একাকীত্ব জীবনে ছন্দ ফেরাতে ৭২-এ ফের বিয়ের পিঁড়িতে শ্রীরামপুরের বৃদ্ধ

নানা মানুষের নানা কুমন্তব্যকে উপেক্ষা করে ৭২ বছর বয়সে ফের গাঁটছড়া বাঁধলেন শ্রীরামপুরের বড়বাগানের বাসিন্দা সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ। পেশায় কলেজ শিক্ষক সমরেন্দ্রবাবু বেশ কয়েক মাস আগে সংবাদপত্রে বিবাহের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই রিষড়ার বাসিন্দা ইরা রায়ের সঙ্গে ২৭শে জুলাই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন তিনি। পাশাপাশি সোমবার ফ্ল্যাটে সামাজিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন। তবে পুরুষ পুরোহিত দ্বারা নয়, মন্ত্র উচ্চারণ করে বিয়ে দিয়েছেন কবে মীনা রায়।

জানা গিয়েছে, ২২ বছর ধরে তিনি রিষড়া বিধানচন্দ্র কলেজে বাংলার অধ্যাপক ছিলেন। অবসর নিয়েছেন ২০০৮ সালে। এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় বেসরকারি বিএড কলেজের অধ্যক্ষ পদে আছেন। অনেকদিন আগেই স্ত্রী মারা গিয়েছেন এবং একমাত্র মেয়ে বিদেশে থাকে। ফলস্বরূপ একাকীত্বে দিনযাপন করতে হয় সমরেন্দ্রবাবুকে। যদিও তার এই সিদ্ধান্তে তিনি প্রচুর কুমন্তব্যের শিকার হয়েছেন, তবে অনেকে তার পরিস্থিতি বুঝে স্বাগতও জানাচ্ছেন।

এই বয়সে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বয়সের সাথে সাথে তিনি এখন সঙ্গীর অভাব বোধ করছেন। যদি ছাত্র-ছাত্রী বা পরিচিত লোকেরা তাকে রান্না করে দিতেন তবে সাম্প্রতিক লকডাউনের পরিস্থিতিতে খুবই সমস্যায় পড়েছেন। দুদিন তাকে না খেয়েই কাটাতে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি আপাতত সুস্থ সবল। তবে, ভবিষ্যতে অসুস্থ হলে অথবা পরিস্থিতি খারাপ হলে পাশে কেউ থাকলে সুবিধা হবে। এতোদিন চাকরি করেছি, আমার অবর্তমানে স্ত্রী আমার পেনশন পাবেন। ফলে, তার দিন ভালোভাবেই চলে যাবে।”

অন্যদিকে ৩৬ বছর বয়সী কনে ইরা রায়ের বাবা মারা গিয়েছেন। কলকাতার একটি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি, যদিও কয়েকবছর আগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে মা ও মেয়ের অভাব-অনটনের সংসার। এই বিষয়ে ইরা জানিয়েছেন, “ভেবেছিলাম, বিয়ে করবো না। পরে এক আত্মীয় কাগজে বিজ্ঞাপনের কথা জানান। সব দেখে মনে হল, সঠিক সুযোগ এসেছে। এমন শিক্ষিত, রুচিশীল, মানুষই চেয়েছিলাম। আমি খুশি।”

Leave a Comment