whatsapp channel

কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে? তবে বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর জন্য অনেকেই বেশি দূরে বেড়াতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাই আর সাত-পাঁচ না ভেবে ঘুরে আসতে পারেন কলকাতা থেকে সামান্য…

Avatar

HoopHaap Digital Media

Advertisements
Advertisements

ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে? তবে বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর জন্য অনেকেই বেশি দূরে বেড়াতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাই আর সাত-পাঁচ না ভেবে ঘুরে আসতে পারেন কলকাতা থেকে সামান্য কিছু দূরেই বাওয়ালি রাজবাড়িতে। সাথে ঘুরে দেখতে পারেন বাওয়ালি গ্রাম। বাড়ির ছোট বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ বাবা সবাইকে নিয়েই ঘুরে আসুন এই রাজবাড়িতে। যারা ইতিহাস ভালোবাসেন এবং রহস্য খুঁজতে ইচ্ছা করে তাদের জন্য এটি অসাধারণ একটি ডেস্টিনেশন। কালের নিয়মে হারিয়ে যাওয়া ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্রামের মধ্যেই বাওয়ালি রাজবাড়ির রাজকীয় অভ্যর্থনা আপনাকে অবাক করে তুলবে।

Advertisements

নিজস্ব গাড়ি নিয়ে গেলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা হয়। তবে যাদের গাড়ি নেই তারা আশাহত হবেন না, শিয়ালদা থেকে বজবজ লোকালে করে বজবজ স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে যেতে হবে চারিয়াল মোড়। সেখান থেকে ট্রেকারে করে যেতে হবে বাওয়ালি ট্রেকার স্ট্যান্ড। অথবা ঠাকুরপুকুর বাজার থেকে বাস বা অটোতে রায়পুর যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে ট্রেকার অথবা বাসে করে যেতে হবে ট্রেকার স্ট্যান্ড। এখান থেকে ৫ মিনিট হাঁটলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বাওয়ালি গ্রামে। গ্রামে প্রবেশ করতেই সর্বপ্রথম আপনার চোখে পড়বে নবরত্ন মন্দির। এটি গোপীনাথ জিউর মন্দির হিসাবেও পরিচিত। এছাড়াও রয়েছে রাধাবল্লভী জিউ মন্দির, লক্ষ্মী জনার্দন জিউর মন্দির। তবে মন্দিরের ভগ্নাংশ ছাড়া আপনার আর কিছুই চোখে পড়বে না। নতুন করে মন্দির গুলিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার কাজ করা হচ্ছে।
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

Advertisements

এছাড়াও এই গ্রামে আগে ছিল চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম উদ্যান, হাওয়াখানা, চুনঘর কিন্তু কালের নিয়মে সবই প্রায় ধ্বংস হতে বসেছে। নবরত্ন মন্দির উচ্চতা প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। সত্তর ফুটের তিনটে অলিন্দ বিশিষ্ট এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল ইতালি থেকে আনা পাথর থেকে। সামনে এক বিশাল বড় নাটমন্দির রয়েছে তবে এই নাটমন্দির প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। কালের নিয়মে শুধু স্তম্ভগুলো দাঁড়িয়ে আছে, উপরের ছাদ ভেঙে গেছে। এই মন্দিরের সামনে উল্টো রাস্তাতে আপনি দেখতে পাবেন ভাগল রাসমঞ্চ এর ভিত। শোনা যায়, ২০ বছর আগে এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় এই রাসমঞ্চপ্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। ঐতিহাসিকদের মতে, ১৭৯৯ সালে এর আদলেই তৈরি করা হয়েছিল চেতলার ছোট রাজবাড়ির মন্দির। পরবর্তীকালে দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির তৈরি করা হয় এর আদলেই। এই মন্দিরের ডান পাশে রয়েছে রাধাবল্লব জিউ মন্দির। একমাত্র এই মন্দিরটিতে নিত্য পূজা করা হয় এই মন্দিরটি সংস্কার করে রং করে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে এখানে ধুমধাম করে পুজো হয়।
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

