২০০২ সালে ভেন্দি মাবু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তেলুগু চলচ্চিত্র তার অভিষেক ঘটে। এছাড়াও তিনি বিগ বস রিয়ালিটি শোর একজন প্রতিযোগী ছিলেন। ২০১২ সালে, চোপড়া প্লেবয় পত্রিকার প্রচ্ছদ শিল্পী নির্বাচিন হন। মাঝে মধ্যেই নগ্ন ছবি পোস্ট করে বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি। এই অভিনেত্রীর দাবী, দেহ ব্যবসার সম্পর্কে কোনও মনের টান কিছু ছিল না। তাই আজ আর তাঁদের কাউকে তাঁর মনে নেই। তবে জীবনে তেমন কোন মনের মানুষ না থাকায়, পুরুষসঙ্গ ভালোই উপভোগ করেন শার্লিন। একইসঙ্গে এই পন্থাতেই টাকা উপার্জন করেন তিনি।
View this post on Instagram
পুনম পান্ডে- ২০১৩ সালে মুক্তি পায় বলিউড ফিল্ম ‘নাশা’। অমিত সাক্সেনার পরিচালনায় এই মুভিতে অভিষেক হয় পুনমের। এই ছবি ছাড়াও আরও কয়েকটি মুভিতে অভিনয় করেন পুনম। পাশাপাশি নগ্ন ফটো শ্যুটে মাহির পুনম। এই বিষ বছরেই বিয়ে করেন পুনম তাঁর ফটোগ্রাফারকে। স্বামীর সঙ্গে হানিমুনেও যান এবং সেখানে গিয়েও নগ্ন ফটোশ্যুট করায় প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির মহিলা শাখা। এমনই অভিযোগ ওঠে যে গোয়ার ছাপোলি ড্যামে ‘পর্ন ভিডিয়ো’ শ্যুট করেছেন পুনম। এরপরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
View this post on Instagram
শ্বেতা বাসু প্রসাদ- ‘মকড়়ি’ সিনেমায় অভিনয় করে সুনাম অর্জন করেছিলেন শ্বেতা। সূত্রের খবর, ইনিও দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বানজারা হিলসের পার্ক হোটেলে যখন হায়দরাবাদ পুলিশ রেড করে তখন মধুচক্রের সঙ্গে জড়়িত থাকার অভিযোগে শ্বেতাও গ্রেফতর হন।
View this post on Instagram
প্রিয়া শর্মা- জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সাবধান ইন্ডিয়া’-য় কাজ করতেন প্রিয়া শর্মা। এছাড়াও কয়েকটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন তিনি। ২০২০ র জানুয়ারির দিকে সুবার্বান আন্ধেরির একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকে এক নাবালিকা-সহ তিন মহিলা অভিনেত্রীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হয়েছেন ২৯ বছরের এক মহিলাও যিনি অভিনয় জগতের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এছাড়াও সেদিন গ্রেফতার করা হয় কাস্টিং ডিরেক্টর নবীন কুমার প্রেমলাল আর্যকে। প্রিয়া শর্মা যিনি এই সেক্স র্যাকেট পরিচালনা করেন।
অমৃতা ধাওনা – আরহান খান, যিনি ২০১৯ সালে কালারসে সম্প্রচারিত জনপ্রিয় রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান বিগ বসের ১৩তম আসরে একজন প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এই অভিনেতার প্রেমিকা অমৃতা ধাওনা যুক্ত ছিলেন দেহ ব্যবসার সঙ্গে। এই অমৃতা এখনও পর্যন্ত বলিউডে তিনটি মুভি করেছেন। ২০০৫ এর আনলিমিটেড নাশা, ২০০৭ এর পারভিন ববি ও ২০১৩ র ফ্যাশন। ২০২০ র জানুয়ারি মাসেই অমৃতাকে হাতেনাতে পাকড়াও করে মুম্বাই পুলিশের টিম। শুধু অমৃতাকে নয় এর পাশাপাশি আরেক মডেল রিচা সিং কেও গ্রেফতার করে এই টিম।
View this post on Instagram
যমুনা – কন্নড় অভিনেত্রী যমুনাও দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে খবর। ২০১১-তে দেহব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে যখন তাঁকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু পুলিস।
সায়রা বানু – এই সায়রা বানু দক্ষিণী ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী। দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ২০১০ সালে হায়দরাবাদে একটি পুলিশ রেইডে তাঁকে আটক করা হয়।