গত মঙ্গলবার থেকে হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালের নিউরো-আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। চিকিৎসকদের একটি টিম কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছেন ঐন্দ্রিলাকে। শনিবার তাঁর ট্র্যাকিওস্টমি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে কমানো হচ্ছে ভেন্টিলেশনের মাত্রা। বর্তমানে সি প্যাপে রাখা হয়েছে ঐন্দ্রিলাকে। চিকিৎসায় যথেষ্ট সাড়া দিচ্ছেন তিনি।
ঐন্দ্রিলার শারীরিক সংক্রমণের মাত্রা বর্তমানে অনেকটাই কম। কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। ঐন্দ্রিলা এই মুহূর্তে কোমায় না থাকলেও ঘুমের ওষুধের প্রভাবে তাঁর আচ্ছন্ন ভাব রয়েছে। রক্তচাপ ও পালস রেট স্থিতিশীল। বাঁদিকের অসাড় ভাব কেটে গিয়েছে। রবিবার রাতে বাঁদিক নাড়াতে পেরেছেন ঐন্দ্রিলা। মাঝে মাঝেই চোখ খুলছেন তিনি। তবে বর্তমানে ভেন্টিলেশন থেকে বের না করা অবধি চিকিৎসকরা তাঁকে বিপন্মুক্ত বলতে রাজি নন। ধীরে ধীরে ঐন্দ্রিলার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
মঙ্গলবার ভর্তি করা হয়েছিল ঐন্দ্রিলাকে। তাঁর মা শিখা শর্মা (Shikha Sharma) জানিয়েছেন, ওই দিন হঠাৎই ঐন্দ্রিলা বলেন, তিনি ডান হাত নাড়তে পারছেন না। তাঁর মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছিল। শিখা দেবী মেয়েকে মাথার যন্ত্রণার ওষুধ দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ঐন্দ্রিলার বমি হতে শুরু করে। সারা শরীর অসাড় হয়ে যায়। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে এমআরআই করে জানা যায়, ঐন্দ্রিলার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে তাঁর। দ্রুত তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের আটচল্লিশ ঘন্টা কাটলে ধীরে ধীরে কোমা থেকে বেরিয়ে আসেন ঐন্দ্রিলা। প্রথমে বাঁ কাঁধ ও বাঁ হাতের আঙুল নাড়িয়েছিলেন তিনি যা চিকিৎসকদের কাছে যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল।
ডঃ নিলয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, চোটের কারণে ঐন্দ্রিলার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে তাঁর মা শিখা দেবীর বক্তব্য, ঐন্দ্রিলা কোনো চোট পাননি। তাহলে তিনি তাঁর মাকে সেই চোটের কথা বলতেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে একটি কথা বলে রাখা দরকার, হয়তো ঐন্দ্রিলা নিজেও জানতেন না, তিনি চোট পেয়েছেন। কখনও কখনও সামান্য আঘাত বা গাড়ির প্রচন্ড জার্কিং-এর ক্ষেত্রেও অজান্তেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে বলে মনে করেন ডঃ রাজকুমার মান্না (Rajkumar Manna) ও ডঃ নিলয় বিশ্বাস (Niloy Biswas)। এমনকি অযথা স্ট্রেস থেকেও কখনও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। এই সমস্যার প্রচুর কারণ থাকে। শুধুমাত্র ঐন্দ্রিলা নয়, এইভাবে যে কোনও মানুষের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। সুস্থ হয়ে উঠছেন ঐন্দ্রিলা। দুইবার ক্যান্সারকে জয় করেছেন তিনি। আবারও খুব শীঘ্রই ঐন্দ্রিলা ফিরতে চলেছেন তাঁর ভালোবাসার মানুষদের কাছে। পাশে আছি, ঐন্দ্রিলা।
View this post on Instagram