করোনা পরিস্থিতিতে বদলে গিয়েছে অনেক তারকাদের জীবন। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায় (Vikram Chatterjee)। একসময় হাতে সেভাবে কাজ ছিল না। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতেও তাঁর হাতে রয়েছে একের পর এক ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজ। রিলিজ করেছে ‘রূদ্রবীণার অভিশাপ’। সেখানে মূল চরিত্রে নজর কেড়েছেন বিক্রম। সম্প্রতি শেষ করেছেন অতনু ঘোষ (Atanu Ghosh) পরিচালিত ফিল্ম ‘শেষ পাতার’ শুটিং ও ডাবিং। শেষ করেছেন ‘মেমরি এক্স’-এর শুটিং।
অপরদিকে মধুমিতা সরকার (Madhumita Sarcar)-এর বিপরীতে ‘কুলের আচার’-এর মহরত হয়ে গেছে। এই ফিল্মের শুটিং শুরু হবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি। এছাড়াও দিতিপ্রিয়া (Ditipriya Roy)-এর সাথে একটি ফিল্মে অভিনয় করছেন বিক্রম। ইতিমধ্যেই কলকাতার বুকে হয়ে গিয়েছে এই ফিল্মের প্রথম শিডিউলের শুটিং। সিকিম বা নর্থ বেঙ্গল আউটডোর হওয়ার কথা চলছে। এর মধ্যে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ঠিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদী বিক্রম।
View this post on Instagram
তবে এই কয়েক দিনে পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছুই শিখেছেন বিক্রম। অতনু ঘোষের ফিল্ম মানে যেন এক অন্য জগৎ। এই ফিল্মে প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী (Prosenjit Chatterjee)-র সঙ্গে প্রথমবার স্ক্রিন শেয়ার করেছেন বিক্রম। বরাবর সুপারস্টার বলে জেনে আসা প্রসেনজিৎ ফ্লোরে অত্যন্ত হেল্পফুল। এমনকি অবসর সময়ে আড্ডাও দিতেন তিনি। সেই সময় উঠে আসত নব্বইয়ের দশকে তাঁর শুরুর দিনগুলির কথা। সমৃদ্ধ হয়েছেন বিক্রম। ‘মেমরি এক্স’ তাঁর প্রথম হিন্দি ফিল্ম। তথাগত (Tathagata)-র প্রজেক্ট বরাবর একটু অন্য ধরনের হয়। তবে এখানে উপরি পাওনা হল বিনয় পাঠক (Vinay Pathak)-এর সঙ্গে কাজ করা। কাজের বাইরেও তাঁর সাথে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন বিক্রম। বিনয় যথেষ্ট মজার মানুষ। বিক্রমের সঙ্গে মেসেজে কথা হয়। সম্প্রতি মুম্বই গেলেও বিনয়ের সঙ্গে কথা বলার পরেও তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে। ফলে দেখা হয়নি।
View this post on Instagram
বিক্রম মুম্বইয়েও কাজের চেষ্টা করছেন। তাঁর মতে, একটা সময় বলা হত, বাঙালি অভিনেতারা মুম্বইয়ে কাজ পান না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মুম্বইয়ে বাঙালি অভিনেতারা ভালোমত কাজ করছেন যা যথেষ্ট গর্বের বিষয়। ফলে তা নিয়ে অভিযোগের কিছুই নেই। কারণ অনেক বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তাঁদের কাজ।
View this post on Instagram
অপরদিকে যীশু (Jissu U Sengupta), পরমব্রত (Parambrata Chatterjee)-র মতো সিনিয়ররা মুম্বইয়ে কাজ করছেন বলে বিক্রমদের মতো অভিনেতারা কলকাতায় বেশি কাজ পাচ্ছেন। সব প্রজন্মকেই কাজ করতে হবে। বিক্রমের মতে, দর্শক যদি তাঁদের কাজ উৎসাহ নিয়ে দেখেন, তাহলে তাঁরাও হয়ত বাংলায় আরও বেশি কাজ করা নিয়ে ভাববেন। কারণ তাঁরাও দর্শকদের উপর নির্ভরশীল। তাঁরা যদি বিক্রমদের কাজের উপর ভরসা রাখেন, বাংলা ফিল্ম দেখেন, তাহলে প্রযোজকরাও বাংলা ফিল্মে আর্থিক বিনিয়োগ করবেন। তবে ভালো কন্টেন্ট পেলে দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে যাবেন বলে মত বিক্রমের। কারণ থিয়েট্রিকাল অভিজ্ঞতা বাড়িতে বসে সম্ভব নয়। ‘টনিক’, ‘বিনিসুতোয়’, ‘ম্যাজিক’ কন্টেন্ট-এর জন্য হাউসফুল হয়েছে।
তবে টেলিভিশনে এখনই ফিরছেন না বিক্রম। কারণ সিরিয়ালে অভিনয় করতে গেলে বছর দুয়েকের কমিটমেন্ট থাকে। ফলে সেই সময়টা বিক্রমের পক্ষে এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। সিরিয়ালে দুই বছর ধরে একটা চরিত্র নিয়ে ঘষামাজা চলে। কিন্তু অভিনেতা হিসাবে পরিণত হতে হলে বিক্রমকে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র করতে হবে। এই বিষয়ে বিক্রমের সঙ্গে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly)-র দীর্ঘ আলোচনা চলেছে। অভিনেতা হিসাবে নিজেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান বিক্রম।
ব্যক্তিগত জীবনে তাঁকে নিয়ে এত লেখালিখি হয়েছে, ফলে তা নিয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন বিক্রম। তিনি বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন। একা হোক বা বন্ধুদের সঙ্গে মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়েন। কয়েকদিন আগেই গোয়ায় ঘুরে এসেছেন। তবে পাহাড়ে একা না গেলে তাঁর মন খারাপ হয়। ব্যক্তিগত জীবনে নিজেকে বিক্রম খুব বোরিং ও ওয়ার্কোহলিক আখ্যায়িত করেন। তাঁর বন্ধু অঙ্কুশ (Ankush Hazra), ঐন্দ্রিলা (Oindrila Sen), সম্পূর্ণা (Shampurna)-রা তা জানেন। বিক্রম ফিল্ম নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসেন। বাকি সময় বেড়ানোর আলোচনা করতে পছন্দ করেন।
View this post on Instagram
অপরদিকে অঙ্কুশ ও ঐন্দ্রিলাকে তিনি প্রতি বছর বলতে শোনেন, দুই বছরের মধ্যেই বিয়ে করে ফেলবেন। মজা করে অঙ্কুশ তাঁদের বলেছেন, দশ বছর প্রেম করার পর তাঁরা যেন একে অপরকে বিয়ে না করেন। তাঁদের আবারও নতুন করে প্রেম করা দরকার।
View this post on Instagram