Hoop PlusTollywood

Aparajita Adhya: টেলিভিশনে কাজ করেই সন্তুষ্ট ছিলেন বাংলা ধারাবাহিকের ‘স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী’ অপরাজিতা

অপরাজিতা আঢ‍্য (Aparajita Adhya) টলিউডের অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম যিনি ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তনের সাক্ষী। একসময় বাংলা সিরিয়ালের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে এলেও অপরাজিতা নিজেকে ‘স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী’ বলতেই পছন্দ করেন। কারণ সেই সময় দূরদর্শনে সত্যিই ছিল এক সৃষ্টিশীল যুগ। অপরাজিতার পঁচিশ বছরের কেরিয়ারের উনিশ বছর কেটেছে ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিসাবে।

অকপট হয়েছিলেন অপরাজিতা। একসময় তিনি বলেছিলেন, ইন্ডাস্ট্রির এক নামী নায়কের কারণে বড় পর্দা থেকে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সময় বদলে গিয়েছে। বর্তমানে কন্টেন্ট ভিত্তিক ফিল্মের অন্যতম মুখ অপরাজিতা। এর আগে মৈনাক ভৌমিক (Mainak Bhowmik) পরিচালিত ফিল্ম ‘চিনি’-তে অপরাজিতার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন সবাই। মৈনাকের পরবর্তী ফিল্ম ‘একান্নবর্তী’-তে মলাট চরিত্রে রয়েছেন অপরাজিতা। মৈনাকের সঙ্গে চতুর্থবার জুটি বেঁধে উচ্ছ্বসিত অপরাজিতা। মৈনাক যখন ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ ফিল্মটি পরিচালনা করছিলেন, তখন একদিন অপরাজিতাকে রিপড জিনস ও টি-শার্ট পরে আস্তে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, অপরাজিতা এরকম পোশাক পরেন! অপরাজিতা বলেছিলেন, তাঁর দর্শক তাঁকে এই পোশাকে পছন্দ করবেন না বলেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি কম দিলেও এই ধরনের পোশাক পরতে পছন্দ করেন। ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’, ‘জেনারেশন আমি’, ‘চিনি’ সবেতেই নজর কাড়ার পর অপরাজিতার সঙ্কোচ ছিল মৈনাকের সঙ্গে আরও একটি ফিল্ম করার ব্যাপারে।

তার উপর সেই সময় অপরাজিতার পরিবারের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝড়। করোনা অতিমারীর সময় সেটি। মারা গিয়েছেন তাঁর শ্বশুরমশাই ও পরিবারের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সদস্য। অপরাজিতাও তখন ব্যস্ত করোনা আক্রান্ত মানুষদের হাসপাতালে ভর্তি করা ও কমিউনিটি কিচেন নিয়ে। মৈনাককে বলেছিলেন, তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে নিতে। কিন্তু মৈনাক রাজি ছিলেন না। তিনি অপেক্ষা করেছিলেন। হয়নি লুক সেট, মহরত শট। সরাসরি শুটিংয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন অপরাজিতা। তবে অপরাজিতা এই চরিত্রকে ‘চিনি’-র মিষ্টি থেকে আলাদা করে দিয়েছেন। ‘একান্নবর্তী’-তে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করছেন সৌরসেনী মিত্র (Souraseni Mitra), অলকানন্দা রায় (Alakananda Ray) প্রমুখ।

তেইশ বছর বয়স থেকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন অপরাজিতা। প্রতিবার নিজেকে ভেঙে-চুরে তৈরি করেন তিনি। ফলে তাঁর প্রতিটি চরিত্র একে অপরের থেকে অনেকটাই আলাদা। তবে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে চান না তিনি। তবে বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দাতেও সমান তালে অভিনয় করতে চান অপরাজিতা। তাঁর মা হলে গিয়ে ফিল্ম দেখতে পারেন না। বালুরঘাট, মেদিনীপুরে অনুষ্ঠান করতে গেলে সেখানকার মানুষরা বলেন, অপরাজিতার সিরিয়াল তাঁরা প্রোজেক্টরে চালিয়ে দেখেন। অপরাজিতা যে সময় টেলিভিশনে কাজ করতেন, সেই সময় ঋতুপর্ণ ঘোষ (Rituparno Ghosh), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (,Koushik Ganguly), অতনু ঘোষ (Atanu Ghosh), অঞ্জন দত্ত (Anjan Dutta)-রাও টেলিভিশনে কাজ করতেঅঁ। বাংলা ফিল্ম মানেই তখন মারপিট ও ঝাউবনে নাচ। ফলে অপরাজিতার পছন্দ ছিল ছোট পর্দা। কিন্তু এখন ‘বেলাশেষে’-র হাত ধরে বদলেছে ট্রেন্ড। এই মুহূর্তে টিভির অভিনয় হয়ে গেছে চড়া দাখের।

অপরাজিতার হাতে এই মুহূর্তে রয়েছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shibaprashad Mukherjee) ও নন্দিতা রায় (Nandita Ray) পরিচালিত ফিল্ম ‘বেলাশুরু’, পাভেল (Pavel)-এর ‘কলকাতা চলন্তিকা’, ‘মন খারাপ’, প্রেমেন্দুবিকাশ চাকী (Premendubikash Chaki)-র ‘লাভ ম্যারেজ’। পাভেলের ‘কলকাতা চলন্তিকা’-য় চরিত্রটি বিবাহিত না হলেও মাতৃত্ব রয়েছে।

তবে অতিমারী প্রথম পর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে পেরেছেন অপরাজিতা। চব্বিশ বছরের দাম্পত্যে এই প্রথম তিনি এতদিন ছুটি পেয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে কাটিয়েছেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তাঁকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হতো। গ্রাস করেছিল দুশ্চিন্তা। কিন্তু অনুরাগীদের ভালোবাসা তাঁকে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে শুটিং ফ্লোরে।

Related Articles