Advertisements

এছাড়াও রয়েছে তিনটি সাবেকি মন্দির তবে সবই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে বসেছে। এখানে একটি চারকোনা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি লক্ষ্য করা যায়। বাড়িটি ঠিক কি কারণে ব্যবহৃত হতো তা বোঝা যায় না। বাড়িটির চারপাশে বট, অশত্থ গাছের সমারোহ। তবে বাসিন্দারা মনে করেন, এই মন্দিরে যে সমস্ত ভক্তরা আসছেন তারা এখানে এসে দিন যাপন করতেন। এখান থেকে কিছুটা দূরে গেলেই আপনার চোখে পড়বে একটি জঙ্গলাকীর্ণ জায়গার মাঝখানে চারকোনা স্তম্ভ বিশিষ্ট একটি গৃহ। আগে এটি হাওয়া মহল ছিল। রাজবাড়ির জমিদাররা পুকুরের মাঝখানে থাকা এই অংশটিতে আনন্দ উৎসব পালন করতেন। তবে কালের নিয়মে পুকুরের কোনো অংশই আর আপনার চোখে পড়বে না। জঙ্গলাকীর্ণ রাস্তায় শুধুই রাজবাড়ি, রাজপরিবারের স্মৃতি।
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

Advertisements

নবরত্ন মন্দিরের সামনে পুকুরের পাশে বিশাল আকার রাজবাড়ি। এখানে গিয়ে থাকা বা খাওয়ার জন্য একটু পকেট ভারি হওয়া প্রয়োজন। কারণ রাজবাড়ির ব্যাপার-স্যাপার তো রাজকীয়ই হবে তা কি আর অল্প টাকায় হয়? রাজবাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপনাকে প্রথমে থালায় ফুল, চন্দন সাজিয়ে বরণ করে প্রবেশ করানো হবে। তবে আসতে গেলে আগে থেকেই বুকিং করে আসতে হবে। বাওয়ালি রাজবাড়ির ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। রাজবাড়ির খাবারের থালায় সাজানো থাকে নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার। ভাত, ডাল, সুক্তো, পোস্ত কচুপাতায় চিংড়ি, মাছ, চাটনি, মিষ্টি, পায়েস, রসগোল্লা আরো কত কি। তবে মোটামুটি জন প্রতি পনেরশো টাকা করে ধরে নিতে হবে। এখানে খাবার পরিবেশন করা হয় মাটির থালা গ্লাসে।
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

খাওয়া দাওয়ার পরে গোটা রাজবাড়িটা ঘুরে আসতে পারেন। রয়েছে রাত্রি যাপনের ও ব্যবস্থা। রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই চত্বরেই রয়েছে একটি বিশাল বড় পুকুর। যেখানে চাইলে আপনি মাছও ধরতে পারেন। সব মিলে উইকেন্ড মন্দ কাটবেনা। তাই আর সাত-পাঁচ না ভেবে বাড়ির আর পাঁচটা মানুষকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই রাজবাড়ি এবং বাওয়ালি গ্রামে। এই রাজবাড়ি তৈরি হয়েছিল বজবজের মন্ডল পরিবারের হাতে। শোনা যায়, রাজা রাম মন্ডল ছিলেন হিজলি রাজার সেনাপতি। বীরত্বের মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫০ বিঘা জমি লাভ করেছিলেন। আর পেয়েছিলেন অগুনতি ধনদৌলত। তাদের হাতে গড়ে ওঠে এমন প্রকাণ্ড রাজপ্রাসাদ। পরবর্তীকালে অবশ্য এই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কালের নিয়মে অবহেলা এবং দারিদ্রতা এসে তাদের গ্রাস করলে রাজবাড়ি একেবারে ধ্বংস হয়ে যায়।
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা
কলকাতার কাছাকাছি এক সুন্দর রাজবাড়ী, রকমারি খাবারের পাশাপাশি রয়েছে রাত কাটানোর ব্যবস্থা

whatsapp logo
Advertisements
Avatar
HoopHaap Digital Media