Amit Mondal: সাফল্যের পথে বাধা হয়নি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, তবু দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাংলার জনপ্রিয় ইউটিউবারের
মহাপ্রয়াণের পথে চলে যাওয়া কি হেরে যাওয়া নাকি এক নতুন জন্মের সূত্রপাত? অমিত মন্ডল (Amit Mondal)-এর আচমকা চলে যাওয়া বড্ড ভাবিয়ে তুলছে এই প্রশ্নকে। পেশায় ইউটিউবার ছিলেন বিশেষ রূপে সক্ষম অমিত। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই চালিয়ে একসময় ইউটিউবের অন্যতম কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু হিসাবটা ওলোট-পালোট করে দিল মঙ্গলবার বিকালের পথ দূর্ঘটনা।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মুন্সিরহাট এলাকায় ঘটে দূর্ঘটনাটি। অমিত তাঁর দুই বন্ধুর সাথে স্কুটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বকখালি থেকে নামখানার দিকে। মুন্সিরহাটের বাস স্টপের কাছে একটি মোটর ভ্যানকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি দোকানের পিলারে ধাক্কা মারে অমিতের স্কুটি। স্কুটি থেকে অমিত ও তাঁর দুই বন্ধু ছিটকে পড়েন। জানা গিয়েছে, রাস্তায় ছিটকে পড়ে থেঁতলে গিয়েছিল অমিতের মাথা। তাঁর বাকি দুই বন্ধুর শারীরিক অবস্থাও ছিল আশঙ্কাজনক। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার পুলিশ। অমিত ও তাঁর বন্ধুদের দ্রুত ভর্তি করা হয় নিকটবর্তী দ্বারিকনগর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয়েছিল কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে অমিত সহ তিনজনকেই স্থানান্তরিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে।
তবে মঙ্গলবার রাত থেকেই অমিতের শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হয়। ফলে তাঁকে রাত এগারোটার সময় নিয়ে আসা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বুধবার সকালে প্রয়াত হন অমিত। বেলা বাড়তেই অমিতের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তাঁর অনুরাগীরা। সোশ্যাল মিডিয়া ভরে যায় শোকবার্তায়।
View this post on Instagram
বর্তমানে অমিতের ইউটিউব সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা তিনশো সাত হাজার। ফ্রেজারগঞ্জের শিবপুর জংশনের বাসিন্দা অমিত শৈশব থেকেই হাঁটা-চলা করতে পারতেন না। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও নিজের চেষ্টায় শারীরিক অক্ষমতার সাথে লড়াই করেছিলেন অমিত। তাঁর মা-বাবা পেশায় সাফাইকর্মী। কলেজে ভর্তি হয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলেন অমিত। সেখানে কলেজের অনুষ্ঠানের ভিডিও, দৈনিক রোজনামচা, তাঁর মা-বাবা সংক্রান্ত পোস্ট শেয়ার করতেন তিনি। কিন্তু মাত্র ২২ বছর বয়সে জীবন খাতায় পড়ল যবনিকা। চলে গেলেন অমিত। তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর অনুরাগীরা।
View this post on Instagram