সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেক প্রতিভা ও লড়াইয়ের গল্প এসেছে জনসমক্ষে। অনেকেই আবার খুব কম সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সেনসেশন’ হয়ে উঠেছেন। এমনই একজন ‘স্মার্ট নন্দিনী’। নামটা সকলেরই কমবেশি শোনা। কালো টপ, জিন্স, গলায় ব্লুটুথ ইয়ারফোন- হাসিমুখে মেয়েটিকে খাবার পরিবেশন করতে সকলেই দেখেছেন। কেউ মোবাইল স্ক্রিনে দিদিকে দেখেছেন, কেউ আবার গিয়ে চেখে এসেছেন তার হোটেলের খাবার। কিন্তু এই মেয়েটির নেপথ্যে লড়াইয়ের গল্পটা সকলেরই অজানা। এবার নিজের জীবনের গল্প শোনাতে ‘দিদি নং-১’-এর মঞ্চে আসছেন নন্দিনী।
যদিও কয়েকবছর আগে নন্দিনী চরিত্রের লেশমাত্র ছিল না কোথাও। এমবিএ পাশ করে ব্যাঙ্গালুরুতে তখন ভালো কোম্পানিতে চাকুরীরত মমতা গঙ্গোপাধ্যায়। এদিকে বাড়িতে বাবা-মায়ের হোটেলের ব্যবসা। সবটা ঠিকই চলছিল। কিন্তু মাঝে বাঁধ সাধল করোনাকালীন সময়। লকডাউনে চরম আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হন চক্রধর গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে আবার গোঁদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়ায় স্ত্রী বিনার অসুস্থতা। একাহাতে সবটা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাকে। এই অবস্থায় চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসে মেয়ে। বাবার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে শুরু হয় একটা লড়াইয়ের।
এখন কলকাতার অফিসপাড়া নামে পরিচিত ডালহৌসির ফুটপাতে তাদের একটি ছোট্ট ভাতের হোটেল। বাবা সকালে বাজার যান, মা বাড়িতে সব্জি কেটে দেন। তারপর বাবা ও মেয়ে দুজনে মিলে শুরু হয় রান্না। অত্যন্ত কমদামে খাবার বিক্রি করেন রি নন্দিনী। ভেজ থালি ২০ টাকা, দু রকম ভাজা নিলে ৪০ টাকা, চারা পোনা মাছভাত ৭০ টাকা, রুই নিলে ৮০ টাকা, চিকেন নিলে ১০০ টাকা আর মটন ২০০ টাকা। এখন তিনি বিখ্যাত।
আর এই বিখ্যাত হওয়ার পিছনে যে লড়াই, সেই গল্প শোনাতে এবার ‘দিদি নং-১’-এর মঞ্চে দেখা যাবে ‘স্মার্ট নন্দিনী’ ওরফে মমতা গঙ্গোপাধ্যায়কে। আর এই খবর চাউর হতেই নানা কটাক্ষজনক মন্তব্যে ভরে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ বলেছেন, ‘আবার ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে কথা বলবে’; কেউ আবার লিখেছেন, ‘এই মেয়েটাকে দেখলেই বিরক্ত লাগে’। তবে নন্দিনীর ভাবধারা আলাদা। তিনি বলেছেন, ‘জানি আজকের এই ফেম যেমন এসেছে হঠাৎ, তেমন চলেও যাবে হঠাৎ। থেকে যাবে কেবল রোজের লড়াইটা। আমাদের এই ভাতের হোটেলতা। মাটি কামড়ে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।’