ইন্ডাস্ট্রিতে প্রেম-ব্রেকআপের গল্প নতুন নয়। এখনও পর্যন্ত বহু জুটির প্রেম ভেঙেছে আবার জীবনে নতুন প্রেম এসেছে। কারোর প্রেম গোপনে রয়ে গিয়েছে তো কারোর প্রেম খোলা খাতার মতন উন্মুক্ত। এখন যদি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির তারকা জুটির প্রেম ও ব্রেকআপ নিয়ে কথা বলা হয়, তাহলে এই মুহূর্তে প্রথম নাম আসে শুভশ্রী গাঙ্গুলী (Subhashree Ganguly) ও দেবের (Dev)। এই দুজনের রসায়ন প্রথম থেকে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। এখন দুজনের আলাদা আলাদা জগৎ, এরপরেও ঘুরে ফিরে এই জুটি সমালোচনার মুখে। কেন? কারণ একটাই, সেটা হল এই দুজন অভিনেতা মানুষের মনে অনেকটা জায়গা দখল করে আছে। নিত্যদিন চর্চায় থাকেন এই দুই তারকা, এতেই বেশ কিছু মানুষ এই জুটির প্রেম আর ব্রেকআপ নিয়ে আজও উৎসুক।
ভাঙ্গা গড়ার লড়াইয়ে জীবনের একটা সময় ভাঙন এলেও পরবর্তীতে সেটা নতুন মাটি পেয়ে নতুন ভাবে গড়ে ওঠে। ঠিক যেমনটা হয়েছে শুভশ্রী ও দেবের জীবনে। শুভশ্রীর আজ ভরা সংসার। স্বামী সন্তান আর কেরিয়ার নিয়ে শুভশ্রী এখন রীতিমত সফল একজন ব্যাক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি, দেবের জীবনেও এসেছে রুক্মিণী। বিয়ে না করলেও, রুক্মিণী ও নিজের মা বাবার সঙ্গে দিব্যি ঘর ও কেরিয়ার সামলাচ্ছেন তিনি। ফলে, দুজনের জীবন এখন এতটাই অটুট যে পিছনে ফিরে দেখার এর তাদের সময় নেই। তবে, কিছুদিন আগে একটি অ্যাওয়ার্ড শোতে দেব শুভশ্রী মুখোমুখি হয়েছিলেন। দেবের হাত থেকেই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছিলেন শুভশ্রী। সেদিনের ছবি ঘিরে আবারও পুরনো প্রেম, চর্চা সামনে আসে। এখনও কিছু মানুষ আছেন যারা দেব শুভশ্রীর অতীত জীবনের রসায়ন নিয়ে আগ্রহী।
বেশি কিছু বছর পিছনে ফিরে তাকালে দেব শুভশ্রীর রসায়নের টাটকা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ছোট পর্দায় একটা রিয়্যালিটি শো হত, নাম – ‘হ্যাপি প্যারেন্টস ডে’ (Happy Parents Day) , যেখানে শুভশ্রী ক্যামেরার সামনেই তার প্রাক্তন প্রেম নিয়ে মুখ খোলেন, তাও আবার নিজের মা বাবার সামনে। ওই শোতে দেবের নাম সরাসরি মুখে না আনলেও দেবের সঙ্গে ব্রেকআপ নিয়ে তিনি যে কতটা ডিপ্রেসড ছিলেন সবটাই বলেন অভিনেত্রী। তার কথায়, তিনি জীবনের চারটি বছর নষ্ট করেছেন। সেই সময়ের দিনগুলো শুভশ্রীর কাছে খুবই কঠিন ছিল বলে জানান তিনি। এমনকি, নিজের মা বাবার সামনে হাসি মুখে থাকলেও বাথরুমে গিয়ে চোখের জল ফেলে আসতেন। শুভশ্রীর কথায়, সবটা বাবা মাকে বলা যায় না, তাই হাসি মুখে থাকলেও চোখের জল লুকোতে হত।
দেবের সঙ্গে ২০০৯ এ ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়ে জুটি হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন শুভশ্রী। সেই ২০০৯ এ’পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ২০১১ তে ‘রোমিও’, ও শেষ ২০১২ তে ‘খোকাবাবু’। এরপর আর দুজনকে একসঙ্গে পর্দায় দেখা যায়নি। এই চারটে বছর ধরে দেবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে থাকলেও ২০১২ র পর থেকে তাদের আর একসঙ্গে দেখা যায়নি। এমনকি ‘ধূমকেতু’ বলে একটি ছবির শ্যুটিং করেও সেই ছবি এখনও মুক্তি পায়নি। শুভশ্রী তার কেরিয়ারের ওই চার বছরের প্রেম ও বিচ্ছেদের যন্ত্রণাকে বুকে করে বলেছিলেন, “দেখো আমার জীবনে কিন্তু ইনসিকিউরিটি নেই। কারণ আমার হারানোর কিছু নেই। আমার কিছুই নেই।” এই কথাগুলো অবশ্যই দেবের জন্য ছিল, কিন্তু ‘হ্যাপি প্যারেন্টস ডে’ (Happy Parents Day) শোতে তিনি বুদ্ধি করে দেবের নাম এড়িয়ে যান, শেষে অবশ্য এও বলেন যে তিনি ওই চার বছর পর ঘুরে দাড়ান। এমনকি তিনি সেই সময়েও একজন ভালো মা ও স্ত্রী হতে চান। অবশ্যই শুভশ্রীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। চ্যালেঞ্জ দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর সেই চ্যালেঞ্জের পরিচালক এখন তার জীবনে রাজ করছেন, পাশাপশি একজন ভালো মা হওয়ার তকমাও পেয়েছেন। উল্লেখ্য, খুব শীঘ্রই তিনি দ্বিতীয়বার মা হবেন। সম্প্রতি ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’-র জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন শুভশ্রী।