মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)-কে বিজেপি যোগদান ও সারদা কেলেঙ্কারির পর বহু মানুষ পছন্দ করেন না। কিন্তু একসময় কলকাতা থেকে মুম্বই গিয়ে বলিউডে পায়ের মাটি শক্ত করার জন্য মিঠুনের লড়াই অনস্বীকার্য। সেই সময় স্বয়ং জিতেন্দ্র (Jeetendra) বলেছিলেন, মিঠুন নায়ক হতে পারলে তিনি অভিনয় ছেড়ে দেবেন। মিঠুন নায়ক হয়েছেন, পেয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি। কিন্তু জিতেন্দ্র তাঁর ভুল বুঝতে পারলেও অভিনয় ছাড়েননি। তবে কেরিয়ার সংক্রান্ত লড়াইয়ের প্রভাব পড়েছিল মিঠুনের ব্যক্তিগত জীবনেও।
সেই সময় সবেমাত্র বলিউডে এসেছেন মিঠুন। ‘মৃগয়া’ পেয়েছে জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু মিঠুনের লড়াই জারি রয়েছে। পরিচালকদের ভয় ছিল, মিঠুনকে ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা হয়তো প্রচুর টাকা নেবেন। অনেকে মনে করতেন, ‘মৃগয়া’-য় মিঠুন যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সেই ধরনের ডি গ্ল্যাম চরিত্র ছাড়া তিনি মানানসই নন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মিঠুনের হাতে কাজ ছিল না। অডিশন দিয়েও ব্যর্থ হচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় মুম্বইয়ে ঘর ভাড়া করে থাকার পয়সা ছিল না তাঁর কাছে। ফলে এক প্রযোজকের দয়ায় তাঁর অফিসের সামনের বেঞ্চে রাতটুকু ঘুমাতেন মিঠুন। দিনের বেলা কাটত স্টুডিওয় অডিশন দিয়ে। এমতাবস্থায় মিঠুনের জীবনে আসেন হেলেনা লিউক (Helena Luke)। সুন্দরী হেলেনা তখন বলিউডে ডেবিউ করেছেন। পাশাপাশি মডেল হিসাবেও তিনি সফল। নৃত্যেও সমান পারদর্শী। ধনী পরিবারের মেয়ে ছিলেন হেলেনা। কিন্তু তাঁর পছন্দ হল সুঠাম চেহারার মিঠুনকে।
View this post on Instagram
হেলেনা যখন বলিউডে অভিনয় করছেন, মিঠুন তখন স্ট্রাগলার। মিঠুন হেলেনাকে পছন্দ করলেও কোনোদিন ভাবেননি বিয়ে করবেন। হেলেনা একরকম নিজেই বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মিঠুন বলেছিলেন তাঁর দৈন্য ভরা জীবনের কথা। হেলেনা সব জেনে-শুনেই বিয়ে করেন মিঠুনকে। 1979 সালে রীতিমত অনুষ্ঠান করেই এই বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর ঘনায় অশান্তির মেঘ। মিঠুন শুধুমাত্র হেলেনার জন্য ছিলেন অ্যাডভেঞ্চার। ক্রমশ হেলেনার চাহিদা বাড়তে থাকে। মিঠুন তখন সবেমাত্র ফিল্মে অভিনয় করতে শুরু করেছেন। তাঁর পক্ষে হেলেনার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব ছিল না। অপরদিকে হেলেনা ক্রমশ পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। জাভেদ খান (Javed khan) নামে এক অভিনেতার সাথে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। মিঠুন তা মানতে পারেননি। ফলে হেলেনার সাথে বিয়ের চার মাসের মাথায় তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর একাধিক সম্পর্কের ফলে অচিরেই হেলেনা বলিউড থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন।
তাঁর হাতে কমতে থাকে কাজের সংখ্যাও। বিবাহ বিচ্ছেদের পর একাধিক বার হেলেনা মিঠুনের কাঁধেই সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন। এমনকি তিনি বলেছেন মিঠুনের সাথে যোগিতা বালি (Yogita Bali)-র সম্পর্কের কারণে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীকালে নিউ ইয়র্ক চলে যান হেলেনা। সেখানে অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। নিউ ইয়র্কে আবারও নতুন করে সংসার পেতেছেন হেলেনা। বর্তমানে তাঁর নাতি-নাতনিও রয়েছে।