বাড়ির টবে বনসাই চাষ করুন সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে
ছাদে কিংবা ব্যালকনিতে সুন্দর করে সাজানোর জন্য চাষ করতে পারেন বনসাই। বনসাই এর ধারণা সাধারণত চীন দেশ থেকে এসেছে। বড় গাছকে ঘরের মধ্যেই রাখার জন্য ছোট করে রাখার চিন্তাভাবনা। তবে প্রকৃতিপ্রেমীরা বনসাই করার একদম বিরুদ্ধে। তাদের মতে, গাছকে এইভাবে আবদ্ধ করে রাখা ঠিক নয়। যদি সঠিক জায়গা পেত তাহলে এই গাছ ও হয়তো মহীরুহের আকার ধারণ করে অনেক বেশি অক্সিজেন দিতে পারতো।
নার্সারি থেকে বনসাইয়ের জন্য গাছ আপনাকে নির্বাচন করে আনতে হবে। এই গাছ বীজ থেকে হয় আবার কলম থেকেও নিজেরা করতে পারেন। তবে অনেকেই দুটো কান্ড নিয়ে টুইন ট্রাংক, তিনটি কারণে ট্রিপল ট্রাংক এবং একাধিক কাণ্ড নিয়ে মাল্টি ট্রাংক করে থাকেন।
বনসাই এর ক্ষেত্রে লক্ষ্য করতে হয়, যেন সরাসরি রোদে কোনভাবেই এই গাছের উপর না পড়ে তাই বারান্দা, ছাদ যেখানে হালকা আলো আসবে অথচ সূর্যের কড়া তাপ আসবে না সেই জায়গায় বনসাই রাখবেন।
কি গাছের জন্য বনসাই করবেন তার উপর নির্ভর করে টবের নির্বাচন। বড় আকারের গাছের বনসাই করার জন্য ১৫ ইঞ্চি মুখের টব নিতে পারেন। আর যদি ছোট গাছের বনসাই করতে চান তাহলে গোলাকার, ডিম্বাকার, ত্রিভুজাকার, আয়তাকার, বৃত্তাকার নানা ধরনের সুন্দর সুন্দর পোড়ামাটির টব বাছতে পারেন।
বনসাইয়ের মাটি তৈরি করার জন্য দোআঁশ মাটি, পাতা পচা সার এবং গোবর সার আর বালি নিতে হবে সমস্ত কিছুকে খুব ভালো করে মেশাতে হবে তার সঙ্গে ইটের গুঁড়ো এবং পোড়া ছাই মিশিয়ে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে প্রতি এক বছর অন্তর অন্তর যেন টবের মাটি পরিবর্তন করা হয়। আর ভালো করে সার দিয়ে দেওয়া হয়।
গাছের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য গাছের শাখার গায়ে তামার তার জড়িয়ে রাখতে পারেন। কান্ডের জন্য মোটা তার ব্যবহার করতে পারেন আর শাখার জন্য ব্যবহার করতে হবে সরু তার। বনসাই করার জন্য করতে পারেন বট, পাকুড়, হিজল, শিমুল, বট, অশ্বত্থ, ডালিম, আপেল, কমলা লেবু, জামরুল।
বনসাই যেখানে করবেন সেই পাত্র সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনোভাবেই পোকামাকড়ের উপদ্রব না হয়। মাঝেমধ্যে গাছের গোড়ায় সর্ষের খোলপচা তরল সার দিতে হবে। তাছাড়া কেঁচো সার দিতে পারে। গাছ যেহেতু সরাসরি রোদে রাখা যায়না, তাই খুব বেশি জলের প্রয়োজন হয়না, মাটির উপরের ভাগ শুকিয়ে গেলে তবেই এর মধ্যে জল দিন।