মেয়েরা হল মায়ের জাত। তাদের আলাদা করে কোনো ধর্ম হয় কি? সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেয়েরাই মাতৃত্বকে আহ্বান জানায়। কিন্তু এরপরেও ধর্ম ভেদে মেয়েদের কপালে জোট ধর্মীয় শিকল। এখন কথা হচ্ছে বলিউডের অন্যতম সুন্দরী অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী ওয়াহিদা রহমান প্রসঙ্গে। একসময় বলিউডের তাবড় তাবড় নায়িকাদের প্রথম সারির মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন ওয়াহিদা রহমান।
১৯৫৬ সাল থেকে বলিউডে কাজ করে চলেছেন ওয়াহিদা।আমলার কন্যা ওয়াহিদা ছোটবেলা থেকেই। এক ভারতনাট্যমের তালিম নিয়েছিলেন। অবশ্য ছোট বেলার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার, কিন্তু তার মায়ের শারীরিক অবনতি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় তাকে নৃত্যমুখী করে তোলে। তাঁর এই নৃত্য প্রতিভার জন্যই তিনি গুরু দত্তের নজরে আসেন। আর বিভিন্ন সিনেমায় তাঁর এই নৃত্য প্রতিভা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। যদি আপনি ‘ গাইড’ দেখে থাকেন তবে দেখবেন এই সিনেমায় ওয়াহিদা রোজি নামের একজন ডান্সারের চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনিই প্রথম বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে অভিনেত্রীরা লিড রোলের পাশাপাশি নাচ করতে পারেন।
সম্প্রতি একটি নাচের রিয়্যালিটি শোতে এসেছিলেন ওয়াহিদা, হেলেন, এবং আশা পারেখ। ওই শোতে এসেই পুরোনো স্মৃতি তুলে ধরলেন মাধুরী দীক্ষিতের কাছে এই কিংবদন্তি প্রবীণ অভিনেত্রী। তার কথায়, তিরুচেন্দুর মীনাক্ষী সুন্দরম পিল্লাই ছিলেন সেই সময় সেখানকার প্রথম সারির গুরুজি। তার কাছে নাচ শেখার ইচ্ছা ছিল ওয়াহিদার। কিন্তু, সেই সময় গুরুজি জানান যে তিনি মুসলিম। তিনি ভরতনাট্যমের অনেক মুদ্রা, নাচের অনেক অংশ করতে পারবেন না। তাই তিনি তাকে নাচ শেখাবেন না।
ওয়াহিদা জিদ ধরে বসেন। ওনার থেকেই নাচের প্রশিক্ষণ নেবেন। এমত অবস্থায় গুরুজি ওয়াহিদা ঠিকুজি কুষ্ঠি চেয়ে পাঠান। তার কাছে কুষ্ঠি না থাকায় জন্ম তারিখ সব দেন এবং গুরুজি তার সব কিছু গণনা করে আহ্লাদে আটখানা হয়ে যান। ওয়াহিদাকে ডেকে পাঠান। সেদিন তিনি বলেন যে ওয়াহিদাই তাঁর শেষ ভারত বিখ্যাত নাচের ছাত্রি হবেন। ব্যাস, নাচের প্রশিক্ষণ শুরু।
প্রসঙ্গত, ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়াৰ্ধে চিন্নায়া, পুন্নিয়া, ভাদিভেলু ও শেরনন্দম নামে চারজন প্ৰতিভাবান নৰ্তক ভাই অনেক অনুসন্ধান করে ‘দাসী আট্টম’ নামেও পরিচিত এই নৃত্যকলাকে উদ্ধার করে। সেগুলো জনপ্ৰিয় হয়ে ভরতনাট্যম নামে প্ৰসিদ্ধ হয়। ভরতনাট্যম সাধারণ নারীরা পরিবেশন করে যদিও পরম্পরাগত ভাবে এই নৃত্যের গুরু পুরুষ হয়।