‘দিদি নং 1’-এ এসে ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ঊষসী রায় (Ushasi Ray)। ইতিমধ্যেই হইচই-এর নতুন ওয়েব সিরিজ ‘সুন্দরবনের বিদ্যাসাগর’-এর শুট করে ফেলেছেন। চারটি ওয়েব সিরিজে চারটি চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। একটার সঙ্গে আরেকটার মিল নেই। পার্বতী, বৃন্দা, মুমতাজ, ইমন চারটি চরিত্র চার রকমের। তবে পার্বতী অত্যন্ত জোরালো চরিত্র। ফলে এই চরিত্রটি শুনেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন ঊষসী।
পার্বতী প্রতিবাদী। সে কুমিরখালি গ্রামের বিধবা পল্লীর মাথাদের মুখোশ খুলে আসল চেহারা দেখিয়ে দিতে চায়। সত্যের জন্য লড়াই করে। তবে এর বেশি কিছু বলতে নারাজ ঊষসী। তাঁর মতে, বাকিটা বলবে ‘সুন্দরবনের বিদ্যাসাগর’। ডিসেম্বরের ঠান্ডায় সুন্দরবনের গ্রামে থেকে টানা শুট করেছেন তাঁরা। তবে কাজটি যথেষ্ট উপভোগ করেছেন ঊষসী। তবে পার্বতীর চরিত্রের জন্য নিজেকে ঘষামাজা না করে তিনি জোর দিয়েছেন অভিনয়ে যা দর্শকদের মনে প্রভাব বিস্তার করে। শুটের সময় অভিনয় করতে গিয়ে যে অনুভূতি আসে তাই চরিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন ঊষসী। তবে চরিত্রটিকে বুঝতে সাহায্য করেছেন পরিচালক কোরক মুর্মু ও চিত্রনাট্যকার অর্কদীপ নাথ।
View this post on Instagram
চিত্রনাট্য অনুযায়ী, কুমিরখালি গ্রামের বিধবা পল্লীর বাসিন্দারা বিধবা হলেও তাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকেন। সাদা থান পরলেও তাঁরা উপার্জন করেন।ওয়েব সিরিজের ট্রেলারে দেখা যাবে, ঊষসীর হাতে ক্যামেরা ফোন। তা দিয়ে ছবি তুলছেন তিনি। ওয়েব সিরিজে দেখানো হবে বিধবা পল্লীর নানা সমস্যা, গ্রামের মাথাদের প্রলোভন, অন্যায়। চরিত্র, গল্প অন্য ধারার হলেও যথেষ্ট সমসাময়িক। ফলে ঊষসীকে পার্বতী হয়ে উঠতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি।
ঊষসী মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নারী সব পারলেও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো কেউ যদি তাঁদের পাশে দাঁড়ান, বন্ধু হন তাতে ক্ষতি নেই! কারণ পার্বতীর জীবনে এমন কিছু নেতিবাচক ঘটনা রয়েছে রয়েছে যার প্রভাব তার মনে রয়েছে। তাই বিদ্যাসাগরের পাশে দাঁড়ানোকে সে সহজ ভাবে নিতে পারছে না।
View this post on Instagram
ঋদ্ধি (Ridhdhi Sen) ঊষসীর শৈশবের বন্ধু। তাঁরা একসঙ্গে ‘স্বপ্নসন্ধানী’ নাট্য দলের ‘ভালো রাক্ষস’ নাটকে অভিনয় করতেন। অভিনেতা ঋদ্ধির পাশাপাশি মানুষ হিসাবেও তিনি যথেষ্ট সহযোগিতা করেন বলে জানালেন ঊষসী। এছাড়াও ছিলেন ‘মন্দার’ সিরিজের অভিনেতারা। ঊষসী ও রূপাঞ্জনা (Rupanjana Mitra) ছাড়া সবাই ছিলেন মঞ্চাভিনেতা। ফলে ঊষসীর মনে হত, এখুনি থার্ড বেল পড়বে ও তাঁরা মঞ্চে গিয়ে অভিনয় শুরু করবেন।
ঊষসীর মতে, নারীজীবন সমস্যায় জর্জরিত। ঈশ্বর বোধহয় যন্ত্রণা, কটাক্ষ সহ্য করতেই নারীকে সৃষ্টি করেছেন। সবসময়ই কিছু না কিছু বিষয়ে তাঁকে সমাজের কটাক্ষ সহ্য করতে হলেও বিধবা নারী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আমলের তুলনায় বর্তমানে অনেকটাই ভালো আছেন। বিধবা হওয়ার পর অনেক শ্বশুরবাড়ি যেমন দেখে না, তেমনই অনেকে আবার মেয়ের সম্মান দিয়ে বিধবা নারীকে বিয়ে দেন। ভালো-মন্দ আগেও ছিল এবং চিরকাল থাকবে।