বাংলা ধারাবাহিকের কিছু দাপুটে অভিনেত্রী, অভিনয়ের গুনে যারা হয়ে উঠেছেন ঘরের মেয়ে
মেয়েরা যেমন চুল বাঁধতে পারে তারা রাঁধতেও পারে। আজকের প্রতিবেদনে সেই নারীদের নিয়ে অল্প অল্প গল্প কথা উপস্থাপন করবো যারা একটা সময় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন এবং আজও একই ভাবে অভিনয় করে যাচ্ছেন। তারা হারিয়ে যাননি পর্দা থেকে এবং মানুষের মন থেকে।
“রবির আলো” দিয়ে তিনি সকলের নজরে আসেন অঞ্জনা বসু। একটা সময় মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি, এরপর আলফা বাংলাতে কেরিয়ার শুরু। ছ এ ছুটি, বাই বাই ব্যাংকক সহ বহু বাংলা সিনেমায় তাকে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু মেগা সিরিয়ালে তিনি সুপরিচিত মুখ। বধূবরণ যারা দেখেছেন তারা বুঝেছেন এই বয়সে এসেও কিভাবে জাঁদরেল শাশুড়ির ভূমিকায় পাঠ করা যায়। না তার কেরিয়ারের লিস্ট মস্ত বড়, এভাবে শেষ করা অসম্ভব। তবে তিনি বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সদস্য। একহাতে অভিনয় অন্যহাতে রাজনীতির রাজ্যপাট সামলাচ্ছেন একা হাতে।
কে বলেছে মেয়েরা কুড়িতে বুড়ি হয়ে যায়? যারা বলে তাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখান নতুবা উদাহরণ হিসেবে টানুন অপরাজিতাকে। বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় দিলদরিয়া অভিনেত্রী তিনি। সম্প্রতি তিনি ভীষণ ভাবে রান্নাবান্নায় মন দিয়েছেন। দুপুর হলেই সকলের ড্রয়িং রুমে পৌছে যান তিনি। শেখান দুর্দান্ত লোভনীয় রান্না। হ্যাঁ অপরাজিতা এখন ৪৩, কিন্তু দিন দিন তিনি ‘ চিনি’ র মতন মিষ্টি হয়ে উঠছেন। কখনো তিনি মডার্ন মা, তো কখনো শান্ত মিষ্টি বউ, যাকে দেখলে প্রাক্তন ভোলে তার অতীতকে। শুভ মহরৎ হোক বা প্রাক্তন বা ওপেন টি বায়োস্কোপ বা গয়নার বাক্স বা হামি একেকটা মুভিতে অপরাজিতা একেক রকম। তার প্রাণখোলা হাসি সবসময় জানান দেয় বয়স বা ওজন কোনোটাই গুরুত্বপূর্ণ নয় ভালোভাবে বাঁচার জন্য।
যারা ‘সুবর্ণলতা’ দেখেছেন তারা অনন্যা চাটার্জি র পাকা অনুরাগী। তিনি ছাড়া এই ধারাবাহিক যেন অসম্পূর্ণ। ‘দিন প্রতিদিন’ দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন অনন্যা একটা সময়, এরপর টুকরো টুকরো কাজ করলেও “ঋতুপর্ণ ঘোষ” এর “আবহমান (২০০৯)”, যা মুক্তি পায় ২০১০ সালে। এই মুভিতে অভিনয় করে তিনি একজন স্বনামধন্য অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। এমনকি ২০১২ সালে “কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়” পরিচালিত “মেঘে ঢাকা তারা” বাংলা সিনেমায় তিনি নীলকান্ত বাগচীর স্ত্রী দুর্গা হিসেবে অভিনয় করেন। বর্তমানে তাকে দেখা যাবে ‘মোহমায়া’ ওয়েব সিরিজে।
এখন তিনি ‘শ্রীময়ী’। কখনো ছিলেন ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ তো কখনো তিনি ‘দহন’ এর ‘ঝিনুক’। কথা হচ্ছে ইন্দ্রানী হালদার প্রসঙ্গে। একটা সময় অভিনয়ে তার অভিষেক ঘটে শিশু শিল্পী হিসেবে, ‘তেরো পার্বণ’ সিরিয়াল নাটকে। তারপর ‘কুয়াশা যখন’, ‘ফকির’ থেকে শুরু করে একের পর এক ধারাবাহিক ও বাংলা ছবিতে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে গেছেন। বর্তমানে দুঃস্থ বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটান, ছোট পর্দায় অভিনয় করেন।
মৌমিতা গুপ্ত, বাংলা ধারাবাহিক হোক বা সিনেমা তিনি বেশ জনপ্রিয় মুখ। তিনি যখন রেগে যান তখন দর্শকরাও ভয় পায়। এই মৌমিতা গুপ্ত কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ‘ এক আকাশের নীচে’ , ‘একদিন প্রতিদিন’ দিয়ে।
মনামী ঘোষ, যার বয়স বাড়ে না। এখনও তাকে দেখলে মনে হয় ২২ বা ২৩। অথচ তিনি ৪০ এর দোরগোড়ায়। বসিরহাটের মেয়ে মনামী ১৯৯৭ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে পদার্পণ করেন সমরেশ মজুমদার রচিত উপন্যাস ‘সাত কাহন’ অবলম্বনে দেবীদাস ভট্টাচার্য্যের টেলিভিশনের চলচ্চিত্রের নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে৷ মনামীকেও দেখা গিয়েছে ‘এক আকাশের নিচে’ ধারাবাহিকে। সম্প্রতি তাকে ইরাবতীর চুপকথা ধারাবাহিকে লিড রোলে দেখা গিয়েছে। ঘুরতে ভীষণ পছন্দ করেন মনামী, তাইতো সময় পেলেই পাহাড়ে চলে যান তিনি।