‘ত্রয়ী’ দিয়ে শুরু আর ‘খেলাঘর’ দিয়ে শেষ, এটাই ছিল এক খলনায়কের গল্প। যখন মাত্র ৮ বছর বয়স ছেলের তখন থেকেই অভিনয় জগতের কেরিয়ার শুরু। নাহ তিনি খলনায়ক হতে চাননি, বরং নায়ক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার চোখের চাউনি, শরীরের ও মুখের গড়ন তাকে নায়ক থেকে খলনায়কে পরিণত করে।
কথা হচ্ছে সৌমিত্র ব্যানার্জী প্রসঙ্গে। তিনি আশির দশকের গোড়ার দিকে প্রায় দেড়শো ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮২ সালে তিনি দেবশ্রী রায় এবং মিঠুন চক্রবর্তীর বিপরীতে ত্রয়ী সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। মুভিটি বক্স অফিসে সুপার হিট হয়েছিল।
লাল গোল মুখ, গোলাকার চোখ, ঝাঁকড়া চুল, চেহারায় লাবন্য কিন্তু মুখে রুক্ষতা নিয়ে বাংলা সিনেমা কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সৌমিত্র। কমার্শিয়াল ছবির দর্শকদের কাছে তিনি ছিলেন পরিচিত গুণ্ডা। মেয়েরা দেখলেই ভয় পেত, তার অদ্ভুত চাউনি ছিল লালসায় পরিপূর্ণ। সাথে ছিল পরিচালকদের দেওয়া অশ্লীল উক্তি। এই সব মিলিয়ে বাংলা সিনে জগতের পারফেক্ট ভিলেন ছিলেন তিনি।
বাস্তব জীবনে দারুন গান গাইতে পারতেন এবং নাচ। তারই লিপে “আরো কাছাকাছি আরো কাছে এস” আজও জনপ্রিয়। এখানেই শেষ নয়, কিছু ডায়লগ আছে সৌমিত্র ব্যানার্জীর ঠোঁটে যা আজও বিখ্যাত। এই যেমন, মঙ্গলদীপ ছবিতে – “যান বৌদি পুজো দিয়ে আসুন এখন তো আপনাদের ই দিন” অথবা হীরক জয়ন্তীতে – “ওকে আমি খড়ের গাদায় এনে ফেলবই” অথবা নবাব এ – “তুমি সাদা রঙের শাড়ি পড়ে আছ তাই শাড়িটা একটু ছাপিয়ে দিলাম।”
ব্যাক্তিগত জীবন অজানা, তবে পরকীয়া সম্পর্কে তিনি বহুবার জড়িয়েছিলেন এবং অত্যাধিক মদ্যপান করতেন। যার জন্য খুব কম বয়সে এই ভিলেন হাতছাড়া হয়। নব্বইয়ের দশকে বাংলা সিনেমায় ভিলেন মানেই যেই নামটা মনে আসে তিনি হলেন সেই সৌমিত্র যিনি মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মারা যান।