whatsapp channel

Sridevi: ২৪ শে ফেব্রুয়ারি কি ঘটেছিল শ্রীদেবীর সাথে!

দেখতে দেখতে চার বছর কেটে গেল, শ্রীদেবী (Sridevi) নেই। এখনও তাঁর অনুরাগীদের কাছে 2018-র 24 শে ফেব্রুয়ারি এক অভিশপ্ত, অবিশ্বাস্য দিন। ভারতের প্রথম মহিলা সুপারস্টারের আকস্মিক মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। আকস্মিকের…

Avatar

Nilanjana Pande

দেখতে দেখতে চার বছর কেটে গেল, শ্রীদেবী (Sridevi) নেই। এখনও তাঁর অনুরাগীদের কাছে 2018-র 24 শে ফেব্রুয়ারি এক অভিশপ্ত, অবিশ্বাস্য দিন। ভারতের প্রথম মহিলা সুপারস্টারের আকস্মিক মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। আকস্মিকের পাশাপাশি এই মৃত্যু অত্যন্ত অস্বাভাবিক। মৃত্যুর চার দিন আগে 20 শে ফেব্রুয়ারি স্বামী বনি কাপুর (Boni Kapoor) ও কনিষ্ঠ কন্যা খুশি কাপুর (Khushi Kapoor)-এর সাথে দুবাইয়ের আল জজিরা আল হামরায় গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। সেখানে ছিল বনির ভাগ্নে মোহিত মারওয়া (Mohit Marwa)-র বিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় ইন্সটাগ্রামে বিভিন্ন ছবি শেয়ার করেছিলেন তিনি। এই বিয়েতে যেতে পারেননি তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা জাহ্নবী কাপুর (Janhvi Kapoor)। সেই সময় মুম্বইয়ে তাঁর ডেবিউ ফিল্ম ‘ধড়ক’-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

অনেকেই জানতেন না, শ্রীদেবী অপূর্ব সুন্দর ছবি আঁকতেন। সোনম কাপুর (Sonam Kapoor)-এর একটি ছবি এঁকেছিলেন তিনি। নীল রঙের গাউন পরা ওই ছবিটির অনুপ্রেরণা ছিল সোনমের ডেবিউ ফিল্ম ‘সাঁওয়ারিয়া’। দুবাইয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর শ্রীদেবীর ছবির প্রদর্শনী হওয়ার কথা ছিল। এই কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানের শেষে খুশি ও বনি মুম্বইয়ে ফিরে এলেও শ্রীদেবী থেকে গিয়েছিলেন দুবাইয়ের জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ারস হোটেলে। শোনা যায়, মুম্বইয়ে ফিরে আসার আগে বনির সাথে শ্রীদেবীর মনোমালিন্য হয়েছিল। এই কথা তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর হেয়ার স্টাইলিস্টকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওই হেয়ার স্টাইলিস্ট রাখি সাওয়ান্ত (Rakhi Sawant)-এর জন্যও কাজ করেন। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর তিনি রাখিকে বনি ও শ্রীদেবীর মনোমালিন্যের কথা জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, শ্রীদেবী খুব কাঁদছিলেন।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Pinkvilla (@pinkvilla)

কিন্তু 24 শে ফেব্রুয়ারি বনি আবারও দুবাইয়ে ফিরে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য মেটাতে একটি সারপ্রাইজ ভিজিট ও ডিনারের প্ল্যান করেছিলেন তিনি। কিন্তু বনি দুবাইয়ের হোটেলে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ পৌঁছান। তিনি শ্রীদেবীর রুম নং 2201-এর দরছায় নক করলেও শ্রীদেবী দরজা খোলেননি। অনেকক্ষণ চেষ্টার পর বনি হোটেলের কর্মীদের খবর দিলে তাঁরা এসে মাস্টার কি-র সাহায্যে দরজা খুলে হোটেলের বিলাসবহুল বাথরুমের বাথটাবে শ্রীদেবীর ভাসমান মৃতদেহ দেখতে পান।

