ফর্সা মেয়ে কালো সাজলে সমালোচনা হয়না, কৃষ্ণকলি প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শ্রুতি দাস
গায়ের রঙের জন্য বারবার ট্রোল হতে হচ্ছে স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘দেশের মাটি’-র অভিনেত্রী শ্রুতি দাস (Shruti Das)-কে। এবার তিনি আইনের দ্বারস্থ হলেন। অনলাইন অ্যাবিউজ-এর বিরুদ্ধে এদিন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন শ্রুতি।
সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে শ্রুতি বলেন, তাঁরা পাবলিক এন্টারটেইনার। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকেন মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য, অনুরাগীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য। কিন্তু এর অর্থ সহজলভ্য হয়ে যাওয়া নয়। শ্রুতি বলেন, অনেক দিন আগেই তাঁর আইনের দ্বারস্থ হওয়া উচিত ছিল। কারণ এটা সাইবার ক্রাইম এবং এই ধরনের ক্রাইমের শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন শ্রুতি। শ্রুতি জানিয়েছেন, তাঁর অভিযোগ পেয়ে কলকাতা পুলিশও সক্রিয় হয়েছেন।
নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, পায়েল দে (payel dey) বা রুকমা রায় (Rukma ray)-এর মতো অভিনেত্রীরা থাকতে শ্রুতিকে নায়িকা হিসাবে কাস্ট করা অর্থহীন। কিছুদিন আগেই উপমা নামে এক নেটনাগরিক বলেছিলেন রুকমার মতো সুন্দরী অভিনেত্রী থাকতে শ্রুতিকে অযথা প্রাধান্য দিয়ে ‘দেশের মাটি’ সিরিয়ালটিকে উচ্ছন্নে পাঠানো হচ্ছে। শ্রুতিও মজাদার ঢঙেই উপমার কথার উত্তর দিলেও তিনি বলেছেন, ‘দেশের মাটি’ সিরিয়ালের নির্মাতারা এবং চ্যানেল তাঁর আত্মীয় নন। ফলে এখানে তাঁর কিছু করণীয় নেই। তাঁরা চিত্রনাট্য অনুযায়ী কাজ করেন।
‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকে গায়ের রঙ কালো হওয়া সত্ত্বেও নায়িকা শ্যামার গুণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে যথেষ্ট সফল স্থানে রয়েছে ‘কৃষ্ণকলি’। শ্রুতিও মনে করেন, এই ধরনের ধারাবাহিক বানানো সমাজের পক্ষে খুব ভালো উদ্যোগ। তবে শ্রুতি বলেছেন, শ্যামার চরিত্রাভিনেত্রী তিয়াশা (Tiasa Roy) ফর্সা। কিন্তু চরিত্রের প্রয়োজনে তাঁকে মেকআপের সাহায্যে কালো করা হয়েছে। তাই তিয়াশা আক্রমণের শিকার হন না বলার পর শ্রুতি নিজেকে ‘কালো বস্তু’ বলেছেন। একজন মানুষ কতটা অপমানিত হলে তাঁর অন্তর থেকে নিজের প্রতি এই ধরনের কথা বেরিয়ে আসে তা শ্রুতির শব্দচয়নের ক্ষেত্রে স্পষ্ট।
শ্রুতি জানিয়েছেন, সম্প্রতি নেটিজেনদের একাংশ তাঁকে ব্ল্যাকবোর্ড বলে ডাকা শুরু করেছেন। অনেকে কটাক্ষ করে বলেছেন, স্বর্ণেন্দু (swarnendu samaddar)-এর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে কাজ পাচ্ছেন শ্রুতি। এমনকি শ্রুতির চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকে। শ্রুতি জানিয়েছেন, বারবার গায়ের রঙ নিয়ে ট্রোলড হতে হতে একজন মানুষ হিসাবে তিনিও আর সহ্য করতে পারছেন না। ফলে তিনি আইনি পথে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
2019 সাল থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন শ্রুতি। ‘ত্রিনয়ণী’ শুরু হওয়ার ছয় মাস পর স্বর্ণেন্দুর সঙ্গে শ্রুতির সম্পর্কের সূত্রপাত হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরুর দিন থেকেই বারবার গায়ের রঙ নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে শ্রুতিকে। এমনকি একদল নেটিজেন ‘দেশের মাটি’ -তে শ্রুতিকে সরিয়ে রুকমাকে নায়িকা করার দাবি জানিয়েছিলেন। ‘দেশের মাটি’ সিরিয়ালে নোয়ার ভূমিকায় শ্রুতির অভিনয় যথেষ্ট সুন্দর। অপরদিকে একই সিরিয়ালে মাম্পির ভূমিকায় অভিনয় করছেন রুকমা। তবে শ্রুতির ঘটনা সমাজ ও ইন্ডাস্ট্রির এক কদর্য সত্যকে আবারও সামনে এনে দিল যেখানে গায়ের রঙের উপর নির্ভর করে নায়িকা বাছা হয়।
View this post on Instagram