সময়টা আশির দশক। বাংলা বিনোদন জগতে সে সময় উত্তম কুমারের রাজত্ব। আর বম্বেতে দাপট দেখাচ্ছেন আরেক বঙ্গসন্তান, বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Biswajit Chatterjee)। সুদর্শন বিশ্বজিৎ হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রভূত জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। কিন্তু নিজের বাংলায় নায়ক নয়, বরং খলনায়কের তকমাই পেয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে রেখে মুম্বইতে দ্বিতীয় বিয়ে করেন বিশ্বজিৎ। পরবর্তীতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণেও উঠে এসেছে বাবার প্রতি ক্ষোভ।
রত্না চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বিশ্বজিতের প্রথম স্ত্রী। তাঁদের দুই সন্তান, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং পল্লবী চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এই সংসার টেকেনি। এতদিন প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও সম্প্রতি নিজের আত্মজীবনীতে প্রথম স্ত্রী তথা প্রসেনজিতের মাকে নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য করেন বিশ্বজিৎ। রত্না চট্টোপাধ্যায়কে বিয়ে করা তাঁর জীবনে বড় ভুল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, নিজের আত্মজীবনীতে বিশ্বজিৎ লিখেছেন, ১৯৬০ সালে ‘মায়ামৃগ’ মুক্তির পরেই বিয়ে হয় তাঁদের। বিশ্বজিতের পেশার সবটা জেনেই বিয়ে করেছিলেন রত্না। তবুও অনস্ক্রিনে নায়িকাদের সঙ্গে তাঁর রোম্যান্স রত্না সহ্য করতে পারতেন না বলে অভিযোগ করেন বিশ্বজিৎ। তিনি আরো দাবি করেছেন, রত্নার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজন রত্নাকে ভুল বোঝাতেন যে, তিনি নায়িকাদের সঙ্গে পরকীয়া করছেন। বিশ্বজিৎ জানান, ছেলেময়েদের সামনেই নাকি অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করতেন প্রসেনজিতের মা। শেষমেষ সহ্যের সীমা অতিক্রম করায় বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান বিশ্বজিৎ। ডিভোর্সের নোটিশও নাকি রত্না চট্টোপাধ্যায়ই প্রথম পাঠিয়েছিলেন।
বিশ্বজিৎ জানান, ডিভোর্সের নোটিশ পাওয়ার পরেও স্ত্রী, সন্তানদের নিজের কাছে মুম্বইতে নিয়ে গিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাধ সাধেন রত্না। এমনকি প্রসেনজিৎ ও পল্লবীকেও নাকি তাঁর কাছে ঘেঁষতে দিতেন না বলে জানান বিশ্বজিৎ। তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিভিন্ন মাধ্যমে রত্না চট্টোপাধ্যায় যে নিজেকে অভাবী বলে দাবি করতেন তাও মিথ্যে। নিজের জামির লেনের বাড়ি, নিজের যাবতীয় ফিল্ম রাইটস নাকি প্রথম স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, প্রসেনজিৎ এখন অনেক কিছুই বুঝতে পারেন। তবে মেয়ে পল্লবীকে তিনি কোনোদিন ক্ষমা করতে পারবেন না।