তবে অপর একটি সূত্র বলছে, শ্রীদেবী বিয়ের অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর নিজেকে ওই হোটেলের রুমে ঘরবন্দি করে নিয়েছিলেন। সেখানে সারাদিন ওয়াইন পান করছিলেন তিনি। 24 শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হোটেলে পৌঁছে শ্রীদেবীর রুমে গিয়ে তাঁর সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছিলেন বনি। এরপর শ্রীদেবী স্নান করতে গেলে তিনি ওই রুমেই অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পরও শ্রীদেবী বাথরুম থেকে না বেরোনোর ফলে বনি তাঁর নাম ধরে ডাকাডাকি করেছিলেন। কোনো সাড়া না পায় তিনি রুম সার্ভিসে ফোন করলে হোটেলের কর্মীরা এসে বাথরুমের দরজা খুলে শ্রীদেবীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন। দ্রুত স্থানীয় পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শ্রীদেবীর দেহ পাঠানো হয় পোস্টমর্টেমের জন্য। অপরদিকে সঞ্জয় কাপুর (Sanjay Kapoor) ঘোষণা করেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর।

মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে জ্ঞান হারিয়েছিলেন জাহ্নবী। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর দুবাই পুলিশের তরফে ভারতীয় তারকার মৃতদেহ দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রাখা হয়েছিল। কারণ তদন্তে নেমে ক্রমশ ধরা পড়ছিল অসঙ্গতি। এমতাবস্থায় অর্জুন কাপুর (Arjun Kapoor) ও কাপুর পরিবারের কয়েকজন সদস্য দুবাইয়ে বনির কাছে পৌঁছান। এরপর শ্রীদেবীর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়। জানা যায়, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট নয়, 24 শে ফেব্রুয়ারি, রাত ন’টা নাগাদ বাথটাবের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ভারতের প্রথম মহিলা সুপারস্টারের। শ্রীদেবীর শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছিল। ফুসফুসে ভরে গিয়েছিল প্রচুর জল। যার ফলে একরকম নিশ্বাস নিতে না পেরেই প্রয়াত হয়েছিলেন শ্রীদেবী। 27 শে ফেব্রুয়ারি শ্রীদেবীর মৃত্যুর কেস ক্লোজ করে দেয় দুবাই পুলিশ। ওই রাতেই অনিল আম্বানী (Anil Ambani)-র পাঠানো প্রাইভেট জেটে মুম্বইয়ের মাটিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় শ্রীদেবীর পার্থিব শরীর। 28 শে ফেব্রুয়ারি তাঁকে দেওয়া হয় গান স্যালুট। এরপর ভিলে পার্লে সেবা সমাজ শ্মশানে শ্রীদেবীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। আয়েঙ্গার রীতি অনুসারে তাঁর অন্তিম ক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। 3 রা মার্চ রামেশ্বরমে শ্রীদেবীর অস্থি বিসর্জন করেন বনি, জাহ্নবী ও খুশি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Arjun Kapoor (@arjunkapoor)

কিন্তু পরে বাপ্পী লাহিড়ী (Bappi Lahiri) জানিয়েছিলে, ইদানিং শ্রীদেবী প্রায় ওয়াইন খেতেন না বললেই চলে। অর্ধেক দিন বিভিন্ন ধর্মীয় দেব- দেবীর পুজোর কারণে উপোস থাকতেন। এই কারণে বাপ্পীর বাড়িতে এসে নিজের প্রিয় রসগোল্লাও খেতে চাননি তিনি। তবে শ্রীদেবী মৃত্যুর মাধ্যমে মিলিয়ে দিয়ে গিয়েছেন জাহ্নবী, খুশি, অর্জুন ও অংশুলা (Ansula Kapoor)-কে। বনি তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর পর একরকম অন্তরালেই চলে গিয়েছিলেন। বাঁচার স্পৃহা ছিল না তাঁর। কিন্তু পরবর্তীকালে মানসিক অবসাদ কাটিয়ে আবারও বলিউডে ফিরেছেন তিনি। তবু আজও শ্রীদেবীর মৃত্যু রহস্য অধরাই রয়ে গিয়েছে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Ekta Sandhir (@ektainlove)

whatsapp logo