Forest Man: পৃথিবী সবুজ করার উদ্দেশ্যে লাগিয়েছেন অসংখ্য গাছ, চেনেন কি ভারতের এই ফরেস্ট ম্যানকে?
পৃথিবীর কোন জায়গা অতিরিক্ত বন্যায় ভেসে যাচ্ছে কোথাও আবার জল কষ্টে ভুগছে দেশের বিভিন্ন জায়গা। বর্তমানে এইরকম পরিস্থিতি ঘটছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কিন্তু কেন এমনটা ঘুরছে? এ প্রশ্ন অন্য কাউকে না যদি নিজেকে করেন তাহলে বুঝতে পারবেন এর উত্তর আমাদের প্রত্যেকেরই জানা কারণ আমরা নিজে হাতে ধ্বংস করে চলেছি প্রাকৃতিক সম্পদ। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য হল অনেক দূরে এগিয়ে যাওয়া উন্নতি শিখরে উঠে পড়া কিন্তু তার ফোনে যে মা প্রকৃতি ক্রমা গত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তার দিকে লক্ষ্য নেই পৃথিবীর মানবজাতির।
আমরা ভুলতে বসেছি, একটি গাছ একটি প্রাণ। কংক্রিটের জঙ্গল বানাতে গিয়ে ক্রমা কত ধ্বংস করে চলেছি বনাঞ্চল। যার ফলে মা প্রকৃতি প্রতি নিয়ত কালিমা লিপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু কথায় আছে, প্রকৃতির যা নেয়, তার দ্বিগুণ ফেরত দেয়। আমরা প্রতি বছর প্রকৃতির ওপরে যে অত্যাচার করে চলেছি এবার বোধ হয় মা প্রকৃতির আমাদের তাই ফেরত দিচ্ছেন। দিল্লির তাপমাত্রা পৌছে গেছে ৫২ ডিগ্রীতে, দুবাইতে বেশ কয়েকদিন আগেই আমরা দেখলাম ভয়ংকর বন্যা, মরু দেশে এমন বৃষ্টি হতে আগে হয়ত কেউ কোনদিন দেখেনি। কলকাতার তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ছুই ছুই। এপ্রিল- মে মাসে তীব্র তাপদেহে পুড়েছে ভারতবর্ষ।
তবে এই সবাই কিন্তু এমনটা হয় না মানুষের মধ্যেও ব্যতিক্রম থাকেন। আজকে ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে শোনাবো, এমন এক মানুষের কথা যিনি প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। তাকে বলা হয় ভারতের ফরেস্ট ম্যান? তিনি হলেন যাদব মোলাই পায়েং। প্রকৃতিকে ভালবেসে তিনি ৩০ বছর ধরে এক হাজারেরও বেশি একর জমি জুড়ে তৈরি করেছেন বনাঞ্চল। নিজের হাতে প্রত্যেকটা গাছ লাগিয়েছেন। অসমের ব্রহ্মপুত্র নদীর বালুচরে তার এই বনাঞ্চল পৃথিবীতে দিয়েছে বাড়তি অক্সিজেন।
তার এই বনাঞ্চলের নাম মোলাই কাঠনিবাড়ি। তারি অসাধারণ কাজকর্মের জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন পদ্মশ্রী। জিওগ্রাফিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া তরফ থেকে তাকে ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়ার শিরোপা দেওয়া হয়েছে। তার জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে তথ্যচিত্র।
কবে থেকে তিনি গাছ বসাতে শুরু করেন?
১৯৬৩ সালে অসমের জোরহাট জেলার কোকিলা মুখ গ্রামে আসামের মিসিং জনজাতির এক পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তিনি। আজ থেকে প্রায় ৪৪ বছর আগে এই বনভূমি তৈরী শুরু করেছিলেন অর্থাৎ তিনি বেশ অনেক বছর আগেই বুঝতে পেরেছিলেন যে পৃথিবীর বর্তমান পরিস্থিতি কি হবে, এই পরিস্থিতিতে গাছ লাগানো ঠিক কতটা প্রয়োজন।
দশ বছর বয়সে তিনি যে ব্রহ্মপুত্রের পার্শ্ববর্তী গ্রামে থাকতেন, সেখানে যখন ভূমিক্ষয় শুরু হয়। তারপর সেই জায়গা ছেড়ে তারা অন্য জায়গায় চলে যান, কিন্তু তার ওই পুরনো জায়গা তিনি কিছুতেই ভুলতে পারেননি। অতিরিক্ত ভূমিক্ষয় দেখে তার মনে হয়েছিল গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা, কিন্তু যখন সবাইকে বলেছিলেন, কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি, মাত্র কুড়িটা বাঁশ গাছের চারা নিয়েই তিনি প্রথম তার কাজ শুরু করেন। গাছ বসানোর পাশাপাশি তিনি যে অতিরিক্ত গাছ বসিয়ে বনের পশু পাখিকেও আশ্রয় করে দিচ্ছেন, তা নিঃসন্দেহে বলতে হয় তার এই কাজ করার জন্য তাকে স্যালুট জানাতে হয়।