স্কুল খুললেই ভাগ্য নির্ধারণ রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষকের, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ছড়ালো বিভ্রান্তি
গরমের ছুটি শেষ হয়ে স্কুল খোলার দিন যত এগিয়ে আসছে, শিক্ষক শিক্ষিকাদের (Teachers) মধ্যে বিভ্রান্তিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা (SSC Recruitment Scam) নিয়ে মাস খানেক আগেই তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের টেট পাশ করা সর্বমোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কারা যোগ্য কারা অযোগ্য এ ব্যাপারে এসএসসি কর্তৃপক্ষ কোনো সুস্পষ্ট তালিকা দিতে না পারায় এই মামলায় ২০১৬ র গোটা প্যানেলটাকেই বাতিল করে দেওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। পালটা যোগ্যরা সুর চড়ালে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে যায় এসএসসি কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টে এই ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে এবং যোগ্য অযোগ্যদের একটি তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসএসসি কে।
কী নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট?
উল্লেখ্য, এই মামলায় আগামী শুনানি ১৬ জুলাই। ততদিন পর্যন্ত এই ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষকতা করতে পারবেন বলেই রায় দেওয়া হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে। এর মধ্যে যোগ্য অযোগ্যদের একটি সুস্পষ্ট তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসএসসিকে, যা জমা দিতে হবে ১৬ জুলাই। এদিকে এই মামলা চলাকালীন গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছিল রাজ্যের স্কুলগুলিতে। আগামী ৩ রা জুন ফের খুলছে স্কুল। এদিন থেকেই শিক্ষক শিক্ষিকারা ফের স্কুলে যোগ দিতে পারবেন। তবে একটি মুচলেকা দিয়ে তবেই ফের স্কুলে যোগ দিতে পারবেন এই শিক্ষক শিক্ষিকারা।
কী লিখতে হবে মুচলেকায়?
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ১৮ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা রয়েছে মুচলেকার। যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া রয়েছে, তাদের ৩ রা জুন স্কুলে যোগ দেওয়ার সময় দিতে হবে একটি মুচলেকা। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এ বিষয়ে এসএসসির তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও এই মুচলেকা কাদেরকে দেওয়া হবে, কী লেখা হবে মুচলেকায় সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি। এ বিষয়ে জেলা আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, শিক্ষা দফতর এখনো এ প্রসঙ্গে কোনো স্পষ্ট নির্দেশ দেয়নি। নির্দেশ পেলেই সেই মতো কাজ করা হবে।
মুচলেকা নিয়ে বিভ্রান্তি
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে, আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষকতা করতে পারবেন। কোনো রকম বেতনও কাটা হবে না তাদের। কিন্তু ১৬ জুলাই এর পর এসএসসির তালিকা অনুযায়ী, অযোগ্যদের থেকে নেওয়া হবে পদত্যাগ এবং সম্পূর্ণ কর্মজীবনের বেতনের টাকা দিতে হবে ফেরত। এমন পরিস্থিতিতে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে মুচলেকা দেওয়াটা এক রকম অপমানজনক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অন্যদিকে যারা অযোগ্য তারা একসময় চাকরি চলে যাবে জেনেও মুচলেকা দিতে রাজি হবে কিনা তা নিয়েও উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আপাতত শিক্ষা দফতরের তরফে সুস্পষ্ট নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা।