Hoop Special

Tourism: অনেক হল দীঘা পুরী, একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন ছবির মতো সুন্দর এই সমুদ্রসৈকত থেকে

‘জলের সাথে আছে জলের গভীর পরিচয়,
সমুদ্র তাই ঐক্যবদ্ধ, পাহাড় ততো নয় ।
পাহাড় হলো একটা থেকে অন্যটা বেশ দূরে,
কিন্তু সাগর মহাসাগর বাঁধা একই সুরে ।’
সাগর, মহাসাগরের বন্ধন খুঁজতে আজ আমাদের গন্তব্য বাঁকিপুট। পাহাড়ে ঘোরাঘুরি তো অনেক হল, এবার একটু সমুদ্রের নীল জলরাশিতে পা না ডোবালেই চলছে না, তবে এই সমুদ্রের কথা মাথায় আসতেই মাথার মধ্যে ঘোরে দীঘা কিংবা পুরী। বাঙালি পর্যটক মানেই দীপুদা, মানে ওই দীঘা, পুরী, দার্জিলিং একবার হলেও সারা জীবনে বেড়াতে যাবে। কিন্তু আজকে আমাদের অফবিট ডেস্টিনেশন এর তালিকায় রয়েছে মেদিনীপুরের বাঁকিপুট।

এখন দীঘা, পুরীতে লোকজন একেবারে গিজগিজ করে। যদি একটুখানি শান্তির আশ্রয় খুঁজতে চান কিংবা বিয়ের পরে অল্প ছুটিতে দুজনে মিলে একটু নিরালায় সময় কাটাতে চান, তাহলে আপনার জন্য উপযুক্ত ডেস্টিনেশন বাঁকিপুট। একেবারে নির্জন বললে ভুল হতে পারে আপনি যে সময়টা যাবেন, আপনার সঙ্গী হতে পারে লাল কাঁকড়ার দল, দূরে নৌকো নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছে, কোনো মৎস্যজীবী। সমুদ্রের পাড়ে বসে শুধুই আকাশ আর সমুদ্রের চুম্বন দেখা ছাড়া আপনার আর কোন কাজ নেই।

যেকোনো দীঘা গামী ট্রেন থেকে কাঁথিতে নেবে পড়তে হবে। কাঁথি থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার পরেই আপনি পেয়ে যাবেন বাঁকিপুট। যেহেতু মোহনার কাছে অবস্থিত এই জায়গাটি তাই সবসময় আপনি সমুদ্রকে কাছে পাবেন না, কিন্তু জোয়ারের সময় সমুদ্র চলে আসবে একেবারে কাছাকাছি। দুদিনের ছুটিতে বাঁকিপুট থেকে কাছাকাছি ঘুরে আসতে পারেন বগুড়ান জলপাই গ্রাম থেকে। দরিয়াপুরের ৯৬ ফুট উঁচু বাতিঘরে যেতে ভুলবেন না যেন। বিস্তৃত সমুদ্রের জলরাশির অসাধারণ ভিউ পয়েন্ট আপনি এখান থেকেই লক্ষ্য করতে পারবেন।

বাঁকিপুটের আরেক আকর্ষণ কপালকুণ্ডলার মন্দির।বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর কিংবদন্তি উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’-র গল্প এর স্লট এখান থেকেই পেয়েছিলেন। এছাড়াও কাছাকাছি যেতে পারেন পেটুয়াঘাটের মনোরম সুন্দর দেশপ্রাণ ফিশিং হারবারে। যেখানে সমুদ্র নদীর মিলনে গোটা পরিবেশটি হয়ে উঠেছে বেশ মনোরম। রসুলপুর নদী মিশেছে বঙ্গোপসাগরে।

যদি একদিনের ছুটি পান, তাহলে বাঁকিপুটের সমুদ্রতট থেকে সূর্যাস্ত দেখে সেখানে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরে আসতে পারেন। কিন্তু যদি ২-৩ দিনের ছুটি পান, তাহলে এখান থেকে দীঘা চলে আসাই শ্রেয়। দীঘার দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। তাহলে আর চিন্তা কি? এবার এক দু দিনের ছুটিতে আর দীঘা, পুরী, দার্জিলিং যেতে হবে না। কাছাকাছি চলে আসুন অফবিট জায়গা বাঁকিপুটে। ফিরে আসার সময় মনের মানুষের হাত ধরে সমুদ্র তটে হাঁটতে হাঁটতে গুনগুন করে গেয়ে উঠতেই পারেন ‘ওগো সাগর বলাকা, আমি পেতাম যদি তোমার মত নিরুদ্দেশী পাখা।’

Related Articles