হুবহু মানুষের মতো দেখতে পাথরে ভরা এই রহস্যময় দ্বীপ
দক্ষিণ আমেরিকার চিলি উপকূল থেকে প্রায় ২৫০০ মাইল পশ্চিমে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে রয়েছে অনেকগুলো ছোট ছোট দ্বীপ। পলিনেশিয়ার পূর্বদিকে অবস্থিত দ্বীপগুলোর সুদূরতম দ্বীপটির নাম ‘ইস্টার দ্বীপ’। আয়তনে ১৬০ বর্গ কিলোমিটারের এই দ্বীপটিতে রয়েছেন ১৫০০ জন মানুষ। এই দ্বীপটি মূলত তৈরি হয়েছে আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে। দ্বীপ জুড়ে আছে ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্টের আবহাওয়া। আবহাওয়াও বেশ ভালো, মাঝে মাঝে বেশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়। তিনটি আগ্নেয়গিরি রয়েছে রানো রারাকু, ম্যাঙ্গাটেরেভাকা ও কাটিকি।
এ দ্বীপের সবচেয়ে বড় রহস্য হলো আগ্নেয়গিরি থেকে প্রাপ্ত আগ্নেয় শিলা। যা দিয়ে তৈরি হয়েছে এখানে হাজারো হাজারো মনুষ্য আকৃতির মূর্তি। সমুদ্রের তীর বরাবরেই মূর্তিগুলো অতন্দ্র প্রহরীর মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এগুলো কিভাবে তৈরি হলো? আর এগুলি কারা! এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এই দ্বীপে বারংবার ছুটে গেছেন অভিযাত্রীদের দল। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষায় এই দ্বীপ হলো ‘তে পিতো ওতে হনুয়া’। এর অর্থ বিশ্বের নাভিমূল। তবে গোটা বিশ্বের কাছে এটি ‘ইস্টার আইল্যান্ড’ নামে পরিচিত।
এই নামকরণ হয়েছিল অনেক দিন আগে ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে অ্যাডমিরাল জাকব রোগেভিনের নেতৃত্বে একদল ইউরোপীয় অভিযাত্রী নিয়ে একটি জাহাজ এখানে এসে পৌঁছয়। আর সেদিন ছিল ‘ইস্টার ডে’। সেই জন্যই এই দ্বীপের নাম হয় ‘ইস্টার আইল্যান্ড’। এ দ্বীপের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে পাথরের তৈরি নানান রকমের মূর্তি। এগুলোকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানান রকম কাল্পনিক গল্প। কিন্তু এই মূর্তি গুলি কিভাবে তৈরি হলো সেই নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো রহস্য রয়েছে। আর এই রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়নি।
প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক থর হেয়ারডাল ১৯৫৬ সালে এখানে এসে উপস্থিত হয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে দেখতে থাকেন গোটা দ্বীপ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বেশ হাজারখানেক মূর্তি এইভাবে পড়ে রয়েছে এগুলোর একেকটির উচ্চতা ১ মিটার – ২১ মিটার পর্যন্ত। এদের মধ্যে কিছু কিছু ভেঙে গেছে, কিছু কিছু আবার গোটাও রয়েছে। বর্তমানে এই দ্বীপটিতে তেমন সবুজের সমারোহ দেখা যায় না। তবে একসময় এখানে ঘন জঙ্গল ছিল। বারবার অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আগুন লেগে পুরো জঙ্গল পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। এই মুহূর্তে গুলি কেন তৈরি করা হয়েছে তার কোন সন্ধান না পাওয়া গেলেও মূর্তি তৈরি করতে যে উপাদান গুলি লাগে সেই কিছু উপাদানের হদিশ পাওয়া গেছে।