বাঙালির ড্রইংরুমের সন্ধ্যে সাতটার সময়টা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে স্টার জলসার পর্দায় শ্রীময়ী-জুন আন্টির দুষ্টু মিষ্টি দ্বন্দ্ব ও রসায়ন দেখতে দেখতে। সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় তার পিএইচডি পড়াশোনা নিয়ে সামান্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যদিও সেই ভুল ভেঙে ধারাবাহিকে জুন গুহর চরিত্রে রূপদানকারী জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী নিজেই জানান তিনি তার পিএইচডির অনলাইন থিসিস জমা দিয়েছেন। সেই সূত্রে আমাদের সংবাদ প্রতিনিধি কৌশিক পোল্ল্যে তারই স্বল্প সময়ের একটি সাক্ষাৎকার নেন।
শুটিং এর পাশাপাশি কিভাবে চলত পড়াশোনা, এর পিছনের গল্পটা যদি শেয়ার করেন
-দেখুন আমি তো পাঁচ বছর ধরে পিএইচডি করছি, এবার ‘শ্রীময়ী’ শুরু হয়েছে দেড় বছর সেক্ষেত্রে খানিকটা কাজ আমার আগেই করা ছিল। প্রথমত অনেকটা কাজই আগে করা ছিলো। আর গত দেড় বছরে মূলত আমি থিসিসটা লিখেছি। আমি একটু মাল্টিটাস্কার আর কি, বেসিক্যালি আমি এম.এ ও পাস করেছি শুটিং করতে করতে। শ্রীময়ী শুটিংয়ে আমাকে অনেক সময় বসে থাকতে হয়। সেই সময় আমি থিসিসের লেখাটা কমপ্লিট করেছি। আর মাঝে মাঝে সারা ওয়েস্টবেঙ্গল ঘুরেই আমাকে ফিল্ড ওয়ার্ক করতে হয়েছে তখন আমি লীনা দি-কে (লীনা গঙ্গোপাধ্যায়) বলে একদিন দুদিন একটু ম্যানেজ করেছি। আর সপ্তাহে আমাদের একদিন ছুটি থাকতো তো ওই দিন গুলোই আমি চেষ্টা করেছি ফিল্ড ওয়ার্ক গুলো রাখতে। আর মেকআপ রুমে আমাকে অনেকটা টাইম বসে থাকতে হয় ফলে সেই সময়টা অনেকটাই কাজে লাগিয়েছি, তো এভাবেই চেষ্টা করেছি মাল্টিটাস্কিং করতে।
পরবর্তী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
-এখন কোনো পরিকল্পনা নেই। এখন পিএইচডি আওয়ার্ডটা পাওয়ার জন্যই ওয়েট করছি, আর শ্রীময়ী টাই মন দিয়ে করছি। শ্রীময়ী শেষ হয়ে গেলে আমি ছবি, ওয়েব সিরিজ এসবের দিকে যাব। আমার নিজের একটা প্রোডাকশন হাউজ আছে সেটাও প্রায় বন্ধ শ্রীময়ীর জন্য। শ্রীময়ী শেষ হলে ওটা কন্টিনিউ করব।
জুন আন্টি হিসেবে দর্শকদের প্রতি প্রতিক্রিয়া কি?
-লোকে তো আমাকে গালি দেয়। দর্শক আমাকে এই মারে তো সেই মারে। ( একটু থেমে) কি বলব বলুন! দে লাভ টু হেট মি এটাই আমার বক্তব্য। একটা মজার সম্পর্ক আছে দর্শকের সাথে আমার। আমাকে গালিগালাজও করে আবার আমাকে না দেখতে পেলে কিরকম একটা করতে থাকে, সেটা আমি খুব ভালোবাসি। মানে দেখাও চাই আবার গালি দেওয়াও চাই এটা একটা খুব অদ্ভুত সম্পর্ক।
আপনাকে নিয়ে যে ট্রোল বা মিমস হয় সেগুলো তো মাঝেমধ্যে আপনিও শেয়ার করেন, সেগুলো দেখতে আপনার কেমন লাগে?
– খুবই ভালো লাগে। হেলদি মিম সব সময়ই বেশ মজার। কারণ দেখুন এরা তো আমাকে মানে ঊষসী চক্রবর্তীকে আর কিছু বলে না। এই ক্যারেক্টারটাই খুব একটা হাইপার ক্যারেক্টার যেটা আমি পোর্ট্রে করি, খানিকটা কমিক, খানিকটা ওভার দ্য টপ তো সেটা তো একটা মজার এবং অন্য রকম একটা ক্যারেক্টার তো ডেফিনেটলি মজা করার জন্য লোকে মিম তো করবেই। এর মধ্যে যে মজাটা আছে সেটা আমি খুব পছন্দ করি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন মিম বা ট্রোল এক ধরনের ফর্ম অফ এক্সপ্রেশন হয়ে গেছে। আপনারা তো জানেন আমাকে নিয়ে স্লোগানও হয়েছে মিছিলে, এগুলো আমার ভালোই লাগে, আমার মনে হয় যে ক্যারেক্টারটা একটা ইম্প্যাক্টফুল ক্যারেক্টার হয়ে উঠতে পেরেছে। আই কোয়াইট অ্যাপ্রিশিয়েট মিমস।
টিভির পর্দায় জুন আন্টিকে দেখে আত্মীয়-স্বজনরা কি প্রতিক্রিয়া দেন?
-তারা তো অনেকই আমার বন্ধুবান্ধব বা ঘনিষ্ঠজন যারা আছেন তাদেরকে লোকজন ডেকে ডেকে বলে, “ বাবা ও তো সাংঘাতিক মহিলা! ও তো ভীষণ ঝগড়া করে।” আমি রিয়েল লাইফে মোটেও এরকম ঝগড়ুটে নই। তো কাজেই আমার বন্ধুরা বলে ওটা তো অভিনয়। কিন্তু এই যে দর্শক আমার আমার সাথে জুন আন্টিকে এক করে দেয়, ভাবে আমি হয়তো পার্সোনাল লাইফেও এরকম সেটা মাঝে মাঝে যেমন মজার লাগে আবার অনেক সময় ভাবি দুটো তো আলাদা সেটা কি করে লোকে এক ভেবে ফেলে!
রিয়েল লাইফে জুন আন্টি ঠিক কেমন?
– আমি রিয়েল লাইফে খুবই শান্তশিষ্ট টাইপের ( মৃদু হেসে) খুবই হাসি খুশি, শান্তশিষ্ট, মানে জুনের মতো নই আর কি।
চারিদিকে তো কোভিড চলছে, এবারের পুজোর প্ল্যান কি?
– দেড় মাস আগে আমার বাবা চলে গিয়েছেন ফলে এবারের পুজোটা আমার বাড়িতে মন খারাপ নিয়েই কাটবে। আমি নরমালি পুজোর সময় বাইরে যাই, এবার তো কোভিডের জন্য কোথাও যাওয়াটাও সেভাবে রিস্কি। আর আমি একটা পার্সোনাল ট্রাজেডির মধ্যে দিয়েও যাচ্ছি তার ফলে খুব একটা পুজোতে কিছু প্ল্যান করতে পারব এরকমটা নয়।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
– হ্যাঁ আপনিও।