জানুয়ারির শেষে ঝঞ্ঝাকে বিদায় জানিয়ে শীতের ঝোড়ো ইনিংস আবার শুরু হয়েছে। কথা ছিল বৃষ্টি পিছু হটবে সাথে তাপমাত্রাও বাড়তে শুরু করবে। কিন্তু শীতের মেজাজের জুড়ি মেলা ভার। হঠাৎ করে পারদপতন বাংলায়। শীতপ্রেমী বাঙালি তো বেজায় খুশি। বাগদেবীর আরাধনায় বৃষ্টির অস্থিরতা সহ্য করতে হয়নি বাংলাকে। বিশেষত দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার বেশ রৌদ্রজ্জ্বল ছিল। উত্তরবঙ্গে একাধিক পর্যটন স্থলে তুষারপাত হওয়াই ঠান্ডা রয়েছে প্রবল আর বরফ পড়ার আনন্দে মেতে উঠেছিলেন পর্যটকবৃন্দ। এদিকে ভারী বৃষ্টিবিপদ দেখেছে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলাগুলি।
হাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে আবার ছন্দে ফিরতে চলেছে শীত। রবিবার রাত থেকে ফের পারদ পতন বাংলায়। সোমবারও একধাক্কায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা নামতে পারে। বলা বাহুল্য, বাংলায় সদ্য আসা আসাময়িক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হরিয়ানা থেকে বিহার পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম অক্ষরেখা কাল বিকেলের পর শক্তি হারানোর ফলে আবহাওয়ার এমন আমূলপরিবর্তন। তবে এই খামখেয়ালি শীত যে কতদিন স্থায়ী হবে সেটাই একটা বিরাট প্রশ্ন।তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট করে বলতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা। তবে হাওয়া অফিসের আভাস অনুয়ারী শীতের সোহাগ বাংলা ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি অবধি পেতে পারে।
রবিবারের আবহাওয়া:
সারাটাদিন রাজ্যের রাজধানী শীতের চাদরে ঢেকে থাকবে। বাগদেবীর বিদায়ী দধিকর্মার খাওয়ার সাথে সাথে কেঁপে কেঁপেই সম্পূর্ণ করতে হবে। শনিবার যথাক্রমে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল প্রায় ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার আবার তাপমাত্রার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি কমে হয়েছে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় তিন ডিগ্রি কমে ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৪৮ ঘন্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও কমবে বলে জানিয়ে দিয়েছে মৌসুম ভবন। অতএব শীতের সকাল সাথে খেঁজুরের গুড় বাঙালি তথা সারা বাংলা বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করবে আরও কয়টা দিন।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষবার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে বরফ পড়েছিল দার্জিলিঙে। ১৫ বছর পর আবারও সাদা চিকচিকে বাঙালির স্বর্গ শহর। গ্লেনারিজ থেকে কেভেন্টার্স, ঘুম থেকে জোড়বাংলো, অথবা দার্জিলিং ম্যালের চারপাশ সাদা চাদরে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলেছে সাদা অমলিন বরফে। এমনকি গ্যাংটক, রালং, রাবাংলা, চিওয়াংভঞ্জং, ওখরে, হিল্লে, বার্সে সহ দক্ষিণ সিকিমের সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলিকেও একেবারে জমিয়ে দিয়েছে বরফ। এদিন গ্যাংটকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। করোনা ভয় পেছনে ফেলে বাঁধনহীন পাহাড়ি পর্যটকদের চূড়ান্ত উচ্ছ্বাস চোখে পড়বার মতন। কালিম্পং ও ডুয়ার্সও বাদ পড়েনি বরফের হাত থেকে। বরফ পড়েছে চটকপুর, ঘুম, সান্দাকফু, ফালুটেও। বাগদেবীর পুজোর দিনগুলিতে কুয়াশাছন্নতা দৃশ্যমানতায় এক বিরাট অস্বস্তি ফেলেছে।